ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘এই প্রজন্ম আমাকে চিনবে, ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগে’

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২০, ১৮:৫৭  
আপডেট :
 ২১ জুন ২০২০, ১৯:৪৪

‘এই প্রজন্ম আমাকে চিনবে, ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগে’

‘রূপসীর ঐ রেশমি চুলে, দোলে গো কেয়া দোলে’ নব্বইয়ের দশকে প্রচারিত হওয়া একটি বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত হওয়া এই সংলাপটি দর্শকমহলে এখনও বেশ পরিচিত। কেয়া বিশুদ্ধ নারিকেল তেলের বিজ্ঞাপনে রূপসী মৌকে উদ্দেশ্য করে নোবেলের এই সংলাপটি আজও দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছে। সেই বিজ্ঞাপনে রূপসীর বেশে হাজির হয়েছিলেন নব্বই দশক মাতানো মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ। নব্বইয়ের দশকে প্রচারিত এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ ও আদিল হোসেন নোবেল। সেসময়ে যে ক’জন মডেল ও অভিনেত্রী দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম মৌ।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন অসংখ্য বিজ্ঞাপনে। কাজের মান ও অভিনয় স্বকীয়তায় জনপ্রিয়তার আকাশ ছুঁয়েছিলেন মৌ। কেয়া লিপজেল, কেয়া সুপার লেমন সোপ, কেয়া পেট্রোলিয়াম জেলি, কেয়া টেলকম পাউডার, কেয়া লন্ড্রি সোপ বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এই সুন্দরীতমা। ঐ সময়টাতে প্রচার হওয়া বিজ্ঞাপনগুলোও ছিলো বেশ নান্দনিক। যার ফলে খুব দ্রুতই সেগুলো দর্শকপ্রিয়তা পেতো। সেইসব বিজ্ঞাপনের বদৌলতে অনেক মডেল ও অভিনয়শিল্পীরাই পেয়েছেন তারকাখ্যাতি।

একটা সময় টিভি খুললেই দেখা যেত জনপ্রিয় এ মডেলের বিজ্ঞাপন। নজরকাড়া উপস্থিতিতে বিজ্ঞাপনেও দর্শকের মাঝে স্বস্তি এনে দিতেন তিনি। এখন বিজ্ঞাপনে খুব একটা দেখা না গেলেও গেল বছরের মাঝামঝি সময়ে শাহরিয়ার পলকের নির্দেশনায় প্রথমবারের মত একটি এমভিসিতে (মিউজিক ভিডিও কমার্শিয়াল) কাজ করে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন নব্বই দশকের চিরচেনা সেই মৌ। ইকো প্লাস রেফ্রিজারেটর এর এই কমার্শিয়ালে মৌকে দেখা যায় ছয়রূপে।

আজ রোববার এই রূপসীর জন্মদিন। দেখতে দেখতে জীবনের ৪৩ বসন্ত পেরিয়ে ৪৪-তে পা রাখলেন তিনি। ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছোঁয়ার আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সহকর্মী, ভক্ত অনুরাগীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি। জন্মদিনে তেমন বিশেষ কোন আয়োজন নেই বলে জানান তিনি। এক আলাপচারিতায় বাংলাদেশ জার্নালের সাথে কথা বলেন জনপ্রিয় এই মডেল।

দেখতে দেখতে জীবনের ৪৩ বসন্ত পার করে দিলেন। এত বছরের প্রাপ্তি হিসেবে কি দেখেন? আর জন্মদিন নিয়ে কোন পরিকল্পনা আছে কি?

মৌ: সেই শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবার এত এত ভালোবাসা পেয়েছি যা আমাকে রীতিমত ভাবায়। আমার কাছে মনে হয় এমন কিছুই হয়তো করতে পারিনি। এখনও যখন সবাই এত এত ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করে সত্যিই আমি মুগ্ধ হই, সাথে অবাকও। এই ভালোবাসাটুকুই আমার অর্জন। আর জন্মদিন নিয়ে আমার কখনওই কোন আয়োজন থাকে না, আজও নেই। মায়ের শরীর একটু খারাপ তাই দেখতে গিয়েছিলাম। মনটা তেমন ভালো নেই এজন্য। এখন বাসায় চলে এসেছি। কোন আয়োজন করছি না, পরিবারের সাথেই থাকবো।

মডেলিং ও অভিনেত্রীর বাইরেও একজন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী হিসেবে আপনি সমাদৃত। কোন জায়গাটাতে আপনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

মৌ: আমি সবসময়ই এই কথাটার উত্তর দিয়েছি। যেটা আমি ছোটবেলা থেকে শিখে বড় হয়েছি সেটা হলো নাচ। আর নাচটা করতেই আমি অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আর মডেলিং করতে করতে শিখে গেছি। আর সবশেষে হলো আমার অভিনয়। যেটার কিছুই আমি বুঝিনা। যতটুকু করি সেটা দেখে দেখে করার চেষ্টা করি। আর নাচ এমন একটা বিষয় যেটা আমি প্রতি মূহুর্ত উপভোগ করি।

কিন্তু নাচের অনুষ্ঠানে তো আপনাকে এখন কম দেখা যায়। এর কারণ কী?

মৌ: একেবারেই না। আপনারা হয়তো স্টেজ নাচের অনুষ্ঠান কম দেখেন এইজন্য বলতে পারেন না। আমি প্রায়ই নাচের অনুষ্ঠান করি। বড় বর যে অনুষ্ঠানগুলো হয় যেমন রবীন্দ্রজয়ন্তী, নজরুলজয়ন্তী সহ অনেক অনুষ্ঠানই হয় শিল্পকলার, সেগুলো নিয়মিতই করছি। তবে হ্যাঁ, হয়তো টেলিভিশনের পর্দায় নাচের অনুষ্ঠানে হয়তো আমাকে একটু কম দেখা যায়। সারাবছর কিন্তু আমি নাটক বা মডেলিং নয়, নাচ নিয়েই ব্যস্ত থাকি আমি।

সাড়ে তিন বছর বয়স থেকেই আপনার নাচ শেখা শুরু। দীর্ঘ এই তিন দশকের ক্যারিয়ারে আপনার প্রাপ্তি কি?

মৌ: এক কথায় দর্শকদের ভালবাসা। আসলে আমাদের প্রাপ্তি তো এত অল্পতেই বোঝা যায় না। আমাদের এখনও অনেক কিছু পাওয়ার আছে, দর্শককে আরও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। নিজের অনেক কিছু শেখার আছে। এখনই যে অনেক কিছু পেয়ে গেছি তা বলবো না, আরও অনেক কিছু পাওয়ার আছে। তবে হ্যাঁ, অনেকের চেয়ে অনেক বেশি কিছু পেয়েছি, ভালো ভালো গুরুর সান্নিধ্য পেয়েছি, তাদের সাথে কাজ করতে পেরেছি; যেটা আমার কাছে প্রাপ্তি মনে হয়।

নতুন প্রজন্মের অনেকেই আপনাকে ‘আইকন’ হিসেবে দেখেন। এই বিষয়টা কতটুক উপভোগ করেন?

মৌ: ভীষণ উপভোগ করি। এটা জানতে পেরে খুব ভালো লাগে আমার। তবে কি বিষয়ে তারা আইকন মনে করে তা বলতে পারবো না। আসলে সবকিছুই হচ্ছে একটা টিম ওয়ার্ক। টিম ওয়ার্কের কারণেই কিন্তু একটা কাজ হিট হয়। আমার ওইসময়টাতে যে কাজগুলো করেছি সেগুলো হয়তো এখনকার প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের ভালো লেগেছে যার কারণে তারা এমনটা বলে। ওই সময়টাতে আফজাল আংকেল, আনোয়ার হোসেন বুলু উনাদের সঙ্গে কাজ করেছি বেশি। আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করি যে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। তাদের সেই কাজগুলোর জন্য এখনও দর্শক আমাকে মনে রেখেছে; এটার জন্য সত্যি নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে করি। এই প্রজন্ম আমাকে ‘আইকন’ হিসেবে দেখেন এটা ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগে। প্রথমত, এই প্রজন্ম আমাকে চিনবে, এটা ভাবতেই অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে নিজের মধ্যে। আর চেনাটা কিন্তু খুব স্বাভাবিক না। কারণ আমি এখন কিন্তু খুব কম কাজ করি।

পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে বলে এখন নতুন প্রজন্মের অনেকেই নাচে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী নন। এই বিষয়টাকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

মৌ: আমার বাবা-মা দুজনেই যেহেতু সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ছিলেন সেহেতু আমি ছোটবেলা থেকেই নাচের সঙ্গে যুক্ত হই। তারা চেয়েছেন আমি যেন নাচ-গান শিখি; সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যুক্ত থাকি। আমি আমার নাচের স্টুডেন্টদের যখন জিজ্ঞেস করতাম তারা বড় হয়ে কি হতে চায়, তখন অনেকেই বলেছে যে তারা মডেল হতে চায়! এর জন্য হয়তো আসলে কোনভাবে আমি-ই দায়ী। কারণ আমি নিজে একজন নৃত্যশিল্পী। আমার নাচের চেয়ে হয়তো মডেলিংটা তাদের কাছে বেশি ভালো লেগেছে। হয়তো মডেলিংয়ের প্রচার, প্রসারটা বেশি; নাচের এত বেশি না যার কারণে বাচ্চারা এত দেখে না। বেশিরভাগ মায়েরা-ই বলে নাচটা শিখাচ্ছি তাল-সেন্সের জন্য, এটা অভিনয়ে বা মডেলিংয়ে কাজে লাগতে পারে। অনেকে হয়তো বা শিখছেন ফিল্মের নায়িকা হওয়ার জন্য। এখনকার বাবা-মাদেরকে আমার খুব অস্থির মনে হয়। সবকিছুতেই পড়ো পড়ো,নাচো নাচো এরকম একটা অবস্থা। যেটা বাচ্চাদের জন্য আসলেই খুব কষ্টকর। বাচ্চাদেরকে আসলে শিখতে দেওয়া উচিত। শেখার পর একটা সময় গিয়ে গিয়ে বাচ্চা তার ইচ্ছানুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে যে নাচ করবে নাকি না! ভালো না লাগলে সে করবে না। ওটা শেখা বা ইচ্ছে টা গ্রো করার আগেই বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের প্রেশার দিতে শুরু করে। আমারও কিন্তু মা অনেক প্রেশার দিয়েছেন। কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে আমি নাচটাকে ভালোবেসে ফেলেছি। ভালোবাসাটা না থাকলে হবে না। তবে এখনকার বাচ্চাদের উপর জোর করে সেটা চাপিয়ে দেওয়া যেটা খুবই খারাপ। এটা করা উচিত না অভিভাবকদের। এই অস্থিরতাটা যদি একটু কমে তাহলে সবার জন্যই ভালো; ভালো কিছুই হবে।

যেহেতু নাচটাকেই বেশি ভালবাসেন। নাচ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

মৌ: নাচ নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। অনেক বড় বড় নাচের প্রোডাকশন করার ইচ্ছা রয়েছে। আমি চাই ভালো ভালো নাচ দেখাতে, শেখাতে। বিভিন্ন রকমের নাচ দেখাতে চাই। আমি সবসময় দর্শককে নতুন কিছু দিতে চেয়েছি, নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চেয়েছি। আমি মনে করি শেখার কোন শেষ নেই। এখনও যদি কেউ আমাকে বলে যে, এই ধরণের নাচ শিখতে চান? আমি বলবো ‘আই উড লাভ টু’। যেহেতু নাচটাকে ভালবাসি তাই নাচ নিয়ে বড় প্রোডাকশন করতে চাই নিজে। দেখাতে চাই যে, নাচ দিয়েও ভিন্ন কিছু করা যায়। ভিন্ন কিছু করার মধ্য দিয়ে নাচটাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে চাই।

সেই নব্বই দশক থেকে শুরু। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার আপনার। এই সময়ের মধ্যে তিন প্রজন্মের সঙ্গেই কাজ করেছেন আপনি। অনেক পরিচালকদের সঙ্গেই কাজ করেছেন। প্রজন্মের ব্যবধানে কী কী পার্থক্য পেয়েছেন?

মৌ: বিশেষ করে বিজ্ঞাপনে, তখনকার সময়েই অনেক ভালো ভালো পরিচালকদের সাথে কাজ করেছি। এখনকার প্রজন্মের অনেকেই ভালো কাজ করছেন। আমি অনেক ধন্য যে এখনকার বাচ্চারা আমাকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ দেখায়। খুব বেশি যে পার্থক্য, তা বলবো না। যারা ভালো কাজ করে তাদের মধ্যে একটা ‘টাইপ’ই আছে। আমি তো আফজাল আংকেলের সঙ্গে কাজ করেছি তখন খেয়াল করতাম উনি খুব খুঁতখুঁতে একজন মানুষ। যতক্ষণ উনার ভালো না লাগতো ততক্ষণ উনি আমাদের আটকে রাখতেন। এই ধরণেই পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতেই বেশি পছন্দ করি যে আসলে আমার মধ্য থেকে সে কি চাচ্ছে সেটা বের করে নিয়ে আসতে পারে। আমি যেটা জানি বা পারি সেটা তো আমার সীমাবদ্ধতা। সে কি চাচ্ছে সেটা বের করে নিয়ে আসতে পারাটা তার ক্রিয়েটিভিটি। আগের থেকে এখনকার কাজে শুধু টেকনিক্যাল দিকে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে শুধু আর কিছুই না। আগে সেট ফেলে কাজ করা হতো, এখনও হয়। কিন্তু এখন সেটেই এডিট করে ফেলা যায় যেটা আগে করা যেতো না। এখনকার প্রজন্মের পরিচালকদের সাথে কাজ করতে আমি বেশ উপভোগ করি। কিছু মানুষই আছে যারা আগেও ভালো কাজ করতো, এখনও ভালো কাজ করে। তারা আগামীতেও ভালোই করবে। এখনকার বাচ্চারা অনেক লাকি কারণ তারা টেকনিক্যালি এগিয়ে। পরিচালককে বুঝতে হবে যে সে কি চায়। তার জিনিসটা তাকে বের করে নিতে হবে। এখন কেউ যদি বলে মৌ আপাকে কিভাবে বলবো, তাহলে হবে না। তার কাজটাকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আর এ ধরণের পরিচালকদের আমি ভীষণ পছন্দ করি।

আফসানা মিমি, বিপাশা হায়াতসহ আপনার সমসাময়িক অনেকেই পরিচালনায় এসেছেন। আপনার কী এমন কোনো পরিকল্পনা আছে?

মৌ: না। আমি মনে করি না যে নাটক পরিচালনা করার মত আমার কোন যোগ্যতা আছে। প্রথমত অভিনয়-ই আমি শিখিনি। অভিনয় আমি নতুন নতুন করছি। নাটক পরিচালনা করার কথা তো আমি চিন্তা-ই করতে পারি না। হ্যাঁ, পরিচালনা করার কথা চিন্তা করতে পারি তবে সেটা নাচের অনুষ্ঠান; যেটা আমি শিখেছি। খুব শিগগিরই আমি সেটা করবো। ইচ্ছে আছে এমন কিছু করার। নাটক পরিচালনা খুব কঠিন একটা বিষয়। আমার দ্বারা সম্ভব না কখনওই।

আপনি চমৎকার অভিনয় করেন। অভিনয়ে আপনার গ্রহণযোগ্যতা ও দর্শকপ্রিয়তা দুইই র‌য়েছে। কিন্তু ক্যারিয়ারজুড়ে বিজ্ঞাপনে আপনি যতোটা মনযোগী ছিলেন অভিনয়ে ততোটা নন, কেন?

মৌ: অভিনয়ে একেবারেই মনোযোগী না, এটা বলবো না; আমি ভয়ে ভয়ে অভিনয় করি। অভিনয়ে আমি খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। আমাকে চেষ্টা করে ভালো অভিনয় করতে হয়। অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমি খুব বেছে এবং ভিন্নধর্মী কাজ করতে পছন্দ করি। প্রতিদিন কাজ করছি, ওটা আমার কখনওই ভালো লাগে না। সারাজীবনে আমি কখনওই প্রতিদিন ব্যস্ত থাকি নি। সবসময় নাচ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সপ্তাহে ৪/৬ দিন রিহার্সেল বা মাসে দুইটা অনুষ্ঠান করতাম। পুরো মাসজুড়েই অভিনয় ব্যস্ত থাকেন যারা, আমি সেরকম হতে চাইনি। আমার এর বাইরেও পরিবার আছে তাদেরকে সময় দিতে হয়, নিজেকে সময় দিতে হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিয়মিত শুটিং করা কাজ করা, এটা আমার কখনওই পছন্দ না।

এত বছরের ক্যারিয়ারে আপনাকে সিনেমায় দেখা যায় নি কেন?

মৌ: ওই সময়টাতে আমি কখনও সিনেমার কথা চিন্তাই করিনি। এখনকার সময়ে অনেক ভালো ভালো সিনেমা হচ্ছে। এখন যদি আমাকে নিয়ে কেউ ভালো স্ক্রিপ্ট করে তাহলে আমি সিনেমা করবো। যেটা দেখে আমার মনে হবে যে এটা করা উচিত, আমি অবশ্যই সেটা করবো। যেই গল্প দেখে আমার মনে হবে যে এটা মৌয়ের জন্যই লেখা হয়েছে তাহলেই আমি সেটা করবো। আমরা যখন কাজ শুরু করেছিলাম তখন কমার্শিয়াল ছবিতে অনেক ব্যারিকেড ছিল যেটা এখন নেই। তখন ছবিতে কাজ করার কথা চিন্তাও করতে পারিনি। তবে এখন কাজ করবো। আমার সাথে কে কাজ করবে বা কো-আর্টিস্ট কে হবে সে পর্যন্ত আমি কখনওই যাইনি। আমি শুধু দেখেছি গল্প আর পরিচালক। এ দুটো মিলে গেলেই সিনেমা করবো।

উল্লেখ্য, মডেলিং এর বাইরেও মৌ একজন অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী হিসেবে সমাদৃত। নাচ, অভিনয় ও মডেলিংয়ের মধ্যে নাচেই বেশ স্বাচ্ছন্দবোধ করেন তিনি। এখন অভিনয়ে খুব একটা নিয়মিত না হলেও নাচ নিয়ে সবসময় ব্যস্ত ছিলেন তিনি। শোবিজের বাইরে কর্মজীবনে সফল মৌ ব্যক্তিগত জীবনেও সফল একজন নারী। অভিনেতা জাহিদ হাসানের সহধর্মীণী তিনি। তাদের ঘরে রয়েছে মেয়ে পুষ্পিতা এবং ছেলে পূর্ণ।

আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত