ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

পুতিনের বিজয়: পশ্চিমাদের নিন্দা, অভিনন্দন জানালেন কারা?

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৬:১৪

পুতিনের বিজয়: পশ্চিমাদের নিন্দা, অভিনন্দন জানালেন কারা?
ছবি: সংগৃহীত

ফলাফল অবধারিত ভাবেই জানাই ছিল শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আবারো রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন।এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮৭ শতাংশ ভোট পড়েছে তার পক্ষে। তবে পুতিনের এমন নিরঙ্কুশ জয়ে নিন্দার ঝড় তুলেছেন পশ্চিমা নেতারা। এই জয়কে তারা পক্ষপাতমূলক এবং অগণতান্ত্রিক বলে সমালোচনা করেছেন। তবে এক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একা পড়ে যাননি রুশ এই নেতা। আরেক দফায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাকে স্বাগত জানিয়েছেন চীন, ভারত ও উত্তর কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা।

সোমবার (১৮ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুতিনের জয়ের পর ইউরোপীয় নেতাদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বাড়তে থাকা ভূরাজনৈতিক ফাটলকে আরও স্পষ্ট করেছে। শীতল যুদ্ধ পরবর্তী পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে সবচেয়ে সংকটের মধ্যে ফেলেছে এই যুদ্ধ।

সোমবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পুতিনের সমালোচক আলেক্সি নাভালনির ওপর নির্যাতন এবং তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে একমত হন। এর আগে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেন তারা।

বৈঠকের শুরুতে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ‘রাশিয়ার নির্বাচন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হয়েছে।’

ইউক্রেনে সেনা অভিযানকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে উল্লেখ করে থাকে রাশিয়া। ঠিক এই বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে পুতিনকে খোঁচা মেরে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফান সেজর্ন বলেন, প্যারিস এই ‘বিশেষ নির্বাচনী অভিযান’ নজরে রেখেছে।

রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে নিয়ে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘একটি অবাধ, বহুত্ববাদী ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের শর্ত পূরণ করা হয়নি।’

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ‘নির্বাচনের এই ফলাফল রাশিয়ার ‘দমনপীড়নের গভীরতাকেই’ স্পষ্ট করেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দিয়ে, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে বিজয়ীর মুকুট পরার মাঝে গণতন্ত্র নেই।’

এবার রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের বাইরে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোর জনগণও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্যরা এরও নিয়ে নিন্দা জানিয়েছে।

তবে রাশিয়া পশ্চিমাদের এই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির দাবি, তিন দিনের এই নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এই ভোট নিঃসন্দেহে পুতিনের পক্ষে দেশটির জনগণের সমর্থনকে চিহ্নিত করেছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই নির্বাচনকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাসীর কাছে এটি খুবই পরিষ্কার যে ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতার লোভে অসুস্থ। তিনি ক্ষমতার লোভে সবকিছুই করতে পারেন।’

রোববার হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র জানান, রাশিয়ার এই নির্বাচন ‘স্পষ্টতই অবাধ বা সুষ্ঠু নয়’। তবে এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি।

পুতিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যারা

রাশিয়ার নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের মধ্যে নিন্দার চর্চা নতুন নয়। তবে বিপরীত চর্চা দেখা গেছে বিশ্বের অন্যান্য অংশে। পুতিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন আক্রমণ করার ঠিক আগে, ২০২২ সালে রাশিয়ার সঙ্গে করা ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখবে চীন।

সিনহুয়া নিউজের প্রতিবেদন বলছে, শি জিনপিং শুভেচ্ছা বার্তায় পুতিনকে বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আপনার নেতৃত্বে রাশিয়া বড় সাফল্য অর্জন করবে।’

অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ‘কার্যকরী এবং বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ আরও শক্তিশালী করতে উন্মুখ ভারত।

বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করার লক্ষ্যে গঠিত উদীয়মান অর্থনীতির জোট ব্রিকস। ভারত, চীন এবং রাশিয়া এই জোটের সদস্য।

এছাড়াও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি পুতিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ সময় রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণের ওপর আরও জোর দিয়েছেন তারা। কিম এবং রাইসির বিরুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগ এনেছিল পশ্চিমারা।

উল্লেখ্য এই জয়ের মধ্য দিয়ে ভ্লাদিমির পুতিন গত দুই শতাব্দীর মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত