ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছেলেকে পাইলট বানাতে গিয়ে লাশ হলেন মা

ছেলেকে পাইলট বানাতে গিয়ে লাশ হলেন মা

সন্তানকে নিয়ে সব বাবা-মায়ের স্বপ্ন থাকে এবং তারা সেই স্বপ্ন পূরণে আপ্রাণ চেষ্টাও করে থাকেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা যেন সাধ্যের বাইরে না চলে যায়। তাহলে কিন্তু তপনবাবু এবং তার স্ত্রী অরুণা দেবীর মত ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। ঘটনাটা তাহলে খুলেই বলি।

কলকাতায় নয়াবাদের প্রফুল্ল অ্যাপার্টমেন্টে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন ৬৫ বছরের তপন চট্টোপাধ্যায় এবং তার স্ত্রী অরুণা দেবী (৫৫)। তাদের একমাত্র ছেলে অর্পণ চট্টোপাধ্যায় (২৩) কমার্শিয়াল পাইলটের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সেই প্রশিক্ষণের জন্য তিনি দিল্লিতে থাকতেন।

ছেলেকে পাইলট বানাতে লাখ লাখ টাকা ধার করেছিলেন। সেই দেনা শোধ করতে পারছিলেন না। এ নিয়ে মানসিক যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পেতে গত বুধবার সন্ধ্যায় আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন এই দম্পতি। এতে স্বামী বেঁচে গেলেও মারা গেছেন স্ত্রী।

প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, ওই দম্পতি ছেলেকে পাইলট বানানোর জন্য প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তপনবাবু ফ্ল্যাট কেনাবেচার ব্যবসা করতেন।

বুধবার বিকেলে অর্পণ দিল্লি থেকে আসেন। তিনি বার বার কলিং বেল বাজানোর পরেও দরজা খোলেননি তার বাবা-মা। তিনি বার বার ফোনও করেন। কিন্তু ফোনও কেউ ধরেননি। তখন প্রতিবেশীদের খবর দেন অর্পণ। তারাও বার বার ধাক্কা দিলেও ভেতর থেকে কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যায় না। তার পরেই খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

পরে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। তারা দেখে, বেডরুমে ওড়নায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন অরুণা দেবী। আর ডাইনিং রুমের মেঝেতে পড়ে আছে তপনের সংজ্ঞাহীন দেহ।

বুধবার রাতে ওই দম্পতিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। তখন সেখানকার কর্তৃব্যরত চিকিৎসকরা অরুণা দেবীকে মৃত ঘোষণা করেন। এখনও সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তপনবাবু।

পুলিশ ওই ফ্ল্যাট থেকে একটি হাতে লেখা চিঠিও উদ্ধার করেছে। দম্পতির ছেলে লেখাটি অরুণার বলে শনাক্ত করেন। চিঠিতে অনেক টাকা দেনার কথা উল্লেখ রয়েছে। কার্যত তারা কপর্দকশূন্য হয়ে গিয়েছিলেন।

ওই সুইসাইট নোট দেখে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অর্থনৈতিক কারণেই তারা দীর্ঘ দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। সেই অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন ওই দম্পতি।

অরুণা দেবী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এবং তপনবাবু বিষ খেয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।

দুজনের মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণটা ঠিক কী, তা জানতে তদন্তকারীরা অর্পণের সঙ্গে কথা বলছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত