ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

মুলার প্রতিবেদন প্রকাশ

মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া-ট্রাম্প আঁতাতের প্রমাণ মেলেনি

মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া-ট্রাম্প আঁতাতের প্রমাণ মেলেনি

মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত বহুল প্রতীক্ষিত মুলার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়েছিল মস্কো। তবে নির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে কোনো আঁতাত করেছিলেন, তদন্তে এমন প্রমাণ মেলেনি।

তাই ট্রাম্পের আইজীবীরা ৪৪৮ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনকে ‘পরিপূর্ণ বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

কিন্তু প্রতিবেদনটি প্রকাশের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন দেশের শীর্ষ আইনজীবী উইলিয়াম বার।

তবে উর্ধ্বতন ডেমোক্রেট নেতারা ওই প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ আগেই প্রকাশ করায় অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারকে দুষছেন। তাদের অভিযোগ, এর মাধ্যমে তিনি তাদেরকে ‘বিভ্রান্ত’ এবং ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করেছেন।

মুলারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী সম্প্রচার অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো আমেরিকান রুশ সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে তাকে হিলারি ক্লিন্টনের বিপক্ষে জয়লাভে সাহায্য করেছিলেন, এমন কোনো জোরালো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আবার ট্রাম্প একেবারেই নির্দোষ এরকম কোন তথ্যও নেই তার হাতে। তবে মুলার এটি জানতে পেরেছেন, ট্রাম্পের নির্বাচনী সহযোগীরা জানতেন রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতার কারণে ট্রাম্প উপকৃত হবেন। তবে ট্রাম্প বিষয়টি জানতেন কিনা সে বিষয়ে মুলার নিশ্চিত নন।

এতে আরো বলা হয়েছে, মুলার জানতেন, প্রেসিডেন্টকে সমন পাঠানোর ক্ষমতা তার আছে। তবে তিনি এটি করেননি কারণ এতে তদন্তে দেরি হবে। প্রসিকিউটররাও মনে করেছেন তাদের হাতে যথেষ্ট নথি রয়েছে। এই প্রতিবেদনটি কংগ্রেস এবং সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনের সময় প্রতিবেদনের সংক্ষেপিত কপি হাতে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার বলেন, ‘মুলার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের কোন আঁতাত ছিলো না। স্পেশাল কাউন্সেল নিশ্চিত করেছেন, ওই নির্বাচনে রুশ সরকার অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করলেও এর সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির বা অন্য কোনো মার্কিনী আঁতাত করেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার মুলার প্রতিবেদন নিয়ে কোন অভিযোগ নেই।’

এই সংবাদ সম্মেলনের পর ট্রাম্প টুইটে গেম অব থ্রোনসের আদলে একটি ছবি পোস্ট করে বলেন, ‘খেলা শেষ’। এর আগে এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি প্রেসিডেন্টকে হয়রানি।’

মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় ৩৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিলো, এদের কয়েকজন ট্রাম্পের নির্বচনী প্রচারণা ও প্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই গঠন করা হয়েছিলো মুলার তদন্ত কমিশন।

একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই তদন্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিএবং মুলারকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিলো বলে যে অভিযোগ উঠেছে এ প্রতিবেদনে সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

ওই প্রতিবেদনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এফফেবিআই’র পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্ত করাসহ তদন্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ১০টি অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করা যায় কিনা সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনে রুশ সংযোগের বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে মস্কো প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে আশঙ্কা করছিলো সে দেশের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। সংস্থাটির পরিচালকের পদ থেকে জেমস কোমিকে বরখাস্তের পর এই তদন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দিকে মোড় নেয়। ২০১৭ সালের মে মাসে এ সংক্রান্ত তদন্তের দায়িত্ব পান সাবেক এফবিআই পরিচালক রবার্ট মুলার। মার্চে দেশটির আইনমন্ত্রীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তিনি।

দীর্ঘ ২৩ মাসের তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার প্রায় সাড়ে চারশ পৃষ্ঠার মুলার-প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

রবার্ট মুলার

সূত্র: বিবিসি/ রয়টার্স

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত