ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্বপ্নের রাজপ্রাসাদ এখন হতদরিদ্রদের মরণ ফাঁদ

  ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৭:১৬

স্বপ্নের রাজপ্রাসাদ এখন হতদরিদ্রদের মরণ ফাঁদ

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষে গুচ্ছগ্রামের ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের আরশীনগর গুচ্ছ গ্রামে ছিন্নমূল মানুষের জন্য ৫টি ঘর নির্মাণে এ অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের (গুচ্ছ গ্রাম ২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় প্রতিটি ঘরের জন্য দেড় লাখ টাকা করে সর্বমোট সাত লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়। হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমিটির সভাপতি ও সহকারি কমিশনার ভুমি (এসিল্যান্ড) সদস্য সচিব হওয়ায় উভয় দায়িত্বে থাকা তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম নিজেই ঘরগুলো নির্মাণ করেন। গত ২৭ মে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া হরিণাকুন্ডু উপজেলায় যার জমি আছে ঘর নাই (নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ) এমন ১২৬টি ঘর পিআইসি বাদে তিনি নিজেই নির্মাণ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণের মাত্র ৬ মাস যেতে না যেতেই প্রতিটি ঘরে ধরেছে ফাটল। ঘরের মেঝে, দেয়াল, বারান্দা, আরসিসি পিলার সহ সর্বত্রই ধরেছে ফাটল। ঘরপ্রাপ্ত ছিন্নমূল পরিবারের অভিযোগ নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহারের ফলে এ ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ঘরগুলোর টিন ও দেয়া হয়েছে নিম্নমানের। ঘরের চালা ও বারান্দায় ব্যবহৃত ০.৪৬ মিলিমিটার টিনের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে ০.২৬ মিলিমিটারের হালকা টিন।

ঘরপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা তাহাজ উদ্দীন বলেন, মাত্র ১০ থেকে ১৫ দিন সময়ে তড়িঘড়ি করে কোনরকম দায়সারা ভাবে এসব ঘর নির্মাণ করেছেন ইউএনও সাইফুল ইসলাম। ব্যবহার করেছেন নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালু ও সিমেন্ট। ফলে ঘর গুলো ফাটল ধরে দ্রুত ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে।

অসহায় বিধবা রাজিয়া খাতুন, পিনজিরা ও বেদানা খাতুন বলেন, আগে পাঠকাঠির বেড়া আর পলিথিনের ছাউনি দিয়ে কোন রকমে রাতে ঘুমাতাম। তবুও সেখানে শান্তি ছিল, ভেঙ্গে পড়লেও মরার ভয় ছিল না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘর দিয়েছেন এটা আমাদের রাজপ্রাসাদতুল্য। কিন্তু কে জানতো সেই স্বপ্নের রাজপ্রাসাদই আমাদের মরণ ফাঁদ হবে। রাতে ভয়ে নির্ঘুমে কাটাই। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকি কখন যেন ঘর চাপা পড়ে মরে যাই এই ভয়ে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমান শৈলকুপার ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এমন হওয়ার কথা নয়। আমি টিনের ঘরের পরিবর্তে পাকা ঘর করে দিয়েছি। ১নং ইট দিয়ে কাজ করিয়েছি। আপনি বলছেন বিষয়টি আমি দেখবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত