ঢাকা, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

দিনাজপুরে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

  সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৪৪  
আপডেট :
 ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৫৫

দিনাজপুরে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা
দিনাজপুরে বিভিন্ন মাকের্টে কেনাকাটা করতে মানুষ ভিড় করছেন। ছবি: প্রতিনিধি

মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য ঈদুল ফিতর (ঈদের দিন) গুরুত্বপূর্ণ। ঈদের দিনের জন্য নতুন জামাকাপড় পরতেই হবে এমন কথা মাথায় রেখে নতুন জামা কেনার জন্য শেষ দিকে জমে উঠতে শুরু করেছে দিনাজপুরে বিপণন কেন্দ্রগুলো। সব শ্রেণির মানুষ সকাল থেকে গভীর রাত অবধি পোশাক-আশাক কিনছেন। শহরের রেইন বো মার্কেট, মালদহপট্টি, গুনশান মার্কেট, উত্তরা মার্কেট, আব্দুর রহিম সুপার মার্কেট, লুৎফরনেছা টাওয়ার, বিগবাজার মার্কেটসহ অন্য মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়ছে।

সাধ আর বাজেটের সঙ্গে মিল রেখে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আপনজনদের জন্য করছেন কেনাকাটা। বিপণন কেন্দ্রগুলো সেজেছে রঙিন সাজে।

বাহারী ডিজাইনের থ্রি পিস, শিশুদের জামা ও পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট দিয়ে দোকান-শপিং মল সাজানো হয়েছে। এ বছর ঈদ গরমের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় শুতি কাপড়ের চাহিদা একটু বেশি। এ বছর ভারতীয় নায়রা সায়রা, কাস্মী বুটিক্স, পাকিস্থানি বুটিক্স, লারারা, সারারা, পুস্পা, বারিশ, আগারনুর, নূরজাহান বুটিক্স, আলিয়া কাট, আর আর এই জাতীয় পোশাকের কদর রয়েছে মেয়েদের কাছে।

এদিকে ছেলেদের জন্য গ্যাবাডিন ও জিন্স প্যান্ট, কালারফুল শার্ট, চেক শার্ট এবং এক কালারের শার্টসহ বিভিন্ন রকমের বাহারি পাঞ্জাবিতে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। উচ্চ-মধ্যম-নিম্ন শ্রেণির লোকদের ভিড়ে লোকারণ্য দিনাজপুর শহরের জাবেদ সুপার মার্কেট, উত্তরা মার্কেট, রহিম সুপার মার্কেট, গুলশান মার্কেট, লুৎফর নেছা টাওয়ার, বিগ বাজার, মালদহপট্টি মার্কেটসহ বিভিন্ন শপিং মল।

ক্রেতা শামিম হায়দার বলেন, এ বছর কাঙ্খিত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজেটের মধ্যেই এখন পছন্দ করতে হচ্ছে। যেসব পণ্য পছন্দ হয়, তার দাম এ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া আগের বছরের তুলনায় অনেক পণ্যেরই দাম বেড়েছে। দাম বৃদ্ধি পেলেও ঈদ বলে কথা। প্রিয়জনকে ঈদ উপহার দিতে হবে।

ক্রেতা নার্গিস আক্তার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাকের দাম একটু বেশি। এ বছর প্রতিটি থ্রি পিসের ৫ থেকে ৭ শত টাকা দাম বেড়েছে। একই পোশাক একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে।

রেইন বো মার্কেটের বিক্রেতা হারেস আলীর কণ্ঠে শোনা যায়- ‘এই যে আপা, ৩০০-এর মাল ১০০তে নেন। নিয়ে যান আপা, পানির দরে।’ আর এই হাঁকডাক ছিল গতকাল দিনাজপুরের বউ বাজারে। এখন স্বল্প-মধ্যবিত্তদের কেনাকাটার নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে বউ বাজারটি। নারী-পুরুষ সবার কাপড় পাওয়া গেলেও ক্রেতারা নারী হওয়ায় এই বাজারের নাম বউ বাজার।

বাসুনিয়াপট্টির অস্থানীয় দোকানদার আব্দুল মালেক বলেন, বড় বড় দোকান ও শপিংমলে বিক্রি হয় যে মানের পোশাকগুলো, ঠিক সে মানের পোশাকও সস্তা দামে পাওয়া যায় ব্যতিক্রমধর্মী এ বউ বাজারে। দামও তুলনামূলক কম থাকে। বউ বাজারে দেখা যায়, মাটিতে ত্রিপল বিছিয়ে তার ওপর সাজানো শাড়ি, থ্রিপিস, ওড়না, চাদর। বিক্রি হচ্ছে চুড়ি-ফিতা-দুলসহ নানা ধরনের স্যান্ডেল ও জুতা।

একই কথা বলেন বিক্রেতা মোকলেছুর রহমান, বউ বাজারে বিভিন্ন কাপড়ের সেলাই করা থ্রিপিস বিক্রি হয় ২৫০-৭০০ টাকায়। এ ছাড়া জর্জেট, সুতি, বাটিক, শিফনের ওড়না ৭০-১৭০ টাকায়, বিভিন্ন রকমের শাড়ি ৩৫০ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

বউ বাজারের ব্যবসায়ী সাজ্জাদুর রহমান বলেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিল, সাজসজ্জার খরচ উঠাতেই বড় দোকান বা মার্কেটে সমমানের পোশাক বা কাপড়ের দাম বেশি হয়। আর বাড়তি বিভিন্ন খরচ লাগে না বলেই বউ বাজারে সস্তায় পোশাক বা কাপড় পাওয়া যায়। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বউ বাজারে ক্রেতারা ভিড় করেন। বর্তমানে ধনী পরিবারের নারীরাও আসছেন এখানে কাপড় কিনতে।

কর্মজীবী নারী জান্নাতুন ফেরদৌস বৃষ্টি বলেন, সামনে ঈদ, তাই পরিবারের জন্য এখানে কেনাকাটা করতে এসেছি। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এই বাজার। এখানে শাড়ি, থ্রিপিস, ওড়না নিয়েছি। আর ছেলের জন্য শার্ট, প্যান্ট এবং স্বামীর জন্য লুঙ্গি নিয়েছি। এখানে কম দামে পাওয়া যায়।

নুসরাত আক্তার জানান, কম দামে অনেক ভালো ভালো কাপড় পেয়েছি। মাঝেমধ্যেই এ বাজারে কাপড় কিনতে আসি।

বউ বাজারের পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি মো. আলম বলেন, ২২ বছর ধরে বউ বাজার পরিচালিত হয়ে আসছে। এতে ক্রেতারা যেমন সুফল পাচ্ছেন তেমনি বিক্রেতারাও লাভবান হতে পারছেন। ঈদকে ঘিরে নতুন নতুন ডিজাইনের কাপড় আনা হয়েছে।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল জিন্নাহ আল মামুন বলেন, ঈদ উপলক্ষে বিপণন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেশি হয়। পুলিশের পাশাক ও সাদা পোশাকে দায়িত্বপালন করা হচ্ছে, যাতে র্নিবিঘ্নে জনসাধারণ কেনাকাটা করতে পারেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত