ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

জালিয়াতদের আজীবন বহিষ্কার দাবি

  ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:৪১

জালিয়াতদের আজীবন বহিষ্কার দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের সহযোগীদের আজীবন বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বেলা ১২ টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন শুরু হয়। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর, সমাজসেবা সম্পাদক ও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করা আখতার হোসেন, স্বতন্ত্রজোট থেকে ডাকসুতে ভিপি পদে নির্বাচন করা অরণি সেমন্তি খান, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, রাশেদ খাঁন প্রমুখ।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘মেধাবীদের পাঠশালায় জালিয়াতদের ঠাঁই নাই’, ‘আমাদের ক্যাম্পাস রাখিব মুক্ত’, ‘দুর্নীতি বন্ধ কর সুষ্ঠু সমৃদ্ধ ঢাবি গড়’, ‘জালিয়াতদের ঠিকানা ঢাবিতে হবে না’ ইত্যাদি প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, যখন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, তখন প্রশাসন বলে প্রশ্নফাঁস হয়নি, ডিজিটাল জালিয়াতি হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায়? ছাত্রলীগসহ সকল ছাত্র সংগঠন থেকে জালিয়াতদের বহিষ্কারের দাবি এসেছে। তাহলে এখনো কেন তাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে না? তাহলে কি আমরা ভেবে নিবো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছে!

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, গত বছর ঘ ইউনিটে প্রশ্নফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হলে সর্বপ্রথম আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আখতার একাই রাজু ভাস্কর্যে অনশনে বসেছিলেন। তার একার প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা আরো সংগঠিত হয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমদিকে বিষয়টি নিয়ে দায়সারা বক্তব্য দেয়। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তারা সেই বিতর্কিত পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছে। সুতরাং ছাত্রদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে, সেটা যখন যেখানেই ঘটুক।

নুর বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের আবেগ-অনুভূতি একটু বেশি। কারণ এটি এমন বিশ্ববিদ্যালয় যা একটি জাতিকে জন্ম দিয়েছে। পৃথিবীতে অনেক দেশ রয়েছে, যাদের অনেক স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু সেসব বিশ্ববিদ্যালয় একটি রাষ্ট্রের জন্ম দিতে পারেনি। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী জালিয়াতির মাধ্যমে অসৎ উপায়ে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে জালিয়াতি চলে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় দায়সারা বক্তব্য দিয়ে এসেছেন।

নুর আরো বলেন, ‘নেসেসিটি নোজ নো ল’ অর্থ্যাৎ প্রয়োজন কোনো আইন মানে না। সুতরাং অতিদ্রুত জালিয়াতি করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে এবং জালিয়াতি চক্রের সাথে ঢাবির যারা জড়িত তাদেরকে সিন্ডিকেটের মিটিং ডেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে। যারা ইতোমধ্যেই পাস করে গেছেন তাদের সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। এসব করলে যারা অসৎ উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি চায়, তারা আর জালিয়াতি করার দুঃসাহস করবে না।

এক ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান এবং প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের সহযোগীদের আজীবন বহিষ্কারের দাবিতে স্মারকলিপি দেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত