ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিধ্বস্ত হয়েছে সেই বিমানটি

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিধ্বস্ত হয়েছে সেই বিমানটি

তেহরানে গত বুধবার সকালে ১৭৬ জন আরোহী নিয়ে ইউক্রেনের যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিলো সেটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। পশ্চিমা নেতাদের দাবি, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাতেই বিধ্বস্ত হয়েছিলো যাত্রীবাহী ওই বোয়িং বিমানটি। এ কারণে এই বিমান দুর্ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত দাবি করেছেন কানাডা ও ব্রিটেনের নেতারা।

তবে তাদের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরানের বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার প্রধান আলী আবেদজাদেহ বলেন, যান্ত্রিক ক্রুটির কারণেই বিধ্বস্ত হয়েছে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি।

বুধবার সকালে তেহরানের ইমাম খোমেনি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলো বিমানটি। কিন্তু উড্ডয়নের অল্প সময় পরই বিমানবন্দরের কাছেই বিধ্বস্ত হয় ইউক্রেন এয়ারলাইন্সের এই বিমানটি। প্রাথমিক খবরে এই দুর্ঘটনায় ১৮০ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছিলো। পরে জানা যায়, বিধ্বস্ত বিমানটিতে যাত্রী ও ক্রুসহ মোট ১৭৬ জন আরোহী ছিলো।

তেহরানে ১৮০ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত

এই বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত ইরানেই সম্পন্ন হবে বলে জোর দিয়ে বলেছে ইরান। এমনকি বিমানটির ব্ল্যাক বক্স যুক্তরাষ্ট্র বা কোনো পশ্চিমা দেশের কাছে হস্তান্তর করতেও অস্বীকার করেছেন ইরানি নেতারা। তবে এই দুর্ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্তে যোগ দেবার জন্য বোয়িংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ইউক্রেন প্রতিনিধিদের সামিল হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে তেহরান।

ব্ল্যাক বক্সের দখল নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্টের নতুন ইত্তেজনা

বুধবার ভোরে ইরাকের দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ওই বিমান বিধ্বস্ত হবার খবর আসে। মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর ধারণা, যাত্রীবাহী বিমানটিকে ইরান হয়তো মার্কিন যুদ্ধ বিমান ভেবে ভুল করে এতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিলো ইরান।

কেননা যে সময়টিতে যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে তার কিছুক্ষণ আগেই মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিলো। তাই আমেরিকার কাছ দিক থেকে সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা করেছিল ইরান।

আমেরিকার গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে সিবিএস টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বলছে, সে সময় স্যাটেলাইটে দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের সংকেত পাওয়া গেছে। এরপরই বিস্ফোরণের আরেকটি সংকেত পাওয়া যায়।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন, বিমানটিতে আসলে কী ঘটেছিল সে বিষয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।

আর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, তিনি বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সূত্র থেকে যে তথ্য পেয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে যাত্রীবাহ বিমানটি মিসাইলের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত-ভাবে হতে পারে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কানাডার মানুষের মনে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে এবং তাদের উত্তর জানা দরকার। তবে বিষয়টি নিয়ে কাউকে দোষারোপের সময় এখনো আসেনি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইউক্রেন এয়ারলাইন্সের ওই বিমানটিতে কানাডার ৬৩ জন নাগরিক ছিল। তাদের ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ হয়ে টরন্টো যাবার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় তারা সবাই নিহত হয়েছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে একমত পোষণ করেছেন।

আমেরিকা এবং ইরাকের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজউইক বলেছে, মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর ইরানের বিমান-বিধ্বংসী ব্যবস্থা তখন হয়তো কার্যকর ছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পেন্টাগন এখনো আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য করেনি।

বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী ওলেক্সি ড্যানিলভ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, বিমানটি বিধ্বস্ত হবার তিনটি কারণ কারণ থাকতে পারে। তার ধারণা, ড্রোন কিংবা অন্য কোন উড়ন্ত বস্তুর সাথে মাঝ আকাশে সংঘর্ষ, কারিগরি ত্রুটির কারণে ইঞ্জিন বিস্ফোরণ বা সন্ত্রাসী হামলার অংশ হিসেবে বিমানের ভেতরে কোনো বিস্ফোরণ ঘটানো।

ইরাকের মার্কিন ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিলো ইরান

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত