ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

রামগঞ্জে গ্যাস ও রেল সংযোগের দাবি আনোয়ার খান এমপির

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:১০  
আপডেট :
 ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:৫৯

রামগঞ্জে গ্যাস ও রেল সংযোগের দাবি আনোয়ার খান এমপির
আনোয়ার খান এমপি। ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে গ্যাস সরবরাহ ও হাজীগঞ্জ থেকে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এ দাবি জানান।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

আনোয়ার খান এমপি তার আলোচনায় বর্তমান সরকারের দেশজুড়ে নেয়া নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তার সংসদীয় এলাকা রামগঞ্জের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক অগ্রগতির চিত্রও তুলে ধরেন। পাশাপাশি চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে দ্রুত শেষ হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

আলোচনায় আনোয়ার খান এমপি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জ বিগত ২০০১ হতে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে সন্ত্রাসীদের বিচরণ ক্ষেত্র ছিল। সে সময় রামগঞ্জের আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী আইনের সুশাসন পায়নি। এখন আমার নির্বাচনী এলাকা রামগঞ্জে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার হওয়ায় কোনো জুলুম নেই, অত্যাচার নেই, চাদাঁবাজি নেই, ইয়াবা সন্ত্রাসী নেই, মদ-জুয়া নেই। সব মানুষ এখন শান্তিতে বসবাস করছে। মেয়েরা নিরাপদে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। কোনো স্কুল কলেজের সামনে বখাটেদের উৎপাত নেই। আইনের সুশাসন পাচ্ছে সবাই।

তিনি বলেন, গত ৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেয়া রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। রাস্তার দুপাশে এখন লাইটের আলোয় ঝলমলে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদে আধুনিক উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মিত করা হচ্ছে।

রামগঞ্জে প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ প্রায় ১২৪ টির অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রামগঞ্জ সরকারি কলেজে বিজ্ঞান ভবন নির্মিত হয়েছে। রামগঞ্জ সরকারি কলেজটি একটি ঐতিহ্যবাহি কলেজ, এখানে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু এবং সিট বৃদ্ধির জন্য আমি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রায় সমপন্ন। এছাড়াও রামগঞ্জের ইতিমধ্যে প্রায় ৩০০ কি. মি. রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়েছে, গ্রামীণ রাস্তাগুলোর মেরামত ও উন্নয়নসহ আরো প্রায় ২০০ কি. মি. রাস্তা প্রক্রিয়াধিন আছে। এ রাস্তাগুলোর মেরামত এবং উন্নয়নের জন্য আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। মা-বোনদের রান্নার জন্য গ্যাস সংযোগ দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আগামী দিনেও আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।

এসময় আনোয়ার খান এমপি রামগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, পৌরসভার রাস্তাঘাট সমূহ, স্কুল-কলেজ হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়নের এবং শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং বঙ্গবন্ধুর নামে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং রেলমন্ত্রণালয় কর্তৃক হাজীগঞ্জ থেকে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করে রামগঞ্জ উপজেলার জনগণকে সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা দিয়ে মডেল একটি রামগঞ্জ তৈরি করার সহযোগিতা কামনা করছি।

তিনি বলেন, দাউদকান্দি কচুয়াথেকে হাজীগঞ্জহয়ে রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর জেলা পর্যন্ত সড়কগুলোকে চার লেনে উন্নিত করার জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাটে আধুনিক নৌ-বন্দর স্থাপন এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করে ২০ লাখ জনগোষ্ঠির জেলায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি জানাচ্ছি। এবং লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবকে আধুনিক প্রেসক্লাবে রুপান্তর করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি। এছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন হলেও, কাজ শুরু না হওয়ায় বিষয়টি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আনোয়ার খান আরো বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা রামগঞ্জে কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও শেখ রাসেল স্টেডিয়াম অনুমোদন করা হলেও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় কাজ শুরু করা হয়নি। তাই আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। কৃষি জমিতে চাষের পানি ব্যবস্থা করা সহরামগঞ্জে দখল হওয়া খাল যেমন- বিরেন্দ্র খাল, রামগঞ্জ-হাজিগঞ্জ -সোনাপুর খাল, ওয়াপদা খাল এবং বিভিন্ন দখল হওয়া খাল গুলোকে পুনরুদ্ধার করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নৌ মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনোয়ার খান এমপির পূর্ণাঙ্গ আলোচনা

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

মাননীয় স্পিকার

আমাকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষনের উপর আলোচনায় সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আমি ধন্যবাদ এবং শ্রদ্ধা জানাই বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবং মন্ত্রী পরিষদ সহ সকল সংসদ সদস্যকে।

একইসাথে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আমার নির্বাচনী এলাকা লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জের সকল জনসাধারনকে, মা ও বোনদেরকে, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদেরকে, ব্যাবসায়ীদেরকে, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমীকলীগ সহ সহযোগী সকল সংগঠনের সকল নেতৃ-বৃন্দদেরকে, এবং ১০ টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভাসহ ০৫ লক্ষ জনসাধারনকে।

মাননীয় স্পিকার

বক্তব্যের শুরুতে আমি গভীরভাবে স্মরণ করতে চাই, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সাথে স্মরণ করছি যিনি এ দেশের স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরনা দিয়ে সাহস যুগিয়েছেন সেই মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে। স¥রণ করতে চাই ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট কালরাত্রিতে ঘাতকের গুলিতে নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল শহীদেরকে।

আমি স্মরণ করতে চাই, ১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে ঘাতকের বুলেটে নিহত বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় চার নেতাকেএবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ, সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা বোন এবং স্বাধীনতা অর্জনে দেশের সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, জব্বার, বরকত, রফিক সহ সকল ভাষা শহীদদেরকে জানাই পরম শ্রদ্ধা।

মাননীয় স্পিকার

আমি সবিনয়ে সম্মান ও ধন্যবাদ দিতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। বছর শুরুর প্রথম দিনে প্রাইমারী স্কুল, হাই স্কুল, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায় ৩৩ কোটি ৩৮ লক্ষ বই বিতরন করার মাধ্যমে পৃথিবীতে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ এক নব দিগন্ত। বিশে^র কোন দেশে এইভাবে বই বিতরন আছে কিনা আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছে বিধায় তাহা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়াও দেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুউদ্বোধন, মেট্রোরেল উদ্বোধন, কর্নফুলি টানেল, এবং সর্বশেষ পূর্বাচলে পাতাল মেট্রোরেল কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসে আরেকটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এছাড়াও ৬ হাজার ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ২০০ ধরনের ডিজিটাল সেবা দিচ্ছেন। মানুষ এখন ঘরে বসে বিদুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল,গ্যাস বিল, জমির খাজনা, ইনকাম-ট্যাক্স রিটার্ন, ব্যবসা বানিজ্য সম্প্রসারন, ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল প্রকার সেবা, বিমানের ই-টিকেট, জন্মসনদ, মৃর্ত্য সনদ বিভিন্ন প্রকার সেবার সুযোগ করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ইহা একটা বিরাট অর্জন। এজন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

মাননীয় স্পিকার,

আওয়ামী লীগ সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের কারণে দূর্ণীতি দমন, জঙ্গি নিধন, সন্ত্রাস নির্মূলের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সমাজ অর্থনীতি রাজনীতিসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুশাসনের ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্যে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। মাতৃমৃত্যু, শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস এবং গড় আয়ুস্কাল বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী সংকটের সমাধান, রফতানি ও রেমিটেন্স বৃদ্ধি, খাদ্যে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় বিশাল সাফল্য এবং নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রগতির ফলে প্রকৃতই বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সড়ক এখন মহাসড়ক।যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।

মাননীয় স্পিকার

বিগত ১৪ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যেগে অর্জিত প্রকল্প সমূহ:-

গ্রামের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পৌছাতেপ্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে ক্লিনিক স্থাপন।

প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে ৩২ প্রকারের ঔষধ প্রদান।

আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ পরিবারকে পুনর্বাসন।

প্রায় ২ লক্ষাধিক ভূমিহীন পরিবারকে কৃষি জমি প্রদান।

প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ৫৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন।

২৬ হাজারের অধিক প্রাথমিক স্কুলকে জাতীয়করন এবং দেশের ৪০০ টি কলেজকে সরকারি-করন।

প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষত বেকার নারীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষন প্রদান।

৪০ লক্ষ বয়স্ক মানুষকে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান।

৫০ লক্ষ পরিবারকে ১০ টাকা মূল্যে চাল বিতরন।

প্রায় ১৪শ টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মান এবং ২০০টির অধিক বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন।

মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট,

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ।

রুপপুর পারমানবিক বিদুৎকেন্দ্র স্থাপনএবং

সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন।

মাননীয় স্পিকার,

একইসঙ্গে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন; সড়ক, রেল, নৌ-যোগাযোগ ও গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন; বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি; স্থানীয় ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মানবসম্পদ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার হার ও মান উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধা ভাতা, বিধাব ভাতা, স্বমীপরিত্যক্তা ভাতা , মাতৃকালীন ভাতাসহ গ্রামীন জনগোষ্ঠীসহ সকলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরনের মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সরকার উল্লেখযোগ্য বেশি সাফল্য অর্জন করেছে।

মাননীয় স্পিকার,

করোনা ভাইরাস নামক যেব্যাধি, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন চরম বিপর্যয় মানুষ দেখে নাই। করোনার প্রভাবে গোটা বিশ^কে নাড়াচাড়া দিয়েছে, পশ্চিমা বিশ্বলন্ডভন্ড হয়েছে। অর্থনীতি হয়েছে লন্ডভন্ড।

মাননীয় স্পিকার,

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবেলায় মানুষদের বাঁচাতে প্রত্যেকটি পদক্ষেপে সাফল্য অর্জন করেছেন।কোভিড চিকিৎসায় বিশে^ প্রসংশিত হয়েছেন।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীও এ প্রসংশার দাবি রাখেন। আমিও এ কোভিড চিকিৎসায়দেশের সকল সরকারী হাসপাতালের পাশাপাশী আমার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকেসংযুক্ত করেকোভিড চিকিৎসায় হাজার হাজার রোগির চিকিৎসা দিতে পারায় আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।

মাননীয় স্পিকার,

আমার নির্বাচনী এলাকা ল²ীপুর-১ রামগঞ্জে বিগত ২০০১ হতে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে সন্ত্রাসীদরে বিচরন ক্ষেত্র ছিল। সে সময় রামগঞ্জের আওয়ামী লীগের কোন নেতা- কর্মী আইনের সুশাষন পায়নি। এখন আমার নির্বাচনী এলাকা রামগঞ্জে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার হওয়ায় কোন জুলুম নেই,অত্যাচার নেই,চাদাঁবাজী নেই, ইয়াবা সন্ত্রাসী নেই, মদ-জুয়া নেই, সকল মানুষ এখন শান্তিতে বসবাস করছে। মেয়েরা নিরাপদে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। কোন স্কুল কলেজের সামনে বখাটেদের উৎপাত নেই। আইনের সুশাষন পাচ্ছে সকলেই।

বিগত ৪ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেওয়ায়, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ ,হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। রাস্তার দুপাশে এখন লাইটের আলো জ¦লমল করে দৃষ্টি নন্দিত করছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদে আধুনিক উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মিত করা হচ্ছে।

রামগঞ্জে প্রাইমারী স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ,মাদ্রাসাসহ প্রায় ১২৪ টির অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রামগঞ্জ সরকারী কলেজে বিজ্ঞান ভবন নির্মিত হয়েছে। রামগঞ্জ সরকারী কলেজটি একটি ঐতিহ্যবাহি কলেজ, এখানে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু এবং সিট বৃদ্ধির জন্য আমি মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর নিকট জোর দ্বাবী জানাচ্ছি। মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রায় সমপন্ন। এছাড়াও রামগঞ্জের ইতিমধ্যে প্রায় ৩০০ কি: মি: রাস্তা মেরামত করা হয়েছে, প্রত্যেকটি ইউনিয়নে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়েছে, গ্রামীন রাস্তাগুলোর মেরামত ও উন্নয়ণ করা সহ আরো প্রায় ২০০ কি:মি: রাস্তা প্রক্রিয়াধিন আছে এ রাস্তা সমূহগুলো দ্রæত মেরামত এবং উন্নয়নের জন্য আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। এবং মা-বোনদের রান্নার জন্য গ্যাসলাইন সংযোগ দেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।

আগামী দিনেও আমার নির্বাচনী এলাকার জনগন নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।

মাননীয় স্পিকার

এছাড়াও পৌরসভার রাস্তাঘাট সমূহ, স্কুল-কলেজ হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়নের এবং শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন এবং বঙ্গবন্ধুর নামে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ,মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং রেলমন্ত্রণালয় কর্তৃক হাজীগঞ্জ থেকে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করে রামগঞ্জ উপজেলার জনগনকে সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা দিয়ে মডেল একটি রামগঞ্জ তৈরী করার সহযোগীতা কামনা করছি।

এছাড়াও দাউদকান্দি কচুয়াথেকে হাজীগঞ্জহয়ে রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর জেলা পর্যন্ত সড়কগুলোকে চার লেনে উন্নিত করার জন্য মাননীয় সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। এবং লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাটে আধুনিক নৌ-বন্দর স্থাপন এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করে ২০ লক্ষ জনগোষ্ঠির লক্ষ্মীপুর জেলায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি জানাচ্ছি। এবং লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবকে আধুনিক প্রেসক্লাবে রুপান্তর করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি। এছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন হলেও , কাজ শুরু না হওয়ায় বিষয়টি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

মাননীয় স্পিকার,

আমার নির্বাচনী এলাকা রামগঞ্জেকারিগরী প্রশিক্ষন কেন্দ্র, যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র ও শেখ রাসেল স্টেডিয়াম অনুমোদন করা হলেও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় কাজ শুরা করা হয়নি, তাই আমি স্ব মন্ত্রণালয়েল দৃষ্টি আকর্ষন করছি। এবং কৃষি জমিতে চাষের পানি ব্যবস্থা করা সহরামগঞ্জে দখল হওয়া খাল যেমন- বিরেন্দ্র খাল, রামগঞ্জ-হাজিগঞ্জ -সোনাপুর খাল, ওয়াপদা খাল এবং বিভিন্ন দখল হওয়া খাল গুলোকে পুনরুদ্ধার করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নৌ মন্ত্রণালয়ের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

মাননীয় স্পিকার

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের বাংলাদেশ, যেখানে আমার আপনার সকলের জন্ম। এই বাংলাদেশে আমাদের স্বাধীনতা ছিল না। ছিল না কোন মানচিত্র, ছিল না কোন নাগরিক অধিকার। মুগল থেকে ইংরেজ, ইংরেজ থেকেপাকিস্তান, আমাদের পূর্ব পুরুষেরা কেউই স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেনি। ১৯৪৮, ৫২, ৬৬,৬৯গণ আন্দোলন, ৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে১৯৭১ সালেবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাত ধরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা মহানস্বাধীনতা অর্জন করি । আমাদের এই স্বাধীনতা বিনষ্ট করার জন্য জামায়েত-বিএনপি, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বি এন পি- জামায়েত দেশের কোন ক্লান্তিলগ্নেই এদেশের মানেুষের পাশে ছিল না। হোক সেটা করোনা মহামারি, কিংবা যে কোন দুর্যোগ। দ্রুত অগ্রসরমান বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়ার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশ চিরজীবি হোক

মাননীয় স্পিকার আপনাকে ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত