বৈশাখী মেলায় জুয়া-অশ্লীল যাত্রা, প্রশাসন নীরব
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৩০
বৈশাখী মেলার নামে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার জালালপুর গুচ্ছগ্রামে চলছে জুয়া ও অশ্লীল যাত্রাপালা অথচ এক্ষেত্রে প্রশাসনকে নীরব ভূমিকা পালন করার অভিযোগ উঠেছে।
পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু হওয়া জুয়া ও যাত্রা পালায় সন্ধ্যা থেকে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। সেই সাথে মেলার আড়ালে চলে মাদক বিক্রি ও সেবন। চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সীরা এখানে বেশি ভিড় জমাচ্ছেন।
সোমবার রাতে সরেজমিন দেখা গেছে, জালালপুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্পের পশ্চিম পাশে খেলা মাঠে যাত্রা মঞ্চটি উন্মুক্ত নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে চলছে যৌন উত্তেজক গানের তালে তালে নগ্ন নৃত্য।
আর পাশেই বিশাল কাঠের চকি পেঁতে লাইটিং দিয়ে চলছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা। এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, তরুণ যুবক থেকে শুরু করে সব বসয়ী মানুষকে ভিড় জমাতে দেখা গেছে।
মেলায় আগত রুপসি গ্রামের রুবেল ও হাসান আলী জানান, তারা দুই বন্ধুই এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বৈশাখী মেলার কথা শুনে বেড়াতে এসেছে। দুই দিন ধরে মাইকের উচ্চ গানের শব্দে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সৈয়দপুরের মৃত সোরহাব হাজীর ছেলে প্রভাবশালী রফিকের নেতৃত্বে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মেলার আয়োজকরা এতোটাই বেপরোয়া যে নামাজের সময় তাদের মাইক বন্ধ করে না।
এছাড়া দিনব্যাপী চলে গ্রামের পথে পথে মাইকিং। আর সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত অবধি চলে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা ও নগ্নযাত্রা। এ নিয়ে ক্রমশ ক্ষুদ্ধ এলাকার মানুষ।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মানুষগুলো অসহায় হত-দরিদ্র হওয়ায় তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে আয়োজক রফিক শেখ জানান, বৈশাখী মেলা সারাদেশে চলছে। আর মেলায় একটু আধটু খেলা চলবেই। মেলার আয়োজক কমিটিতে গ্রামের অনেকেই রয়েছে, সবাইকে ম্যানেজ করেই মেলা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে, আমার কিছুই করার নেই। পারলে আপনারা (সাংবাদিক) জুয়া বন্ধ করে দেন আমার কোন আপত্তি নেই।
এনায়েতপুর থানার ওসি মাহবুবুল আলম জানান, যাত্রায় জুয়া চলার খবর আমাদের কাছে নেই। অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন খান জানান, সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ না হলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি
