ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাজেটের ওপর সাধারন আলোচনা শুরু

সরকারি দলের বাক্যবাণে জর্জরিত বিএনপি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০১৯, ১৯:৩০

সরকারি দলের বাক্যবাণে জর্জরিত বিএনপি

জাতীয় সংসদে পেশ হওয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সরকারি দলের পক্ষ থেকেই আলোচনার সূত্রপাত হয়। প্রথমদিনেই বাজেট নিয়ে আলোচনার চেয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির এমপিদের বক্তব্য ঘিরে দলটির শীর্ষ নেতাদের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সমালোচনা হয়েছে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়েও। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এক হাত নিয়েছেন খোদ সরকার দলীয় সদস্যই।

বরাবরের মতো এবারও বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার সূচনা করেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারি দলের প্রবীণ এই সংসদ সদস্য বলেন, ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না। এটা দুঃখের বিষয়। মানুষ এসব বিষয়ে জানতে চায়।

তিনি বলেন, এটা জনগণের টাকা। ব্যাংকের নিশ্চয়তা কে দেয়? রাষ্ট্র। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।

অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ঋণ আদায়ের যত প্রক্রিয়া আছে সব প্রয়োগ করুন। দুর্ঘটনাক্রমে কেউ ঋণ খেলাপি হলে একটা কথা থাকে। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপি করলে তাদের ধরতে হবে। কেউ খেলাপি ঋণের টাকা দেশ থেকে পাচার করলে সেটা যদি ধরা পড়ে, তাহলে তারও রেহাই নেই। এজন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় জোরালো তদারকি দরকার।

অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আলী আশরাফ বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে কর আদায়ের জন্য কর কর্মকর্তা নিয়োগ দেবেন। এখনও পর্যন্ত দফতরও নেই, কর্মকর্তাও নেই। কবে আদায় করবেন ট্যাক্স? দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। আশা করি, অর্থ পাচার রোধে ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে আগাবেন।

এদিকে বিএনপিকে কটাক্ষ করেই প্রথম দিনের বক্তব্য শুরু করেন সরকার দলীয় সদস্য আব্দুল মান্নান। স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে সংসদে বিএনপির এমপিদের দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কোনো দিন এই বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, এ ধরনের কোনো প্রমাণ যদি ওই সদস্যরা এই সংসদে হাজির করতে পারেন, তাহলে আমি এই সংসদ থেকে পদত্যাগ করব।’

আব্দুল মান্নান বলেন, এবারের সংসদে আরো একটি বিরোধী দল যুক্ত হয়েছে। বিএনপির ছয়জন সংসদ সদস্য আছেন। উনারা সবাই বক্তৃতার শুরুতে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলেছেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো- বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এবং ঘোষণায়ই দেশ স্বাধীন হয়েছে। জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কোনো দিন এই বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, এ রকম কোনো প্রমাণ ওই সদস্যরা এই সংসদে হাজির করতে পারবেন না। যদি পারেন, তাহলে আমি এই সংসদ থেকে পদত্যাগ করব।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, উনারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চান। মুক্তি চাইতেই পারেন। খালেদা জিয়া কী কারণে জেলে গেছেন তা দেশের সবাই জানেন। এই নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি হবে না। এই নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি টিকে থাকবে না। এগুলো বদলান। যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারেন, যাদের প্রতি মানুষের বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে, সে রকম কাউকে দিয়ে যদি দল পুনর্গঠন করার চেষ্টা করেন, তাহলে আগামীতে দল টিকিয়ে রাখার পথ খুঁজে পাবেন।

সংসদের বৈধতা নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ অবৈধ হলে সংসদে এলেন কেন? আপনি বৈধ হলেন, আর ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবৈধ হলেন কীভাবে? আসল বিষয় হলো তারেক রহমান ব্যবসাটা ঠিক মত করতে পারেননি বলে এই ভরাডুবি। বগুড়ার উপনির্বাচনে তারেক রহমান ১০ কোটি টাকা নিয়ে সিরাজকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আপনারা খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলছেন। তার মুক্তি সংসদ বা রাজনীতির বিষয় নয়। এটা দুর্নীতির বিষয়। আরেকজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে বসে আছেন। দুর্নীতির দায়ে যার সাজা হয়েছে। নেতাগিরি করতে হলে দেশে আসতে বলেন, কোর্টকে ফেস করতে বলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দলের নেতা বানালে সেই দল চালানোর দিন শেষ হয়ে গেছে। এসব বাদ দিয়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান এই সংসদ সদস্য।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত