ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্বর্ণ বিক্রির টাকায় কক্সবাজার ভ্রমণে চোর চক্র

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:১৬

স্বর্ণ বিক্রির টাকায় কক্সবাজার ভ্রমণে চোর চক্র
চোর চক্রের ১১ সদস্য। ছবি: প্রতিনিধি

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার চাঁদনী চক মার্কেটের স্বর্ণের দোকান থেকে অন্তত ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা রমনা বিভাগ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চোর চক্রের ১১ সদস্যকে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে চুগি, মো. মারুফ, মো. জাহিদ, মো. সাকিব, মো. আব্দুল্লাহ স্বপন, মো. আরিফ, মো. তারা মিয়া, মো. শুকুর মিয়া, মো. ফজলু মাতাব্বর, শ্রী তপন রায় ও মো. ওবায়েদ হোসেন।

তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনের বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। ওবায়েদের বয়স ৫০ বছর হলেও অপর পাঁচজনের বয়স ২২ থেকে ৩০ বছর।

রাজধানীর লালবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ডিবির রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিমের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে চুরি করা ৬০ লাখ টাকা সমমূল্যের ৪টি স্বর্ণের চুড়ি, ৩টি স্বর্ণের আংটি ও ১ জোড়া কানের দুল উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিবি পুলিশ জানায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় চাঁদনী চক মার্কেটের ৩ নম্বর ভবনে অবস্থিত সততা জুয়েলার্স থেকে অন্তত ২০ ভরি চুরির ঘটনা ঘটে। মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে তারা দেখতে পেয়েছেন, ১৯ সেপ্টেম্বর তালা খুলে সততা জুয়েলার্সে চুরি করেন ৪ জন। এরপর ব্যাগ হাতে মার্কেট থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্বর্ণালঙ্কার তাঁতীবাজার ও আজিমপুরের বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে বিক্রির পর ওই টাকায় চুরি করা চার জনসহ ছয় বন্ধু নিউমার্কেট থেকে একই রকমের জামা কেনেন। এরপর বেড়াতে যান কক্সবাজার। তিনদিন পর ফিরে এসে ধরা পড়েন গোয়েন্দা পুলিশের হাতে।

সততা জুয়েলার্সের মালিক ভুক্তভোগী স্বপন চেীধুরী জানান, পাশের দোকানের কর্মচারী ফরহাদকে দিয়ে দোকান খোলাতেন। সেই ফরহাদই তার বন্ধুদের নিয়ে দোকানে চুরি করেছে।

ডিবির রমনা বিভাগের ডিসি মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এই চক্রটি সততা জুয়েলার্স থেকে স্বর্ণালংকার চুরি করে তা বিক্রির টাকায় কক্সবাজারে ভ্রমণে যায়। ৯০ হাজার টাকা খরচ করে তিন রাত কক্সবাজার অবস্থান করে। টাকা শেষ হওয়ায় আবারও ঢাকায় স্বর্ণালংকার বিক্রি করতে আসলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ১১ জনের মধ্যে আরিফ ও ওবায়েদ চোরাই স্বর্ণের ক্রেতা বলে জানান ডিবির রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল এডিসি মোহাম্মদ ফজলে এলাহী। তিনি বলেন, সততা জুয়েলার্সে মাঝে মধ্যেই ছোটখাটো চুরি হতো। মালিকপক্ষ তা মার্কেট কমিটিকে জানালেও চোর ধরা যাচ্ছিলো না। অনেক সময় মনে করা হতো হিসেবে ভুল হচ্ছে। তবে চক্রটিকে ধরার পর স্বীকার করে তারা সেখানে চার দফায় চুরি করেছে।

তিনি বলেন, চোর চক্রটির হোতা ফরহাদ হোসেন। সে সততা জুয়েলার্সের পাশের একটি রূপার দোকানের কর্মচারী। পাশাপাশি সততা জুয়েলার্সে মাসিক দুই হাজার টাকা বেতনে সার্টার খোলা ও লাগানোর কাজ করতো। ওই সুযোগে সে দোকানটিতে ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়েছিলো। সেই চাবি দিয়েই মূলত তালা খুলে চুরি করছিলো।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা চোরাই স্বর্ণের একটা অংশ বিক্রি করে কক্সবাজারে ঘুরতে গেলেও আরেকটা অংশ জমা রেখেছিলো। তার মধ্য থেকে সাত ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ ছয় লাখ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/রাজু

  • সর্বশেষ
  • পঠিত