ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ডিমওয়ালা মাছ শিকার

বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ, রক্ষায় নেই কোনো আইন

  নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ জুন ২০১৮, ১৫:৩৩  
আপডেট :
 ২৩ জুন ২০১৮, ১৭:০১

বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ, রক্ষায় নেই কোনো আইন

নড়াইলে অবাধে ধরা হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছ। ফলে বিলুপ্তির পথে দশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। মাছের ডিম ছাড়ার চলতি মৌসুমে নড়াইলের নদ-নদীগুলো থেকে অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ধরা হচ্ছে। জেলায় কমপক্ষে ২০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নড়াইলের নদ-নদীগুলো থেকে কমপক্ষে ২০ প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত নদ-নদী খাল-বিলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে ডিম ছাড়ে। ডিম ফুটে যেসব রেণু বের হয় পরবর্তীতে সেগুলো বড় হয়ে প্রকৃতিতে মাছের ভারসাম্য রক্ষা করে। অথচ কৌশলে এসব ডিমওয়ালা মাছ ধরা হচ্ছে। আর যেগুলো রক্ষা পাচ্ছে সেসব মাছের ডিম ফুটে বের হওয়া রেণুও নতুনভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছে। রেণু সংগ্রহকারীরা এসময় নদ-নদী খাল-বিল থেকে রেণু পোনা সংগ্রহে নেমে পড়ে। রেণু পোনা সংগ্রহের জন্য পাতলা জাল, বেউচি জালসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল সংগৃহীত বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেনু থেকে শুধুমাত্র কাঙ্খিত মাছের রেণু পোনা আলাদা করে বাকি প্রজাতিগুলোর রেনু পোনা অযত্নে যেখানে সেখানে ফেলে দেয়ায় সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

মৎস্যজীবীরা জানান, ১৫/২০ বছর আগেও নড়াইলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী গুলোর মধ্যে রয়েছে মধুমতি, নবগঙ্গা, চিত্রা ও কাজলা নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। অথচ বছরের পর বছর ধরে ডিমওয়ালা মাছ ধরা ও রেনু পোনা নষ্ট করার কারণে এসব নদ-নদী থেকে দেশী মাছ সরপুঁটি, ভেদা, পাবদা, টেংরা, টাকি, পুটি, শিং, মাগুর, কৈ, খলিসা, বাউশ, কালবাউশ, ভেইশ, চাপিলাসহ কমপক্ষে ২০ প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। নড়াইলে ইতিমধ্যে সর্বত্রই ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা শিকারীদের তৎপরতা চলছে। ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা শিকারীরা কালিয়া ও সদর উপজেলায় এদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। নড়াইল সদর উপজেলার কাজলা-আফরা নদীতে আফরা গ্রাম থেকে তুলারামপুর পর্যন্তু এবং চিত্রা নদীর সিংগাশোলপুর থেকে গোবরা পর্যন্তু ও কালিয়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর বড়দিয়া থেকে বারইপাড়া পর্যন্তু এলাকা হতে ডিমওয়ালা মাছ ও রেণু পোনা সংগ্রহের কাজ চলছে। নড়াইল জেলার বিভিন্ন মৎস্য শিকারীরা প্রতি বছরই বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত এসব এলাকা থেকে ডিম ওয়ালা মাছ ধরে হাট-বাজার গুলোতে বিক্রি করা হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম এনামুল হক বলেন, “ডিমওয়ালা মাছ ধরবেন না দেশের ক্ষতি করবেন না” এই শ্লোগান নিয়ে আমরা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে ডিমওয়ালা মাছ ধরা বন্ধের জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় জেলেদের ও স্থানীয় সাধারণ লোকজনকে সচেতন করে যাচ্ছি। দেশীয় ডিম ওয়ালা মাছ রক্ষায় কোন আইন না থাকায় জেলেসহ সাধারন মানুষকে সচেতন করা ছাড়া কিছুই করার নেই আমাদের।

দেশীয় মাছ রক্ষায় আইন করা জরুরী বলেও মনে করেন এই মৎস্য কর্মকর্তা।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ডেপুটি নেজারত কালেক্টর মো. সারওয়ার উদ্দিন বলেন, ডিম ওয়ালা মাছ ধরার ক্ষেত্রে ইলিশ মাছের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তবে দেশীয় মাছের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। আমাদের দেশীয় মাছ রক্ষার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত