ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘তিতাস নয়, বিটিসিএল’র ত্রুটির ফলে গ্যাস নেই’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:২৯

‘তিতাস নয়, বিটিসিএল’র ত্রুটির ফলে গ্যাস নেই’

আগাম কোনো নোটিশ ছাড়াই রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস লিমিটেড। আর এদিকে আগাম নোটিশ ছাড়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

তিতাস গ্যাস লি. সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য আশুলিয়া ও আমিনবাজার সি‌জিএস প্ল্যান্ট হ‌তে তিতাস সিস্টেমে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

এর ফলে সকাল ৮ টা থেকে রাজধানীর আশুলিয়া, সাভার, আমিনবাজার, গাবতলী, মিরপুর, পাইকপাড়া, পীরেরবাগ, কল্যাণপুর, শ্যামলী, রিং‌রোড, মনসুরাবাদ, কা‌দিরাবাদ, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানম‌ন্ডি, আজিমপুর, হাজারীবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। খাবারের দোকানে সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবারের জন্য খাবারের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তাও জুটছেনা খাবার।

কেননা সুযোগ বুঝে খাবারের দোকানিরাও চড়া মূল হাঁকাচ্ছেন। এছাড়া অনেক দোকানে দেখা গেছে আগাম প্রস্তুতি না থাকায় ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী খাবার দিতে পারছেন না।

অন্যদিকে আগাম কোনো সতর্কতা ছাড়া সকাল থেকে এমন ভোগান্তিতে পড়ায় রাগে ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা। তাদের এই রাগ ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু তিতাস গ্যাস লি.।

এসব এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলছেন, আজ সকাল ৮ টা থেকে যে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য তা আমরা তিতাসের মাধ্যমে জানিনি। সকালে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করা হলে দেখা যায় গ্যাস নেই। পরে বিভিন্নভাবে খুঁজাখুঁজি করে জানা যায় ২৪ ঘণ্টার জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে তিতাস গ্যাস।

তারা আরো বলছেন, কোনো ধরনের আগাম নোটিশ বা মাইকিং ছাড়া এভাবে গ্যাস বন্ধ করে দিয়ে চরম দায়িত্ব অবহেলা করেছে তিতাস গ্যাস। যার কারণে কর্মস্থগামী মানুষ থেকে শুরু করে সবাই বিপাকে পড়ছেন। খাবারের দোকানে এসেও খাবার পাওয়া যাচ্ছেনা। আর যেসব দোকানে খাবার বা পানি পাওয়া যাচ্ছে, দাম চাচ্ছে স্বাভাবিক দামের তুলনায় অনেক বেশি।

রাজধানীর মিরপুর-১০ এর বাসিন্দা মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, সকাল ৯ টায় রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গেলে দেখা যায় গ্যাস নেই। পরে তিতাস গ্যাসে ফোন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের বিষয়টি জানা যায়। কিন্তু গতকাল আমাদের এলাকায় গ্যাস বন্ধের মাইকিং হয়নি। তাহলে আমরা কিভাবে জানবে গ্যাস বন্ধের বিষয়টি। আগাম নোটিশ ছাড়া গ্যাস বন্ধের কারণে সকাল থেকেই অনেক ভোগান্তিতে আছি।

ধানমন্ডি-১৫ নাম্বারের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, সকাল থেকে গ্যাস না থাকায় বাসায় কোনো রান্নাবান্না হয়নি। আর বাসার আশপাশেও কোনো খাবারের দোকান নেই। সব মিলিয়ে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সকালে কলা রুটি খেয়ে অফিসে আসতে হয়েছে আর বাচ্চাদের টিফিন ছাড়াই স্কুলে পাঠাতে হয়েছে।

রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসিন্দা রাব্বী বলেন, সকাল থেকে গ্যাস নেই তা দেখে মাথায় হাত। পরে দোকানে খাবার কিনতে গিয়ে আবারও চরম ভোগান্তি। প্রতিটি খাবারে দোকানিরা ১০-১৫ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বলছেন, ‘এ দামে খাবার নিলে নেন না হলে চলে যান।

আরো বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিতাস গ্যাসের এমন আচরণ নতুন কিছু নয়। তারা এর আগেও একাধিকার এমন আচরণ করছে। গ্রাহকদের আগাম কোনো সতর্কতা ছাড়াই তারা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে গ্রাহকদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পোহাতে হয়েছে।

তবে তিতাস গ্যাসের পক্ষে থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হচ্ছে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকায় তারা আগাম নোটিশ দিতে পারেনি।

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের অপারেশন বিভাগের পরিচালক কামরুজ্জামান খান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, সমস্যাটি আমাদের নয়। সমস্যা হচ্ছে বিটিসিএল’র, তাদের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় তারা আমদের গ্যাস দিতে পারছে না। আর সমস্যাটি এতো দ্রুত ঘটে যাওয়া আমরাও গ্রাহকদের সময় মতো জানাতে পারেনি।

এনএসএস/এনএই্চ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত