ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ধানমন্ডির অল্প সংখ্যক পার্কিংয়েরও নেই ব্যবহারকারী

  রিফাত পারভীন

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৪১  
আপডেট :
 ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:০১

ধানমন্ডির অল্প সংখ্যক পার্কিংয়েরও নেই ব্যবহারকারী

রাজধানী ঢাকার রাস্তাগুলো যতটুকু প্রশস্ত তার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। উপরন্তু শহরের ব্যস্ত রাস্তার অনেক খানিই অবৈধ পার্কিং এর দখলে। যা প্রায় অর্ধেক জায়গাই দখল করে নিচ্ছে। পাতাল পার্কিংগুলো ব্যবহার না করে ‘পার্কিং নিষিদ্ধ’ এমন স্থানেই গাড়ি রাখছেন মালিক ও চালকরা।

ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড থেকে শুরু করে ঝিগাতলা পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় সারাদিনই ব্যস্ত থাকে। এখানে হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, শপিং সেন্টার ছাড়া অফিসও রয়েছে বেশ কয়েকটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই এলাকায় বহুসংখ্যক ভবনের মধ্যে পাতাল পার্কিং আছে মাত্র ১০ থেকে ১২টি ভবনে। যার মধ্যে মাত্র তিনটি পাতাল পার্কিং সকলের জন্য উন্মুক্ত। আর অন্যগুলো সেই ভবন বা অফিসের কর্মীরা ব্যবহার করতে পারেন। উন্মুক্ত পার্কিংগুলো সবাই ঘণ্টা হিসেবে টাকা দিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

ধানমন্ডি ১৯ নম্বরে অবস্থিত পাতাল পার্কিংয়ে গিয়ে সেটিকে প্রায় খালি পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানকার নিরাপত্তাকর্মী হালিম মিয়া জানান, পার্কিংটিতে একসাথে ৭০ থেকে ৮০ টি গাড়ি পার্কিং করার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সারাদিনে সব মিলিয়ে ৫০টি গাড়িও পার্কিং হয় না। অন্যদিকে পার্কিং এর জন্য টাকাও বেশি নয়, প্রতি ঘণ্টায় ১০ টাকা।

গাড়ি পার্কিং করার সময় একটি টোকেন দেয়া হয় যা দেখিয়ে আবার গাড়ি নেয়া ও টাকা দেয়া হয়। আর যে পার্কিংগুলো শুধুমাত্র সেই ভবনের জন্য সেখানেও ঘণ্টা হিসেবে টাকা রাখা হয় অনেক কম।

এছাড়াও ধানমন্ডির আবাহনী মাঠ সংলগ্ন আবাসিক এলাকার অপেক্ষাকৃত সরু রাস্তাগুলোতে দিনের প্রায় পুরো সময়ই নিষিদ্ধ জায়গায় দুই পাশেই সারি করে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। বিশেষ করে ধানমন্ডি এলাকার মধ্যে বেশ কিছু স্কুল থাকায় সকালে ও ছুটির সময়ে এই রাস্তাগুলো চলাচলের উপযোগী থাকে না। অন্য দিকে গাড়ির চালকরা জানান, ভাড়া পার্কিং এ গাড়ি রাখতে হলে একটু দূরে যেতে হবে। তাই মালিক স্কুলের কাছেই গাড়ি রাখতে বলেন।

এছাড়া সরেজমিনে দেখা যায়, ধানমন্ডি শেখ জামাল মাঠ সংলগ্ন রাস্তা প্রায় অর্ধেক দখল করে সকাল থেকেই গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এলাকার বিভিন্ন স্কুল, অফিস ও শপিং সেন্টারে কেনাকাটা করতে আসা ব্যক্তিদের গাড়ি ছাড়াও জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের গাড়িও ঘণ্টার পর ঘণ্টা এখানে রাখা হয় যার ফলে একটি গাড়ি যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে।

এ ধরনের সমস্যা সমাধানে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশে বড় বড় ভবন করে বহুতল পার্কিং ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমাদের দেশেও সরকারি ও বেসরকারি ভাবে বহুতল পার্কিং ভবন করে ভাড়া দেয়া সম্ভব। এতে করে আয়ও হবে আবার পার্কিং সমস্যাও কমবে। এছাড়াও উন্নত দেশগুলোতে অফিস ও স্কুলে প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহারকারীদের এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে গাড়ি আনতে দেয়া হয় না। ধানমন্ডির বিভিন্ন স্কুল ও অফিস এলাকায় এই ব্যবস্থাসহ যে কয়টি পার্কিং স্থান রয়েছে তার সঠিক ব্যবহার করলে কিছুটা হলেও সমস্যা কমাবে।

অন্যদিকে ধানমন্ডির শপিং সেন্টার, এনাম র‍্যাংগস প্লাজার নিজস্ব পাতাল পার্কিং থাকলেও তার সামনেই সারি করে রাস্তায় রাখা হয় গাড়ি। একটি প্রাইভেট গাড়ির চালক সেখানকার পাতাল পার্কিং সম্পর্কে জানেন না বলে জানান, আপা ভিতরে কেনাকাটা করতে গেছেন। এখনই চলে আসবেন তাই রাস্তায় গাড়ি রাখছি।

বর্তমানে এই এলাকার নতুন ভবনগুলোতে পাতাল পার্কিং এর ব্যবস্থা থাকলেও পুরনো ভবন ব্যবহারকারীরা ভাড়ায় পাতাল পার্কিং ব্যবহারে একেবারেই উদাসীন। এছাড়াও অবৈধ পার্কিং এর জন্য জরিমানা করার ব্যবস্থা থাকলেও এসব গাড়ির বেশিরভাগ চালকরাই জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জরিমানার মত ঘটনা খুব বেশি একটা ঘটে না।

আরএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত