ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাজবাড়ীতে দিন দিন কমছে ডালের আবাদ

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৪:৫০

রাজবাড়ীতে দিন দিন কমছে ডালের আবাদ
রাজবাড়ীতে দিন দিন কমছে ডালের আবাদ

এক সময় রাজবাড়ীর ফসলী জমিগুলো ডাল আবাদের জন্যে সুনাম ছিলো। ছোলা, মুগ, খেসারি, মসুরি ও মটরসহ বিভিন্ন ডালের ব্যাপক আবাদ হত জেলার বিভিন্ন ফসলী মাঠে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে ডাল আবাদে লোকসান হওয়ায় এর আবাদ কম করছেন চাষিরা।

চাষিদের ডাল চাষ করে যে টাকা খরচ হচ্ছে ডালের বিভিন্ন ধরনের পোকা ও রোগের আক্রমণ ও ইঁদুরের প্রকোপের কারণে আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় সে টাকাই উঠছে না। ফলন বিপর্যয়ের কারণে চাষিরা দিন দিন এর আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অন্যদিকে ধানসহ মশলা জাতীয় ফসলের বাজার দর বেশি পাওয়ায় ডালের আবাদ কমিয়েছেন।

গত বছরের চাইতে এ বছর ডালের আবাদ কমেছে ১ হাজার ২ শত হেক্টর আর গত তিন বছরে কমেছে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টরেরও বেশি।

রাজবাড়ীর সদর উপজেলা, পাংশা, কালুখালী, গোয়ালন্দ ও বালিয়াকান্দিতে গত দুই থেকে তিন বছর আগেও ডাল জাতীয় ফসলের মধ্যে মসুর, খেসারী, মটর, মুগ, মাসকলাই ও ছোলার আবাদ হত ব্যাপক ভাবে। কিন্তু কয়েকবছর ধরে ডালের বাজার দর কম, বিঘা প্রতি ফলন কম হওয়া, পোকা মাকড়ের আক্রমণ, নানা ধরনের রোগ বালাই’র কারণে চাষিরা ডালের আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তবে ছোলার আবাদ একবারেই কমে গেছে ফসলী মাঠগুলোতে।

অন্যদিকে ধান, পেয়াজ, রসুন ও গমের ফলন ভালো ও বাজার দর বেশি থাকায় এ জাতীয় ফসল আবাদে চাষিরা বেশি ঝুঁকছেন। অন্যান্য ফসল আবাদ লাভজনক হওয়ায় সব ধরনের ডালের আবাদ কমেছে রাজবাড়ীতে। যেখানে বিঘা প্রতি কৃষকদের ডালের আবাদে খরচ হয় ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা অথচ নানা প্রতিকূলতার কারণে সেখানে দের থেকে দুই মণের বেশি পাওয়া ফলন যায় না। এতে কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রতিবছরই। গত তিন বছরের জেলায় প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে সব ধরনের ডালের আবাদ কমেছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ কমেছে ছোলা ও মসুরের।

পাঁচুরিয়া ইউয়িনের ব্রাম্মণদিয়ার কৃষক আলমগীর হোসেন, আবুল কালাম ও মান্নান তারা গত বছরও বেশ কয়েক বিঘা জমিতে মসুর, খেসারী, মটর, মুগ, মাসকলাই ও ছোলার চাষ করেছিলেন। কিন্তু তাদের সে সময় খরচের টাকাই উঠেনি ডাল উৎপাদন করে। ফলন কম, খরচ বেশি লবনাক্ততা, ভাইরাস ও ছত্রাক জনিত কারণে ক্ষেতে ফসল নষ্ট হওয়া, পোকার আক্রমণ, ইঁদুরের উৎপাত এসব নানা কারণে তাদের বড় ধরনের লোকসান হওয়ায় এ বছর তারা ডাল জাতীয় ফসলের আবাদ কমিয়েছেন। ডাল আবাদে নানা ধরনের সমস্যা থাকলেও কোনো কৃষি কর্মকর্তা তাদের আবাদি ক্ষেত দেখতে আসে না বলে অভিযোগ করেন।

এসএম শহিদ নুর আকবর-উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী তিনি বলেন, রাজবাড়ীতে ধানের বাজার দর বেশি ও পেয়াজ রসুনের আবাদ বৃদ্ধির কারণে ১ হাজার ২ শত হেক্টর ডাল জাতীয় ফসলের আবাদ কমেছে। তবে আগামীতে ডালের আবাদ বৃদ্ধিতে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে ডাল উৎপাদনে কৃষকদের বড় সমস্যা হলো স্ট্যাম ফাইলার ডিজিজ। এর প্রভাবে ডালের গাছ মরে যায় ও নষ্ট হয়ে যায়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে কীটনাশক (নাটিবো) ছিটিয়ে দেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। গত বছরের চাইতে ডালের আবাদে এ বছর ১ হাজার ২ শত হেক্টর কমেছে। আর গত তিন বছরে কমেছে আড়াই হাজার হেক্টরেরও বেশি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত