বিসিএস ক্যাডার হওয়া এক দম্পতির সফলতার গল্প
বুঝতে শেখার পর থেকেই স্বপ্ন ছিল পুলিশে চাকরি করার। এজন্য করেছেন কঠোর অধ্যবসায়। কঠোর পরিশ্রম। শেষপর্যন্ত স্বপ্নকে ছুঁতে পারেন। বলছিলাম চ্যালেঞ্জ নেয়া এক পুলিশ দম্পতির কথা।
এই পুলিশ দম্পতির একজন মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগ। আরেকজন শামীমা আক্তার সুমী। দুজনেই ৩৩তম বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পান। জাহিদ কাজ করছেন, কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটে। আর সুমী আছেন পুলিশের বিশেষ শাখায়, রাজধানীর মালিবাগে।
তবে তাদের এই সফলতায় ছিল কঠিনতর চ্যালেঞ্জ। আর সেসব চ্যালেঞ্জকে জয় করেই আজ তারা সফল মানুষ, সফল দম্পতি।
তাদের দুজনের প্রথম দেখা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ৩৩তম বিসিএসের ফল প্রকাশের পর। সেদিন চোখাচোখি হয় দুজনের। তারপর সামান্য কথা।
এর কয়েকদিন পর শুরু হয় পেশাগত প্রশিক্ষণ। কঠোর নিয়মের মধ্যে থাকা সেই প্রশিক্ষণে সামান্যই দেখা হতো তাদের। এভাবেই একসময় তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। তারপর প্রেম-ভালোবাসা। সবশেষ পরিবারের সিদ্ধান্তে বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। দিনটি ছিল ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই।
ছোট থেকেই বাবার স্বপ্ন পূরণে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ছিলেন সুমী। ভাই-বোনদের মধ্যে সুমী ছিলেন সবার ছোট। সেই সুমীই পূরণ করেছেন বাবার স্বপ্ন। কারণ বাবা চাইতেন তার তিন সন্তানের মধ্যে কেউ একজন পুলিশে আসবে।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগ থেকে বিএসসি শেষ করেন সুমী। ছোট থেকেই মেধাবী হওয়ায় ফলাফলের দিক দিয়ে সবসময় এগিয়ে থাকতেন। অর তাই বিসিএসের ক্ষেত্রেও ঘটেনি তার ব্যতিক্রম। তবে এক্ষেত্রে এ দম্পতির দুজনেই বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তাদের এ সফলতার পেছনে পরিবারের অবদানের কথা।
সুমী বলেন, দুজনেই পুলিশ হওয়ায় গ্রামের সবাই অনেক বেশি প্রভাবশালী মনে করে আমাদের। কিন্তু তাদের কখনোই বোঝাতে পারি না যে আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সামান্য কর্মচারি মাত্র।
এদিকে জাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্পন্ন করেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সময়ই সফল হন বিসিএস-পুলিশ ক্যাডারে।
জাহিদ বলেন, জীবনে মাত্র একদিন বেকার থেকেছেন। ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট তিনি অব্যাহতি দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদ থেকে। তার ঠিক একদিন পর ৭ আগস্ট বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন।
বিসিএস পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এ দম্পতি বলেন, সফলতার জন্য আত্মবিশ্বাসটা প্রয়োজন সবার আগে। যে যেতো বেশি আত্মবিশ্বাসী, সে ততো বেশি এগিয়ে থাকবে এই প্রতিযোগিতায়। তাই নিজের প্রতি সবার আগে আত্মবিশ্বাসটা রাখা জরুরি।
জেডএইচ/