ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

খাগড়াছড়িতে গোলাগুলিতে নিহত ৬

  খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৫:৫২  
আপডেট :
 ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৬:০০

খাগড়াছড়িতে গোলাগুলিতে নিহত ৬

খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজারে শনিবার সকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ৬ জন নিহত হওয়ার পর দুপুরে ইউপিডিএফ সমর্থকদের উপর ফের সশস্ত্র হামলা হয়েছে। এতে নারীসহ ৪ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার পেরাছড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- ভাইবোন ছড়ার ৫নং যৌথ খামার এলাকার সন কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী উর্মি চাকমা, গুলকানা গ্রামের বাসিন্দা মিনু চাকমা ও শিবন্দির এলাকার সোনা রঞ্জন চাকমা।

স্থানীয়রা জানান, জেলা সদরের স্বনির্ভর এলাকায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সমাবেশে যোগদানের জন্য মিছিল নিয়ে আসার সময় পেরাছড়া ব্রিজের সামনে দুপুরের দিকে দ্বিতীয় দফায় সশস্ত্র হামলাটি চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা বর্তমানে পেরাছড়া ইউনিয়নের নীলকান্ত পাড়ায় সশস্ত্র অবস্থান করছে বলেও জানান তারা।

নিহতরা সবাই ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ- প্রসিত খিসা) সদস্য বলে দাবি করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সংগঠক ও জেলা সমন্বয়কারী মাইকেল চাকমা। তিনি এ ঘটনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-এম এন লারমা) গ্রুপকে দায়ী করেছেন। যদিও এ ঘটনার সঙ্গে নিজেদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন জেএসএস-এম এন লারমার নেতারা।

এদিকে 'সকালের ঘটনায় ব্যস্ত আছি' জানিয়ে সদর থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, এখন পেরাছড়া বা অন্য কোথাও কী হয়েছে তা জানতে পারিনি, সময় লাগবে।

এর আগে শনিবার সকালে, খাগড়াছড়ি শহরের অদূরে স্বনির্ভর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে ৬ জন নিহত হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় আরও ৩ জন। শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গ্রামবাসীদের নিয়ে ইউপিডিএফ শনিবার সকালে একটি সমাবেশ ও বিক্ষোভ করার কথা ছিল। তার আগেই এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনুমানিক সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শহরের অদূরে স্বনির্ভর বাজার ও আশপাশ এলাকায় আকস্মিকভাবে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা গুলি করলে ঘটনাস্থলেই ৬ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ইউপিডিএফ সমর্থক নেতা ও কর্মী। পুলিশ হতাহতদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় স্বনির্ভর বাজারের পুলিশ বক্সেও গুলি লাগে।

খাগড়াছড়ির এ ঘটনার পেছনে পাহাড়ের দুটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বিস্তারই কাজ করেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এ ঘটনার আগে থেকেই ওই এলাকায় টান টান উত্তেজনা ছিল।

নিহতরা হলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা এলটন চাকমা ও মহালছড়ি উপজেলার সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক জিতায়ন চাকমা, পলাশ চাকমা, বরুণ চাকমা এবং রুপম চাকমা।

আহতরা হলেন, সমর বিকাশ চাকমা (৪৮), সুকিরণ চাকমা (৩৫) ও সোহেল চাকমা (২২)। এই তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু সকালে জানান, ‘হঠাৎ আমরা খবর পাই যে, একটা গ্রুপ স্বনির্ভর বাজার এলাকায় এসে পুলিশ বক্সের দিকে অতর্কিতে গুলি করছে। পুলিশ বক্সের দেয়ালে পাঁচটি গুলির আঘাত লেগেছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ এরই মধ্যে অভিযান শুরু করেছে।’

লাশগুলো উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নয়নময় ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৯ জনকে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে ছয়জন মৃত। বাকি তিনজনকে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং লোকজন ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত