ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রীকে গণধর্ষণ

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, প্রক্টরের গাড়ি ভাঙচুর

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:৩৪

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, প্রক্টরের গাড়ি ভাঙচুর
ছবি- প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জে সমঝোতা হওয়ার পরও মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে না নেয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বহিরাগতরা। এতে অন্তত ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়ি, একটি লোকাল বাস ও একটি ট্রাক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে প্রায় ১১ ঘণ্টা পরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের আবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে ঢাকা-খুলনা ও গোপালগঞ্জ-পিরোজপুর মহাসড়কে শুরু হয় যান চালাচল।

জানা গেছ, দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, ভিসি এ কিউ এম মাহাবুব, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে সমঝোতা বৈঠকে বসেন। বিকেল ৪টায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রশাসনের সমঝোতা বৈঠক শেষ হয়। বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসন থেকে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে গেলেও অন্য অংশ মহাসড়কের ওপর অবস্থানে থাকে। এ সময় বহিরাহতরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি করে। হামলায় ৮/৯ জন শিক্ষার্থী আহত হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়ি, একটি লোকাল বাস ও একটি ট্রাক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ হামলায় ছাত্রলীগকে দায়ী করলেও এ ঘটনার সাথে তাদের কোনো সংশ্লিষ্ট নেই দাবি করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নিউটন মোল্লা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সাথে জেলা ছাত্রলীগ একাত্মতা প্রকাশ করে ৫ ঘণ্টা আন্দোলন করেছে। প্রশাসনের সাথে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সমঝোতা করিয়ে দিয়েছে। তারপর আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। তবে আমি শুনেছি তারপর কিছু সংখ্যক জামায়াত, ডান-বাম আন্দোলন থেকে সরে না আসায় তাদেরকে স্থায়ীয়রা সরিয়ে দিয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল জানিয়েছেন, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি একিউএম মাহাবুব বলেন, এটি একটি নক্করজনক ঘটনা। এ ঘটনার সাথে জ‌ড়িতদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে। যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, অপরাধী যেই হোক না কেনো, কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আমিও চাই এ ঘটনার সাথে জ‌ড়িতদের সর্বোচ্চ সাজা হোক।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলাতানা বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছিলাম। আমি পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ ঘটনায় জ‌ড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: সড়ক অবরোধ, আটক ৩

উল্লেখ্য, বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী তার বন্ধুর সাথে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নবীনবাগস্থ হেলিপ্যাড থেকে হেঁটে বের হচ্ছিলেন। এ সময় ৭/৮ যুবক একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে তাদের তুলে নিয়ে হ্যালিপাডের পাশে নির্মাণাধীন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজের বারান্দায় যায়। ওই ছাত্রীর সাথে থাকা তার বন্ধুকে মারধর ও শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ করে।

পরে খবর পেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার করে। ওই ছাত্রীকে প্রথমে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান গোপালগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটা মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত