ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রশ্নোত্তরে বিসিএস পরীক্ষা : প্রথম পর্ব

  সৈকত তালুকদার

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ২০:১০

প্রশ্নোত্তরে বিসিএস পরীক্ষা : প্রথম পর্ব

বিসিএস নিয়ে আপনাদের মনে যেসব প্রশ্ন আকুপাকু করে অতচ কাউকে বলতে পারেননি বা বলেও উত্তর পাননি সেরকম কিছু প্রশ্ন আহবান করেছিলাম। আপনারা অনেক অনেক প্রশ্ন করেছেন। সময় স্বল্পতার কারণে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিনা। সেজন্য দুঃখিত। এখানে কিছু দিলাম, বাকিগুলো আরেকটা পোস্টে দেব।

এক) প্রিলিমিনারীতে কোটা অ্যাপ্লাই হয়না। কোটা অ্যাপ্লাই হয় ভাইভার পর। তবে ৩৪ তম বিসিএসে প্রিলিমিনারীতে কোটা অ্যাপ্লাই হয়েছিল। পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পিএসসি সেই রেজাল্ট বাতিল করে পূনরায় রেজাল্ট পাবলিশ করেছিল।

দুই) গেজেট না হওয়ার পেছনে প্রার্থীর অতীত কার্যকলাপ দায়ী। প্রার্থীর নামে কোন মামলা থাকলে, নারীঘটিত কোন জটিলকেলেঙ্কারি থাকলে, শত্রুরা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মিথ্যা তথ্য দিলে, স্থায়ী ঠিকানা খুজে না পাওয়া গেলে ইত্যাদি নানা কারণে গেজেটে নাম না আসতে পারে বলে মনে করা হয়। শোনা যায়, রাজনৈতিক কারণেও অনেকের গেজেট আটকে যায়।

তিন) আপনি বোথ ক্যাডারে অ্যাপ্লাই করে টেকনিক্যাল পরীক্ষায় ফেল করলেও আপনার মোট নম্বর যদি ৫৫০ হয় তাহলে আপনি বোথ ক্যাডারেই পাস করবেন। আর ৪৫০ এর উপর হলে শুধু জেনারেল ক্যাডারে পাস করবেন। এভাবে বোথ ক্যাডারে এপ্লাই করে শুধু টেকনিক্যাল ক্যাডারেও পাস আসতে পারে। তবে মনে রাখবেন, সব পরীক্ষায় আপনাকে উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই হবে।

চার) দেশের বা বিদেশের যেকোন ভার্সিটি বা মাদ্রাসা থেকে যেকোন বিষয়ে পড়ালেখা করে শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করলেই বিসিএস দেয়া যাবে। আপনার যদি আবেদন করার বয়স থাকে তাহলে শিক্ষাজীবনে ইয়ার গ্যাপও কোন ব্যাপার না।

পাঁচ) হাতের লেখা সুন্দর অসুন্দরে কোন যায় আসে না। হাতের লেখা পড়া গেলেই হলো। লেখায় ধার কতটুকু আছে সেটাই বিবেচ্য বিষয়। তবে ভালো লেখা দেখলে পরীক্ষকের মনটা ভালোও হয়ে যেতে পারে। আর মন ভালো হলে মার্ক একটু ভালোও আশা করা যায়।

ছয়) জেনারেল ক্যাডারদের তুলনায় টেকনিক্যাল ক্যাডারদের ভাইভা সহজ হয়- এটা ভাবা ঠিক না। ভাইভায় কাকে কি ধরবে তার কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নাই। তবে ভাইভায় যেহেতু ক্যাডার রিলেটেড প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে তাই জেনারেল ক্যাডারদের ক্যাডার রিলেটেড জিনিস বেশি ধরে আর টেকনিক্যাল ক্যাডারদের টেকনিক্যাল জিনিস মানে সাবজেক্ট রিলেটেড জিনিস বেশি ধরে।

সাত) পুলিশ ক্যাডার হোক আর শিক্ষাই ক্যাডারই হোক কোনটারই মেডিক্যাল টেস্ট ডিফেন্সের মেডিক্যাল টেস্টের মত না। এখানে আপনাকে বিবস্ত্র করে মেডিক্যাল করা হবে না। শুধু জেনারেল কিছু জিনিস দেখা হবে। এটা নিয়ে একেবারেই ঘাবড়ানোর কিছু নাই। আবার বলে বসবেন না, আমার তো দুই পা নাই, আমি কি পুলিশ ক্যাডার হতে পারব?

আট) পুলিশ ও আনসার ক্যাডারের ক্ষেত্রেই শুধু উচ্চতা ও ওজন দেখা হয়। অন্য কোন ক্যাডারে যদিও উচ্চতার ব্যাপার আছে তবুও কোন ব্যাপার না।

নয়) বিসিএসের জন্য কোচিং করতেই হবে এমন কোন কথা কোথাও লেখা নাই। আমার অভিজ্ঞতা বলে, কোচিং না করে ক্যাডার হওয়ার সংখ্যাই বেশি। তাছাড়া বিসিএসে এমন কিছু আসেনা যা আপনি গাইড বই পড়েও বুঝবেন না। হ্যাঁ, মানলাম সবকিছু বুঝা যাবে না। সবকিছু বুঝারও তো দরকার নাই। তারপরেও যদি মনে হয় কোচিং না করলে আপনার মানসিক শান্তি আসবেনা, তাহলে কোচিং করতে পারেন।

দশ) যারা ঝামেলা পছন্দ করেন না, দুর্নীতি করা বা ক্ষমতার দাপট দেখানোর ইচ্ছা নাই, অপেক্ষাকৃত রিলাক্স জীবন চান, তারা বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার প্রথম পছন্দ দিতে পারেন।

এগারো) প্রিলি ও রিটেন উভয় পরীক্ষার জন্যই সিলেবাস আছে। পিএসসি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিন। সিলেবাসেই বলা আছে কোন টপিক থেকে কত মার্কের প্রশ্ন হবে। তাছাড়া বিগত বছরের প্রিলি ও রিটেন পরীক্ষার প্রশ্ন দেখলেও বিষয়টা ক্লিয়ার হবে।

বারো) বিসিএস ক্যাডারগণ জাতীয় পে স্কেলের নবম গ্রেডে একটি ইনক্রিমেন্টসহ যোগদান করেন। তাই চাকরির শুরুতেই তাদের মূল বেতন ২৩১০০ টাকা মাত্র।

তেরো) মাদ্রাসা বলেন, প্রাইভেট ভার্সিটি বলেন, পাস কোর্সের ছাত্র বলেন কাউকেই ভাইভা বোর্ডে ছোট করে দেখা হয়না। সবাই একই প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েই ভাইভা বোর্ডে গেছে। তাই এসব ভেবে হীনমন্যতায় ভুগবেন না।

লেখক: ৩৬ তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ও সিনিয়র অফিসার, বিকেবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত