ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

হামলা ভাঙচুরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ

  ময়ুখ বসু, কলকাতা

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২১, ১৮:১৪

হামলা ভাঙচুরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ
ছবি সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন। তারা বিজেপি ও আইএসএফ সমর্থক। এছাড়া বিরোধী বাম ও বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা এবং তাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোসহ বিভিন্ন ঘটনার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা তাদের দলীয় কার্যালয়গুলোতেও ভাঙচুর চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাম-বিজেপি। এতে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ।

নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরপরই কলকাতা সংলগ্ন কাঁকুড়গাছির শীতলাতলা এলাকায় এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মৃত বিজেপি কর্মীর নাম অভিজিত সরকার। তার পরিবারের দাবি, পুলিশের চোখের সামনেই পিটিয়ে মারা হয় অভিজিতকে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত অভিজিত সরকার বিজেপির ট্রেড ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। তৃণমূলের দুস্কৃতীতা অভিজিতকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন অভিজিতের ভাই বিশ্বজিত সরকার।

এদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সোনারপুরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছেন এক বিজেপি কর্মী হারান অধিকারী। সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার কেন্দ্রের অন্তর্গত প্রতাপনগর অঞ্চলের মেটিয়রিতে ঘটনাটি ঘটেছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন টুসি অধিকারী, রেখা অধিকারী, রাজু অধিকারী, পরান অধিকারী এবং বসু অধীকারীরা।

রোববার দুপুরে ফল ঘোষণার পর থেকেই ওই এলাকায় বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে বিজেপির পতাকা ছিঁড়ে দেয়া হচ্ছিলো। তার প্রতিবাদ করতে গেলে পাড়ার এক নারীকে মারধর করা হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে পাড়ার যুবকরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। এতে গুরুতর জখম হন হারান অধিকারী। পরে তাকে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয় ভোটের ফল ঘোষণার পরেই কলকাতার বেলাঘাটা এলাকায় স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী কাশীনাথ বিশ্বাসের বাড়িতে অগুন লাগিয়ে দেয়া হয় এবং ভাঙচুর চালানো হয়। পরে দমকল বাহিনী এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।

কলকাতা সংলগ্ন সুকান্তনগর এলাকাতেও ভোটের ফল পরবর্তিতে বিজেপি নেতাদের বাড়িতে হামলা ও বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতার বাড়ি টার্গেট করে বোমাও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন। কলকাতার অভিজাত এলাকা বিধাননগরেও বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হন বলে জানা যায়। যাদবপুর এলাকায় বাম নেতাদের বাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাদবপুরের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় বাম নেতাদের বাড়ি লক্ষ্য করে চলে বোমাবাজি। পুলিশকে জানালেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

এদিকে, উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দেগঙ্গা বিধানসভার কদম্বগাছীতে এক আইএসএফ কর্মী খুন হন বলে জানা গিয়েছে। মৃতের নাম হাসানুজ্জামান। জানা গেছে, সোমবার সকালে মাঠে কাজ করার সময় তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতরা হাসানুজ্জামানকে মাঠ থেকে তাড়া করে বোমা মেরে খুন করে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

এছাড়াও ভোটের ফলাফল পরবর্তী প্রতিহিংসা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ঘোলা থানা এলাকায় বিশ্বজিত ধর নামে এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে নদীয়া জেলার রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী বঙ্কিম ঘোষের বাড়িতেও ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের নানুর, আসানসোল, কান্দি হরিনঘাটা, দুর্গাপুর, মিনাখা, পটাশপুর, উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা ও মারধোর করার ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা গেছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত