ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

পরিবহন প্রশাসনের উদাসীনতায় ভোগান্তিতে যবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

  যবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ২২:৪৭

পরিবহন প্রশাসনের উদাসীনতায় ভোগান্তিতে যবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রতিনিধি

পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পরিবহনের জন্য সকালে দেওয়া হচ্ছে মাত্র চারটি দ্বিতল বাস এবং বিকালে মাত্র দুইটি বাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেরত আসে। এতে করে প্রতিনিয়ত ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে আসা বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে। বাসে জায়গা না হওয়ায় প্রতিনিয়ত দাঁড়িয়ে ও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই গাদাগাদি করে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এই বিষয়ে একাধিকবার পরিবহন প্রশাসনকে জানানো হলেও মেলেনি কোনো সমাধান। অন্যদিকে পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত যাতায়াতে ভোগান্তির স্বীকার হয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রমতে, যবিপ্রবির পরিবহন পুলে রয়েছে ১০টি দ্বিতল ও ৬ টি সিঙ্গেল বাস, যা শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের শহরের বিভিন্ন স্থান হতে ক্যাম্পাসে যাতায়াতের কাজে ব্যবহৃত হয়। পর্যাপ্ত পরিবহনের ব্যবস্থা থাকলেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মাত্র দুটি রুটে চারটি দ্বিতলবিশিষ্ট বাস রাখা হয়েছে, যেখানে স্টাফদের জন্য চারটি রুটে আছে চারটি আলাদা বাস। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রমতে স্টাফদের জন্য আলাদা কোন বাসের বাবস্থা নেই , শিক্ষার্থীদের বাসগুলো শিডিউল করে তাদের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানে যবিপ্রবির ৭৫% শিক্ষার্থীই অনাবাসিক এবং শহরের বিভিন্ন মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। এইদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের সকল সেমিস্টারের পরীক্ষা, ল্যাব ফাইনালসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালু রয়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে আছে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা। এই বিষয়ে একাধিকবার পরিবহন প্রশাসনকে জানানো হলেও কোন সমাধান মেলেনি ।

এই বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমার মনে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র স্টাফদের জন্য। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের জন্য মনিরামপুর, খাজুরা, কালিগঞ্জ, চাচড়া, মনিহারে আলাদা আলাদা বাস আছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তাদের থেকে বহুগুন। সেখানে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুইটা বাস বরাদ্দ থাকে, মেয়েদের পর্যন্ত বাসে দুই তলায় ঝুলে ঝুলে যেতে হয়। যবিপ্রবিতে এতগুলো বাস থাকতে কেন আমাদের কষ্ট করতে হবে? আর স্টাফদের পরিবহনের জন্য কেনই বা বেশিরভাগ বাস রাখা হচ্ছে?

এ বিষয়ে যবিপ্রবির পরিবহন প্রশাসক ড. জাফিরুল ইসলাম বলেন, এই মুহুর্তে যবিপ্রবিতে পরিবহনের কোন সংকট নেই। আমাদের যে ছয়টি গাড়ী রয়েছে সে ছয়টি গাড়ীই বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষার সিডিউল অনুযায়ী বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে এবং কর্মচারীদের জন্য ৪টি বাস দেওয়া আছে চার রুটে। আমাদের সকল বিভাগের পরীক্ষাগুলো ধাপে ধাপে নেওয়া হচ্ছে , তাতে শহর থেকে যেসকল শিক্ষার্থী আসে তাদের সংকুলান হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও নিয়মিত যাতায়াত করে তাদের দায়ভার আমি পরিবহন প্রশাসক নিতে পারবোনা।

তিনি আরও বলেন, যেসকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ তাদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যখন তাদের পরীক্ষা শুরু হবে তখন তারা যাতায়াত করবে। বিশ্ববিদ্যালয় এখন সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণরুপে খুলে দেওয়া হয়েছে। যেসকল শিক্ষার্থী হলে ওঠেছে তাদেরকে করোনা টেস্ট করে হলে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং হলের ভিতরের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলকে চলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অফিস চলাকালীন সময়ে তাদের যেকোন প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে। শিক্ষার্থীদের যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াত করতে পারবে এতে ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই। যেসকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ সাধারণত তাদের পরীক্ষার মাঝে তাদের দুই সপ্তাহের গ্যাপ দেওয়া হয়ে থাকে। একজন শিক্ষার্থী শিক্ষকের সাথে কোন প্রয়োজন, লাইব্রেরি বা ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই আসতে পারবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে ও যত্রতত্র ঘোরাফেরা না করা এবং সবসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত