ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

যৌন হয়রানির অভিযোগ

বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষককে সাময়িক অব্যহতি

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৪৮  
আপডেট :
 ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৫৩

বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষককে সাময়িক অব্যহতি
ছবি: প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সহকারী অধ্যাপক এইচএম আনিসুজ্জামানকে কৃষি বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ছাত্রীকে যৌন হয়রানিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে তাকে অব্যহতি দেয়ার এ

এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব, পরীক্ষার ফলাফলে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ জানায়।

পরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোরাদ হোসেনে স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: মোজাহার আলীকে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ২৫(৩) ধারা মোতাবেক কৃষি বিভাগের চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব অর্পণ করা হয় ৷

মোরাদ হোসেন জানান, এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে৷ তাদের তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি এক ছাত্রীকে কৃষি বিভাগের শিক্ষক এইচ এম আনিসুজ্জামানের অনৈতিক প্রস্তাব সম্বলিত একটি অডিও ফাঁস হয়। এরপর গত ২৩ জানুয়ারি শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষার নম্বরপত্রে গড়মিল করা, উত্তরপত্রে ইচ্ছা মাফিক নাম্বার বসানো, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকিসহ হিসাব-নিকাশে অসমতার অভিযোগ জানানো হয়। প্রতিবাদে আনিসুজ্জামানের অব্যাহতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে তারা একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

পরে ২৪ জানুয়ারি বিকেলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল ও শোডাউন করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ, শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের দাবির মুখে শিক্ষক এইচ এম আনিসুজ্জামানকে সভাপতির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে এ শিক্ষকের একাধিকবার ওই ছাত্রীর সঙ্গে একাকি সময় কাটানোর জন্য জোর করতে শোনা যায়। ছাত্রী বারবার অসম্মতি জানালে তিনি ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। তাছাড়া ওই ছাত্রীকে পরীক্ষার আগে প্রশ্ন দেয়াসহ নম্বর বাড়িয়ে দেয়ার কথা উঠে আসে ওই ফোনালাপে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যপূর্ণ আচরণ ও অনেকের পরীক্ষার উত্তরপত্রে নম্বর বাড়ানো কমানোর অভিযোগ রয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) ও বর্তমান বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: শাহজাহান এর বিরুদ্ধে তার সাবেক গৃহকর্মী যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনে। ২০১৮ সালের ২২ এপ্রিল স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের ভিডিও ভাইরাল হয়। ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন একই বিভাগের এক ছাত্রী। এছাড়া ২০১৯ কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগীয় প্রধান মোঃ আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে ওই বিভাগের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার কেরে শিক্ষক আনিসুজ্জামান সংবাদকর্মীদের বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট।

ভাইরাল হওয়া অডিওর কন্ঠ তার না দাবি করে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ শত্রুতামূলক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিছু দিন আগে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ছিলো। আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য প্রতিপক্ষ এ কাজটা করেছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. মোজাহার আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এইচ এম আনিসুজ্জামানকে সভাপতির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে তদন্তের পরে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তাকে পুনরায় সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/পিএল

  • সর্বশেষ
  • পঠিত