ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইউএনও’র গাফিলতির মাশুল দিলো ক্ষতিগ্রস্থরা

  পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৩  
আপডেট :
 ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৭

ইউএনও’র গাফিলতির মাশুল দিলো ক্ষতিগ্রস্থরা

পিরোজপুরের নাজিরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাফিলতিতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

গত রবিবারে বুলবুলের তাণ্ডবে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজি আক্তার কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডব শুরুর দুইদিন পূর্ব থেকেই পরের দিন পর্যন্ত তার কর্মস্থল নাজিরপুরে অনুপস্থিত ছিলেন। আর তাই ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে যথেষ্ট গাফিলতি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গত ৯ নভেম্বর শনিবার পিরোজপুরসহ দেশের ১৫ জেলা প্রশাসককে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলা এবং ঝড় পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশ দেয়া হয়। সে আলোকে ওই দিনই ওই সকল জেলাসহ জেলার উপজেলা গুলোতে জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভা করে কট্রোল রুম চালু করা হয়।

কিন্তু এর আগে ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই নাজিরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজী আকতার কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবের পর রবিবার বিকেলে তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত হন। একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইস্রাফিল উপজেলার কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে প্রস্তুতি সভাসহ কন্ট্রোল রুম চালু এবং ঝড় পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তবে ইউএনও’র কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়টি গোপন রেখে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সংক্রান্তে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিগুলোতে ইউএনও’র পূর্বের দেয়া স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতারা জানান, দুর্যোগ চলাকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কর্মস্থলে না থাকায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে উপজেলায় যে পরিমাণ ঘরবাড়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত, পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ক্ষয়ক্ষতি, গবাদিপশু-হাঁস-মুরগীর মৃত্যু, মৎস্য খামারীদের ক্ষয়ক্ষতি, কৃষকদের সবজি, বীজতলা ও ধান ক্ষেতের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার পরিমাণ ও তালিকা দায়সারা ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ কারণে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ না হওয়াসহ অনেক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তাই অনেক ক্ষতিগ্রস্থরাই সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।

এঘটনার পর স্থানীয় সাংসদ গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম গত মঙ্গলবার নিজ উপজেলা নাজিরপুরে পৌছে ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সকলকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইস্রাফিল জানান, ইউএনও না থাকায় তার সাথে মুঠোফোনে যোগযোগ করে তার নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সে তথ্য অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজী আকতার কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়টি এড়িয়ে জানান, অনেক কাজেই তার স্ক্যান করা স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া এসব প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেয়া হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত