ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছাত্রীদের শিক্ষক বললেন, ‘আমি প্রেম পিপাসু, প্রেম দিওয়ানা’

ছাত্রীদের শিক্ষক বললেন, ‘আমি প্রেম পিপাসু, প্রেম দিওয়ানা’
প্রতীকী ছবি

দিওয়ানা, আমি প্রেম দিওয়ানা, আমি প্রেম পিপাসু, আমাকে ভালোবাসবে? এভাবেই বিভিন্ন সময় অনলাইনে (মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমু) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে আসছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক আমিরুল মোমেনিন চৌধুরী।

এছাড়া কুরুচিপূর্ণ ভাষায় ছাত্রীদের শরীর নিয়ে মন্তব্য, অফিসে বসিয়ে রেখে ফ্রি মাইন্ডের কথা বলে নানা রকম ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা, সবার সামনে হাসতে হাসতে গায়ে হাত দেয়া, অন্য নারী শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অশালীন মন্তব্য, ক্লাসে মেয়েদের শরীর সম্বন্ধীয় ব্যাপারে ইঙ্গিত করে নানা অশালীন কথাবার্তা বলে ছাত্রীদের হয়রানি করতেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ সেলে অভিযোগ জমা দেওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের কাছে ফোন করে ক্ষমা চান ওই শিক্ষক। মুঠোফোন কলে তিনি বলেন, প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। আমার অনেক শিক্ষা হয়ে গেছে। আমি জীবনে আর কোনোদিন চারুকলা বা অন্য কোনো জায়গার মেয়েকে কিছু বলব না। এটা আমার বাসায় জানাজানি হলে আমার সোনার সংসার শেষ হয়ে যাবে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ফোনালাপের বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। এ সংক্রান্ত ফোনালাপটি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।

গত বুধবার দুপুরে অধ্যাপক আমিরুল মোমেনিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন অনুষদের একজন ছাত্রসহ ১৩ জন ছাত্রী। এদিকে শুক্রবার ভুক্তভোগী এক ছাত্রী নগরীর চন্দ্রিমা থানায় অধ্যাপক আমিরুল মোমেনিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা করেছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মনির।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ সেলে অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, ‘অনেক দিন থেকে প্রায় সকল শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ও ক্লাসের বাইরে অশ্লীল ভাষায় কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এবং মেসেজ ও মেসেঞ্জারে অশ্লীল ছবি, ভিডিও, মেসেজ প্রেরণ করে অসামাজিক কার্যকলাপের আহ্বান জানানো হয়। এসব অশ্লীল বক্তব্যের শিকার হয়ে আমরা মানসিকভাবে হেনস্থার শিকার ও বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছি।’

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলে অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘আমি তো অভিযোগটাই দেখিনি। তারা কী অভিযোগ দিয়েছে, কারা করেছে, তাও তো বলছে না।’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেওয়ার আগে ফোনালাপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, এটা এ রকম কোনো জিনিস না। এরা যে এ রকম করবে, সেটাও জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো বলছি, আমি কোনো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এটা করিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলে অভিযোগের অগ্রগতির বিষয়ে যৌন হয়রানি নিরোধ সেলের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু বলেন, ‘চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে এখনও বসা হয়নি। যেহেতু আমাদের সেলের সভাপতির থাকা বা না থাকার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত না। সেজন্য আমি আজ ভিসি স্যারের সাথে কথা বলব।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত