ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪০ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘করোনাভাইরাস’ ছড়িয়েছে সাপ থেকে

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:৫৬  
আপডেট :
 ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:৪৯

সাপ থেকে ছড়িয়েছে ‘করোনাভাইরাস’

চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস কোবরা সাপ থেকেই ছড়িয়েছে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা। চীনের লোকজন শীতের শেষদিকে মারাত্মক শ্বাসনালীর সংক্রমণজনিত প্রাদুর্ভাবে আক্রান্ত হয়। এতে নাগরিকরা আতঙ্কিত রয়েছেন। এই আতঙ্ক ক্রমেই চীন ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিস্তার লাভ করছে।

‘করোনাভাইরাস’ প্রথম ছড়িয়েছে দেশটির হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে। ধারণা করা হয় স্থানীয় এক কাঁচা বাজার থেকে এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে।

স্থানীয় সরকারের তথ্য মতে, উহান মহানগরে আনুমানিক ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ বাস করে। বিশ্বের ৪২তম এবং চীনের সপ্তম বৃহত্তম শহর এটি।

পশ্চিম সাংহাই থেকে ৮ শ কিলোমিটার দূরে ইয়াংজে নদীর তীরে অবস্থিত উহান শহর, যার আয়তন প্রায় ৮ হাজার ৪৯৪ বর্গ কিলোমিটার।

বুধবার পর্যন্ত চীনে ৫৫৫ জন আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এদের মাঝে ৪৪৪ জন রোগী উহান শহরের, ২৬ জন গুয়াংডং প্রদেশের, ১৪ জন বেইজিং শহরের এবং ৯ জন সাংহাই শহরের বাসিন্দা।

করোনাভাইরাস কী?

করোনাভাইরাস নামটি এসেছে এর আকৃতির ওপর ভিত্তি করে। ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে ক্রাউন বা মুকুটের মতো দেখতে হওয়ায় এর নাম হয়েছে করোনাভাইরাস। এই ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখিতে প্রাথমিক অবস্থায় শ্বাসনালীর উপরের দিকে ও পরিপাকতন্ত্রের নালিতে সংক্রমণ ঘটায়।

যদিও অধিকাংশ করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে হালকা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ প্রকাশ পায় কিন্তু সার্স ও মার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে মানুষের শ্বাসনালীতে সংক্রমণ প্রকাশ পায়। এছাড়াও নানা ধরনের জটিলতাও দেখা দেয়।

বর্তমানে নতুন করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিরা যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তারা সকলেই সিফুডের পাইকারি ক্রেতা অথবা বিক্রেতা ছিলেন। সেখানে মুরগি, গাধা, ভেড়া, শুকর, উট, শেয়াল, ইঁদুর, সজারু ইত্যাদি বিক্রি হতো। কিন্তু ওই সকল প্রাণীতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।

করোনাভাইরাস পাওয়া যায় এমন সকল প্রাণী নিয়ে গবেষকরা প্রোটিন কোড বিশ্লেষণ করেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে গবেষকরা সাপের ক্ষেত্রে নতুন করোনাভাইরাসের প্রোটিন কোডের মিল খুঁজে পান।

চীনে প্রচুর ডোরাকাটা ক্রেইট সাপ রয়েছে। সাপটির বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus multicinctus। সাপটিকে তাইওয়ানিজ ক্রেইট এবং চাইনিজ ক্রেইটও বলা হয়। ইলাপিড পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এই সাপ খুবই বিষাক্ত, যা চীনের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রচুর পাওয়া যায়।

সাপ মূলত বাদুড় শিকার করে। এই সাপ আবার উহানের স্থানীয় সিফুড মার্কেটে বিক্রি হয়। সেখান থেকেই নতুন করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাদুড় থেকে সাপের মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়েছে বলা হলেও শীতল ও উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রাণীতে এই ভাইরাস কীভাবে বসবাস করছে তা এখনো রহস্যই রয়ে গেছে। তবে বন্য জীবজন্তু শিকার করে খাওয়া যে উচিত নয় এই নতুন করোনাভাইরাস আবারও বিশ্ববাসী তথা চীনের অধিবাসীদের মনে করিয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত