ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

জট খুলল নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট সম্মেলনের

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪০

জট খুলল নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট সম্মেলনের
ছবি: প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বাকি ২৩ ইউনিটের সম্মেলন শেষ করেই ওয়ার্ড সম্মেলন করার নিদের্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

রোববার সকাল ১০টায় ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দলীয় কার্যালয়ে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে এই সভা শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সভা পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

এসময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা খান এমপি, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন, সুনীল সরকার ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, বদিউল আলম উপস্থিত ছিলেন ।

এছাড়া সভায় নগর আওয়ামী লীগের দুই সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সাংসদ এমএ লতিফ উপস্থিত ছিলেন। সদস্য না হওয়ার পরও নগরের জনপ্রতিনিধি হওয়ার কারণে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। অসুস্থতার কারণে নগর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি ডা. আফসারুল আমিন চৌধুরী এমপি ও নুরুল ইসলাম বিএসসি সভায় উপস্থিত ছিলেন না।

সভায় হাজির কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতারা শুরুতেই চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট সম্মেলনের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের আনা বিভিন্ন অভিযোগ শোনেন। পরে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসব অভিযোগের বিপরীতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, নগর আওয়ামী লীগের কমিটির সকলে মিলে বসে সম্মিলিতভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে। এ সময় ইউনিট সম্মেলন শেষে নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্য থেকে ৩-৪ জন করে প্রত্যেক থানায় আলাদা করে টিম করে সম্মেলনের কাজ এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের নেয়া আগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশনাও দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মাহাতাব-নাছিরের বিরুদ্ধে নানা আপত্তি আনলেও তা কেন্দ্রে টিকেনি। আপত্তির বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যার পর কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দিয়েছে আগের নিয়মেই ইউনিট সম্মেলন শেষ করে ওয়ার্ড সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে।

এসব সম্মেলন শেষ হলে পরে থানা সম্মেলন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মাহাতাব-নাছির পরিষদকে। এছাড়া ঢাকার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন যে সমস্ত ইউনিটের সম্মেলন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সে সকল ইউনিটগুলোতে অনিয়ম থাকলে রিভিউ কমিটির মাধ্যমে সংশোধন করা হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে প্রধান সমন্বয়ক করে এই রিভিউ কমিটির সদস্য করা হয়েছে, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য নঈম উদ্দিন চৌধুরী এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, যে পক্ষ নালিশ করেছে, তাদের মধ্য থেকে তিনজন আর সভাপতিসহ আরও তিনজন নিয়ে মোট ছয় সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। সম্মেলন নিয়ে কোনো সমস্যা বা অভিযোগ থাকলে এরা বসে সেটার সমাধান করবে। সবাইকে মিলেমিশে আমরা ইউনিট সম্মেলন করতে বলেছি।

এ বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সবার কথা শুনেছেন। তারপর তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলন যেভাবে চলছিল সেভাবে চালিয়ে নিতে। কোন আপত্তি থাকলে সভাপতি-সেক্রেটারিকে জানাতে। এসব সম্মেলন শেষ হলে থানা কমিটির কাজ এগিয়ে নিতে। এক্ষেত্রে দেশের অন্য ইউনিটের মত থানার কার্যক্রম গতিশীল করতে নগর থেকে নেতাদের দায়িত্ব বন্টন করে দেয়া হবে। সেটা বণ্টনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমাদের ছয়জনকে।

এরআগে গত বছরের ১৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ইউনিট সম্মেলন শুরু করে নগর আওয়ামী লীগ। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে ইউনিট আছে। যার মধ্যে ১০৬টির সম্মেলন শেষ হয়। ২৬ ডিসেম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের সম্মেলন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ইউনিট সম্মেলনকে ঘিরে একপক্ষীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের অভিযোগ তোলেন একপক্ষের নেতা-কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মীরা পাননি কোনো মনোনয়ন ফরম। এর বাইরে নগরীর দেওয়ানবাজার ওয়ার্ডসহ কমপক্ষে ১০টি ওয়ার্ডে সম্মেলনের সময় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ২২ ডিসেম্বর নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলন স্থগিত করে দেয় দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড।

তবে গত ১২ জানুয়ারি নগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক সভায় কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে বাকি থাকা ২৩টি ইউনিটের সম্মেলন শেষ করার ঘোষণা দেয় নগর আওয়ামী লীগ। এতে বাধে বিপত্তি। কেন্দ্রে যায় বিরোধীপক্ষের লিখিত অভিযোগ। যার প্রেক্ষিতে রোববার দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত