ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ

  কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৫৫

ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ

মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে কোণঠাসা কক্সবাজার-টেকনাফের অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

গত কয়েকদিনে টেকনাফ এলাকায় ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন অনেকের বাড়িতে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। অনেক নৌকায় আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা জানান, এসব নৌকার একেকটিতে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।

টেকনাফের পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, রাতের অন্ধকারে মুখোশ পরা লোকজন এসব হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ জানাচ্ছে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কক্সবাজার জেলার সর্বশেষ তালিকায় ১,১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে। তালিকাভুক্ত আসামিদের মধ্য থেকে ৭৩ জনকে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন।

তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকে আত্মসমর্পণ করে নিজেদের সংশোধন করতে চায় বলে আবেদন করেছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সিগন্যাল পেয়ে সেই প্রক্রিয়া এখন চলছে।

বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারানোর ভয়ে আত্মসমর্পণ করে অর্ধশতর বেশি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে আছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যাচ্ছে। যদিও ঠিক কতজন আত্মসমর্পণ করেছেন বা কবে থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেটা নিশ্চিত করে বলতে চাননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আত্মসমপর্ণকারী মধ্যে অন্যতম কক্সবাজার সদরের ইউপি সদস্য এনামুল হক। গত ১৫ জানুয়ারি ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে তিনি আত্মসমর্পণ করেন।

ইয়াবা ব্যবসায়ী এনামুল হক

তিনি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে ‘প্রিয় মাতৃভূমি টেকনাফ বাসি’ সম্বোধন করে যে স্ট্যাটাস দেন সেখানে লেখেন, ‘আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান যাত্রা শুরু করছি’।

আত্মসমর্পণের জন্য যাওয়ার সময় তার সাথে একজন পুলিশ সদস্য এবং একজন স্থানীয় সাংবাদিক ছিলো বলে সে ওই ফেসবুক পোস্টে জানা যায়।

এনামুল হকের বড় ভাই হাফেজ মাওলানা নুরুল হক তার ভাইয়ের আত্মসমর্পণের খবর নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, তার ভাইকে নিয়ে গেছে। কিন্তু কোথায় নিয়ে গেছে সেটা তাদের জানা নেই। যতটুকু জানি পুলিশ লাইনের কোথাও আছে। আমরা যোগাযোগ করেছিলাম, বলা হইছে চিন্তার কিছু নাই।

শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অপরাধ বিবেচনা করে কী সাজা দেয়া হবে - সেটা জানানো হবে বলে তাদের বলা হয়েছে।

তিনি বলেন কিছুদিন আগে সরকারের মাদক-বিরোধী অভিযানের সময় ক্রসফায়ারে দেয়ার জন্য যে গায়েবি তালিকা করা হয়েছিল সেখানে তার (ভাই এনামুল হকের) নাম আছে শোনার পর থেকে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। যখন লোকজন অহরহ ধরে ধরে মেরে ফেলতেছে যেহেতু আমাদের শত্রু রয়েছে সেজন্য আমরা মনে করলাম এটা (আত্মসমর্পণ) করলে ভালো হবে, সমাজটা ইয়াবা মুক্ত হবে। এভাবে মুরুব্বিসহ সবাই মিলে তাকে বোঝানো হলে সে রাজি হয।

তিনি বলেন, তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসা, বাড়িঘরে হামলা মামলাসহ ২/৩টি অভিযোগে মামলা রয়েছে। কিন্তু এসবই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়ের করা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন।

প্রতিবেশী একজন ব্যক্তির সাথে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার ভাইসহ ছয়জনকে ইয়াবা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি জানান, মাস-খানেক আগে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগে পুলিশ তাদের বাড়িঘরেও তল্লাশি করে।

এখন তাদের আশা মহেশখালীতে জলদস্যুদের যেভাবে জেল হয়েছে সেভাবে তার ভাইসহ আত্মসমর্পণ করা অন্যান্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হবে। উল্লেখ্য গত নভেম্বর মাসে চল্লিশ জনের বেশি জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে।

তবে টেকনাফ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস জানিয়েছেন, এনামুলের নামে ইয়াবা সম্পর্কিত ১৫টি মামলা আছে। সে ইউ মেম্বার পরিচয়ের আড়ালে এলাকায় এলাকার একজন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত