ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

‘আগে ছিল অন্ধকার অহন সব ফকফকা’

  নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৫৩

‘আগে ছিল অন্ধকার অহন সব ফকফকা’

ঢাকার সড়কগুলোতে আলোর ঝলকানি থাকলেও গ্রামীণ জনপদের অনেক রাস্তায়ই কোনো আলোর দেখা নেই। বলতে গেলে সন্ধ্যার পরই গ্রামের রাস্তাগুলোতে নেমে আসে ভুতুড়ে অন্ধকার।

এখন সৌর বিদ্যুতে জ্বলছে গ্রামীণ সড়কবাতি। অন্ধকার দূর হয়েছে। দেখা মিলেছে আলোর ঝলকানি। আলোকিত করছে এলাকা। রূপগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলের লোকজন বলছে, ‘আগে ছিল অন্ধকার অহন সব ফকফকা’।

এ আলো সবার কাছে সান ফুয়েল, সোলার প্যানেল বা সৌর বিদ্যুৎ নামে পরিচিত। লোকে বলে, রূপগঞ্জের রূপের নেইকো শেষ- এ রূপকে আরো সুন্দরতম করেছে এ সৌর বিদ্যুৎ।

উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ের প্রায় শত কিলোমিটার , ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়ক, নগরপাড়া-ইছাখালী সড়ক, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, গুরুত্বপূর্ণ স্থান, বিভিন্ন রাস্তাঘাটের মোড়, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে ও কবরস্থানসহ তিন শতাধিক পয়েন্টে স্টিলের বিশেষ ধরনের সোলার পোলে এ বাতি বসানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকারে গ্রামীণ সড়কেও সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলো ছড়াচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় সৌর বিদ্যুতের এ সড়কবাতি বসেছে। ইডকলের সহযোগিতায় ঢাকার উদ্দীপন এ এলইডি সৌর বাতিগুলো বসিয়েছে।

উপজেলার নগরপাড়া বাজার, পূর্বগ্রাম, বড়ালু বাজার, ইছাখালি বাজার, মাঝিনা বাজার, বরুনা বাজার, চনপাড়া ও চনপাড়া পুর্নবাসন এলাকাসহ নদীর পশ্চিম পাড়ঞ্চলের গ্রামীণ রাস্তা ও এলাকাজুড়ে এ বাতিগুলো স্থাপিত হয়েছে। সড়কের এ সৌর বিদ্যুতের আলোয় অনেক এলাকা আলোকিত হয়েছে।

জানা যায়, আগামী বছর এ সোলার সড়কবাতি আরো সম্প্রসারিত হয়ে রূপগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলের অনেক গ্রামীণ সড়কে পৌঁছানো হবে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি এলাকার গ্রামীণ রাস্তায় সোলার সড়কবাতি বসবে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুতের চাপ অনেকটা কমে যাবে।

স্থানীয় জনগণরা জানান, উপজেলার পশ্চিমের বিভিন্ন রাস্তায় রাতের আঁধারে ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ হতো। বিশেষ করে গভীর রাতে নৌকা বা লঞ্চে আসা যাত্রীর, নাওড়া, চনপাড়া, বড়ালু, পূর্বগ্রাম ও নগরপাড়া খেয়াঘাট হয়ে এ উপজেলায় যারা আসা যাওয়া করতো সাধারণত তারাই এ পরিস্থিতিতে পড়তো।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, সড়কবাতি না থাকায় অপরাধীরা অপরাধ করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হতো। অনেক সময় পুলিশও সড়কবাতির অভাবে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারতো না। এ অবস্থায় উন্নতমানের সাশ্রয়ী এলইডি সৌরবাতি এলাকাকে আলোকিত করেছে।

বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানায়, সৌর বিদ্যুতের এ সড়কবাতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর কোনো চাপই পড়বে না। উল্টো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। বিশেষ ধরনের এ সৌর বিদ্যুতের বাতি রক্ষণাবেক্ষণ খুবই সহজ। স্বয়ংক্রিয়ভাবে দিনভর সূর্যের জ্বালানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে রাতভর এ বাতি আলো ছড়াবে। কোনো সুইচ নেই। সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করবে। প্রতিটি সোলার প্যানেলের সঙ্গে সংযুক্ত করা আছে ২০ ওয়াটের ৪০টি করে এলইডি বাল্ব, যা স্বচ্ছ আলো দেয়।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আওতায় সড়কবাতি স্থাপনের বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বাতি বৈদ্যুতিক বাতির চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী ও টেকসই।

এনআইএল/জেডএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত