ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আমার কন্টেন্টকে ভালোবেসে মানুষ এই স্বীকৃতি দিয়েছে: আতিক

  বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২০, ১৮:৫৪

আমার কন্টেন্টকে ভালোবেসে মানুষ এই স্বীকৃতি দিয়েছে: আতিক

বর্তমান সময়ের অধিকাংশ সময় জুড়ে ফেসবুকে দখল করে আছে মিম আর ট্রল। সবখানেই এখন এ দু’য়ের ছড়াছড়ি। আপনি যদি ট্রল কিংবা সবসময় মজাদার ভিডিওর খোঁজে থাকেন তাহলে তার চেহারাটা অবশ্যই আপনার কাছে অপরিচিত না। ইউটিউব কন্টেন্টের জনপ্রিয়তাতে নামের পাশেই বসেছে ‘জাতীয় ভাইয়া’র ট্যাগ। সবাই তাকে আতিক ভাই নামে চিনলেও তার আসল নাম আসাদুল্লাহ আতিক।

শরীয়তপুরে জন্ম হলেও স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন ঢাকার সাভারে। নিজের করা ভিডিওর মতোই ভিন্ন তার স্কুল জীবনের গল্প। মা সরকারী চাকুরীজীবী হওয়ার সুবাদে পড়েছেন ভিন্ন ভিন্ন স্কুলে। সংখ্যাটাও অল্প নয়, গুনে গুনে সাতটি। সাত স্কুলের আঙ্গিনা ঘুরে কলেজে ভর্তি হয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মাদ পাবলিক কলেজ অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে এই বছরই শেষ করেছেন স্নাতকোত্তর। তার ধারণা মতে প্রতিটি বইয়ের পেছনের গল্প শিক্ষার্থীদের নাজেহাল করার জন্য। হাজারো আজব তথ্যের গল্প পাওয়া যায় তার কথায়।

তার একটি আবিষ্কার সবাই যেটাকে বইয়ের শুরুতে পিরিয়ডিক টেবিল ভাবেন, ওটা আসলে একটা সাপলুডুর কোর্ট। কি ভেবে বইয়ের এমন হাস্যরসিক রিভিউ? শোনা যাক আতিকের মুখ থেকেই। বাংলাদেশ জার্নালের সাথে সম্প্রতি কথা বলেন ইউটিউবের পরিচিত এই মুখ। তাকে নিয়ে লিখেছেন কৌশিক এস রায়।

‘আমি বিজ্ঞানের ছাত্র, বিজ্ঞানের বইয়ের সাথে আমার অনেক দিনের বোঝাপড়া। এই বইগুলোর সাথে কলেজ জীবনে আমার খুবই ভয়াবহ স্মৃতি রয়েছে। চিন্তাটা এখান থেকেই, এখন যারা এই বইগুলো পড়ছে তাদের যেনো এই ভয়াবহ স্মৃতিটাই না থাকে সেই লক্ষ্যেই এমন মজাদার রিভিউ ভিডিও করার পরিকল্পনা করি। সাথে চেষ্টা করি এই কঠিন বিষয়গুলো পড়ার সময় যাতে রিভিউ গুলোর সাথে তুলনা করতে পেরে পড়ার মাঝে তারা যেনো একটু আনন্দ পায়, ভীতিটা যেনো কেটে যায়।’ কথাগুলো বলছিলেন আতিক নিজেই।

ভাবনার সাথে তাল মিলিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের রসায়ন বই দিয়েই শুরু করেন এমন ব্যতিক্রমী রিভিউ। নিজের ফেসবুকে পেইজ ‘আতিক ভাই’ এ ৩য় ভিডিও হিসেবে আপলোডের পরই সেখানে মানুষের হিড়িক পড়ে। মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে স্থান পান লাখো মানুষের ফেসবুক টাইমলাইনে। ভিউ ছাড়িয়ে যান ১২ লক্ষেরও বেশি। শুরুটা এভাবেই, মানুষের আগ্রহ এবং সমর্থনে নিয়মিত হতে শুরু করেন ফেসবুকে ভিডিও কন্টেন্টে। তবে শুধু রিভিউতে সীমাবদ্ধ থাকেননি। পরবর্তীতে বানানো শুরু করেন মজাদার ভিডিও। আতিকের বানানো প্রায় সব ভিডিওই দখল করে লাখো মানুষের স্ক্রীণ। মাত্র ৬ মাসেই আতিকের পেজে রয়েছে ২ লাখেরও বেশি ফলোয়ার। আছে কোটির কাছাকাছি ভিউ। আতিকের ব্যাপারে সবচেয়ে পরিচিত ধারণা তার গম্ভীর, নিরস, বিরক্ত মুখ নিয়ে। বাস্তব জীবনেও কি তাই?

হাসতে হাসতেই আতিক জানালেন ব্যাপারটা পুরোই উল্টো। বাস্তব জীবনে তার মুখটা সবসময় হাস্যোজ্জ্বল। সবসময় ভালোবাসেন অন্যকে হাসাতে। এত নামকে পেছনে ফেলে কেনো ‘আতিক ভাই’ নাম দিলেন? আতিক বলেন, ‘আমার এই নামের পেছনে রয়েছে বন্ধু মিশু সারোয়ার, তার কথাতেই এই নামটা দেওয়া। এই নামের সাথে আমার অনেক হাস্য রসাত্মক ঘটনাও জড়িয়ে আছে। তবে প্রকৃত ‘আতিক ভাই’ আমি নিজ থেকে হই নি, আমার কন্টেন্টকে ভালোবেসে মানুষ এই স্বীকৃতি দিয়েছে।’

এত অল্প সময়ে এতো পরিচিত হওয়ার অনুভূতিটাও জানিয়ে রাখলেন। ‘রিভিউ গুলো করার পর এমন অবস্থা হয়েছিল রাস্তায় রিক্সায় চলার সময় বাসের জানালা দিয়ে মাথা বের করে বলত, ‘ভাই ম্যাথ রিভিউ কবে আসবে?’ লেগুনার গেটে ঝুলে আছি ভিতর থেকে বলতো,‘ভাই রসায়ন রিভিউটা সেরা ছিল। আসেন ভিতরে এসে বসেন’- যোগ করেন আতিক। কথায় আছে মানুষকে হাসানো দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজের মধ্যে একটি। চুপচাপ গম্ভীর চেহারার ভাব নিয়ে এই কাজটাই অবলীলায় করে চলেছেন আসাদুল্লাহ তাইতো পড়াশোনার পাশপাশি সমানতালে মাথা ঘামিয়ে যাচ্ছেন নতুন পাঠ্যবইয়ের অতুলনীয় সব থিওরি আবিষ্কারে।

আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত