ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

সরেজমিনে যাচাই করে এমপিওভুক্তির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সরেজমিনে যাচাই করে এমপিওভুক্তির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা ও প্রয়োজনীয়তা আছে কি-না, তা সরেজমিন যাচাই করে দেখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেবল কাগজে-কলমে যাচাই-বাছাই করলে চলবে না; সরেজমিন ওই প্রতিষ্ঠানের বাস্তব অবস্থা দেখে, যাচাই-বাছাই করে এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর।

গত রোববার সংসদে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছিলেন, নতুন করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার বিষয়টি আগামী মাসের মধ্যে ফয়সালা হবে। আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছিলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড় না করলে এমপিও দেওয়া যায় না। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি হয়েছে এবং কিছু টাকা বরাদ্দও দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন দিয়েছে, আগ্রহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে আবেদন করেছে। এসব আবেদন বাছাই করা হচ্ছে। কিসের ভিত্তিতে এমপিও দেওয়া হবে, তা প্রধানমন্ত্রীর মতামত নিয়ে আগামী মাসের মধ্যে ফয়সালা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কতসংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবার এমপিওভুক্ত হবে, তা এখনই তিনি বলতে চান না। তবে সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এ অবস্থায় গতকালের মন্ত্রিসভা বৈঠকে নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রসঙ্গ ওঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে পরিমাণ আবেদন জমা পড়েছে, তাতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব নয়। এমপিওভুক্ত করা হবে, এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তবে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে যোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই কেবল এমপিওভুক্ত করা হবে। এ জন্য তিনি সংশ্নিষ্টদের প্রকৃত যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাই করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল কাগজে-কলমে যাচাই নয়, সরেজমিন প্রতিষ্ঠান যাচাই করতে হবে। এতে কিছুটা সময় লাগলে লাগবে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সময়ে সময়ে এটি হবে। তাই ভালোভাবে দেখেশুনে এমপিওভুক্ত করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জমা পড়া আবেদনগুলোর মধ্যে 'এমপিও নীতিমালা-২০১৮'-এর সব শর্ত পূরণ করে 'যোগ্য তালিকা'য় স্থান পেয়েছে সারাদেশের ১ হাজার ৫৩৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এগুলো এমপিওভুক্তির যোগ্য। আবেদন জমা পড়েছিল ৬ হাজার ১৪১ প্রতিষ্ঠানের।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। সবাই বসে তা চূড়ান্ত করা হবে। তখন কিছু পরিবর্তনও আসতে পারে। তবে চূড়ান্ত তালিকার অনুমোদন দেবেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, এমপিওভুক্তির যোগ্যতা নির্ণয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০ নম্বর রাখা হয়েছিল। একাডেমিক স্বীকৃতি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থী ও উত্তীর্ণের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নম্বর দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এমপিও খাতে সরকারের নতুন ব্যয়ের একটি হিসাব প্রস্তুত করে রেখেছে। জনবল কাঠামো ও এমপিওভুক্তির নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য ৫৭৯ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য বছরে লাগবে ১৯৭ কোটি টাকা, ৭৬৪ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ৩৪৩ কোটি টাকা, ৬৬টি মাধ্যমিক সংযুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জন্য ৫৩ কোটি টাকা, ৮৫টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জন্য ৬৮ কোটি টাকা ও ৪৩টি ডিগ্রি কলেজের জন্য প্রয়োজন হবে বছরে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। মোট ১ হাজার ৫৩৭টি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য বছরে প্রয়োজন হবে মোট ৭০৯ কোটি টাকা।

২০১০ খ্রিস্টাব্দে সর্বশেষ সরকার ১ হাজার ৬২৪টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে। এরপর থেকে শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির জন্য আন্দোলন করে আসছেন। এমনকি সংসদ সদস্যরাও এমপিওভুক্তির জন্য জাতীয় সংসদে একাধিবার বলেছেন। গত জুন মাসে এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারির পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির জন্য দুটি কমিটি গঠন করে। অনলাইনে আবেদন গ্রহণের পর তাদের যাচাই-বাছাইয়ে ১ হাজার ৫৩৭টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত