ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪০ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নে প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:০২

ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নে প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত
ছবি: প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম নগরীর কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে তাকে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার স্কুলের ফটকে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনে অভিযোগ দিলেও তাঁকে সরানো হয়নি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেন তিনি।

সরেজমিন দেখা যায়, বেলা প্রায় দেড়টা পর্যন্ত ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ ছিলেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান করছিলেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিদ্যালয়ের মূল ফটকের বাইরে নিয়ে যান। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে ওই শিক্ষককে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় শতাধিক শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে স্লোগান দেয়।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই। আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত প্রধান শিক্ষক (আলাউদ্দীন) যে কুকর্ম করে বেড়ায় তার প্রতিবাদ আমরা করছি। তিনি আমাদের বিব্রত করেন ফেসবুক মেসেঞ্জারেও। বিভিন্ন আয়া, পিয়ন দিয়ে ক্লাস রুম থেকে ডেকে উনার রুমে নিয়ে যায়। তারপর আমাদের সাথে বিভিন্ন কুকর্ম করে। এমনকি আমাদের টাচ করা, খারাপ… করে। আমরা সেটার প্রতিবাদ করলে হয় টিসি, না হয় ফেল। যেসব ছাত্রীরা ভয় পেয়ে লুকিয়ে থাকে তাদের ফেসবুকে বিরক্ত করেন। যারা উনার এসব কাজে সম্মতি দেয় না, তাদের শাস্তি দেয়। আমরা তার বিচার চাই, বিচার চাই।

স্কুলের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী জানায়, উনি অনেক বছর ধরে মেয়েদের সাথে যৌন হয়রানিমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা এতদিন মুখ খুলিনি। আমরা চাইনা আমাদের ছোট বোনরা উনার হাতে নির্যাতিত হোক। উনাকে বহিষ্কার করা হোক।

অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘যৌন নিপীড়নের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষকও এসবের সঙ্গে জড়িত। তাঁরাই শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছেন। ফলে মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

২০১৩ সালে বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে আমাকে বহিষ্কার করা হয়নি। সেটা অন্য কারণে করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন চ্যাটিংয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন শিক্ষার্থী যদি আমাকে ম্যাসেজে হাই-হ্যালো বা সালাম দেয়, আমি কি তার উত্তর দেব না?

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় সিটি করপোরেশনের শিক্ষা বিভাগ। চসিকের চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু বলেন, ইতিমধ্যে কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার আমাকে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দ্রুত ওই বিদ্যালয়ে নারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত