ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভাতা বঞ্চিত গৃহহীন রহিমা বেগম

  দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:৪৫

ভাতা বঞ্চিত গৃহহীন রহিমা বেগম

রাজধানী ঢাকার পাশ্ববর্তী দোহার রাইপাড়া ইউনিয়নের, করিমগঞ্জ এলাকার গৃহহীন রহিমা বেগম (৬২)। বিশ বছর আগে বিনা চিকিৎসায় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে স্বামী ফরহাদ মারা যায়। এরপর শুরু হয় দুর্বিষহ জীবনযাপন। আজও পাননি একটি বিধবা ভাতার কার্ড। নেই কোন বাসগৃহ। ছালা ও পুরাতন ব্যানারের তৈরি ঘরে ১০ বছর ধরে বসবাস করছেন। কাজ না করলে ভাত জোটে না দুবেলা। নিঃসন্তান রহিমা প্রায় অসুস্থ্য থাকেন।

অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এমন হতদরিদ্য জীবনযাপন করলেও উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা এখন পর্যন্ত পায়নি বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ বলেন, বিধবা ভাতার কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স কোন বাধা নয়। উনি উপজেলা সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তার সাথে রহিমাকে যোগাযোগ করার কথা বলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা ও প্রতিবন্ধীভাতা পাওয়ার শর্ত পূরন হলেও তালিকায় সাধারণ মানুষের নাম উঠাতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ ক্ষেত্রে রহিমা বেগম একজন হতদরিদ্য, অবহেলীত দুঃস্থ নারী। তার কথা কলার কেউ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোহার উপজেলায় রহিমার মতো অসংখ্য নারী এবং পুরুষ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের স্বজন প্রীতি, দুর্নীতির কারণে, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতাসহ গরিব অসহায়দের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পরিচালিত সরকারে দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত বছরের পর বছর। তাই অসহায় নারীদের কল্যাণে সরকার বিভিন্ন ধরনের ভাতার ব্যবস্থা করলে ও তৃণমূলের সাধারণ মানুষ সুবিধা পাচ্ছে না বলে প্রায় শোনা যায়।

দোহার উপজেলা সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা সাব্বির হোসেনের কাছে রহিমার বেগমের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক জনপ্রতিনিধিরা আমাদের কাছে তালিকা তৈরি করে পাঠায়। কোথাও অনিয়ম হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। রহিমার বিষয়টি দুঃখজনক বলে জানান তিনি।

দোহার উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও মানববাধিকার কর্মী কমরেড নাসির উদ্দিন পল্লব বলেন, করিমগঞ্জ পাকা সড়কের পাশে, খোরশেদ মাষ্টারের বাড়ি সংলগ্ন এলকায়, রহিমা বেগম ব্যানার, ফেস্টুন ও ছালার তৈরি একটি ঘরে প্রায় ১০ বছর যাবত বসবাস করছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী সড়কটি দিয়ে চলাচল করলেও রহিমার কথা কেউ শুনে না। করিমগঞ্জ এলাকায় অসংখ্য খাসজমি থাকলেও মাথা গুজার জন্য একটুরো জমি ও ঘর তার ভাগ্যে জুটছে না। অথচ অসংখ্য ধনী মানুষ ভূমিহীন সেজে খাসজমি বন্দোবস্ত নিয়ে বহাল তবিয়তে লুটেপুটে খাচ্ছে যা দেখার কেউ নেই।

তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দোহার উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায়, রহিমার মতো অসংখ্য নারী বর্তমান সরকারে বিভিন্ন জনবান্ধব প্রকল্প বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, চিকিৎসাভাতা থেকে সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলেও জানান।

রাইপাড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক ও করিমগঞ্জ ৪ নাম্বার ওয়ার্ড মেম্বার মো. ইসাক বলেন, রহিমার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত