ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন: কঠোর অবস্থানে মন্ত্রণালয়

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৫৩  
আপডেট :
 ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:০৪

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন: কঠোর অবস্থানে মন্ত্রণালয়

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন স্কেলে গ্রেড পরির্তনের ঘোষণা আসছে। সেই অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে ও প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত হবেন। নতুন করে ১২তম গ্রেডে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকের পদ সৃজন করা হবে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য দূরীকরণ কাজ শুরু হয়েছে। নতুন গ্রেড বাস্তবায়ন হলে এ বৈষম্য অনেকটা দূর হয়ে যাবে।

এদিকে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম ও সহকারীদের ১১তম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন করছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। বেতন বৈষম্য নিরসন তথা সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ২৩ অক্টোবর (বুধবার) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গঠিত মোর্চা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ।

দাবি আদায়ে ৪ দিন বিভিন্ন মেয়াদে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) ঐক্য পরিষদের নেতারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবি আদায়ে দেশের ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে চার লাখ শিক্ষককে আগামী ২৩ অক্টোবর (বুধবার) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন ঐক্য পরিষদের নেতারা।

সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন বাস্তবায়নের দাবি আদায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গত ১৭ অক্টোবর পূর্ণদিবস, ১৬ অক্টোবর অর্ধদিবস, ১৫ অক্টোবর ৩ ঘণ্টা এবং এর ১৪ অক্টোবর কর্মসূচির প্রথমদিনে ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ ডাকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। আর বেতন বৈষম্য নিরসনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কারও আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন ঐক্য পরিষদের নেতারা।

তবে বেতনবৈষম্য নিরসনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে কঠোর অবস্থানে মন্ত্রণালয়। চাকরি বিধি ও মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা লঙ্ঘনকারী শিক্ষকদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে (ডিপিই-কে)।

রোববার আরো একটি চিঠি ইস্যু করতে বলা হয়েছে অধিদফতরকে (ডিপিই-কে)। সে চিঠিতে আগামী ২৩ অক্টোবর যারা অনুপস্থিত থাকবেন, তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হবে। এ চিঠি আজই (সোমবার) জারি করা হতে পারে। জেলা-উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের এ চিঠি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হবে।

এ দিকে, প্রায় পক্ষকালব্যাপী সরকারি সফরে বিদেশ সফর শেষে গতকাল প্রত্যুষে ঢাকায় ফিরে দুপুরে প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন এবং মন্ত্রণালয়ের অন্য সব অতিরিক্ত সচিবদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন সচিব মো: আকরাম-আল-হোসেন মন্ত্রীর কক্ষে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সচিব ডিপিইর মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন নিজ কক্ষে এসে।

মন্ত্রী-অতিরিক্ত সচিবদের সাথে বৈঠকে প্রাথমিক শিক্ষকদের গত ১৪ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি সম্পর্কে সচিবকে অবগত করানো হয়। সচিব আগামী ২৩ অক্টোবর শিক্ষকদের ঢাকায় মহাসমাবেশের বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন এবং এ ব্যাপারে আর কোনো ছাড় নয় বলে মন্তব্য করেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্র জানান, মন্ত্রী এতে সম্মতি জানান। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আজই জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের মাধ্যমে আরেকটি নির্দশনামূলক চিঠি পাঠানো হবে। তাতে, যারাই ঢাকায় মহাসমাবেশে যোগ দেবেন, তাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশনা থাকবে বলে জানা গেছে।

মন্ত্রী-অতিরিক্ত সচিবের সাথে বৈঠক শেষে সচিব মো: আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষকদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমি বৈঠক করেছি-আলোচনা হয়েছে।’

সচিব আরো বলেন, ‘চিঠি দেয়া হবে, যারা সমাবেশে যাবে, তাদের ব্যাপারে কঠোরতম ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সচিব মো: আকরাম-আল-হোসেন আরো বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে অর্থসচিবের সাথে কথা বলেছি এবং একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথে অনেক দূর এগিয়েছি।’

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত