ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্যাথা পেয়ে ওষুধের দোকানে হনুমান

  কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৫৪  
আপডেট :
 ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৩

ব্যাথা পেয়ে ওষুধের দোকানে হনুমান

আঘাত বা ব্যাথা পেলে আমরা ডাক্তারখানা বা ওষুধের দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে খাই। আমরা সবাই এমনটাই করি। মানুষের পাশাপাশি এবার হনুমানও তার বুদ্ধিমত্তায় বুঝিয়ে দিলো চোট পেলে যেতে হয় ওষুধের দোকানে। শুনতে আজব লাগলেও এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলায়।

গত শনিবার বীরভূমের মল্লারপুর স্টেশন চত্বর হয়ে উঠেছিলো রীতিমতো কুস্তির আখড়া। এদিন সকালেই স্টেশন ঢোকার মুখে দুই পূর্ণ বয়স্ক হনুমানের লড়াই দেখতে ভিড় জমে গিয়েছিলো সাধারন মানুষের। কে কাকে লড়াই করে মাটিতে ফেলতে পারে চলছিলো তার প্রতিযোগিতা। সেই মল্লযুদ্ধে জখম হয় দুটি হনুমানই। এরপর মানুষের ভিড় বাড়তেই লড়াইয়ের ময়দান থেকে রণে ভঙ্গ দেয় একটি হনুমান। অন্যটি বসে পড়ে চুপচাপ। শরীরের বেশ কয়েকজায়গায় আঘাত লেগে কেটে ছিঁড়ে যায় তার। এরপরেই আহত হনুমানটি আজব কাণ্ড ঘটায়।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আচমকা আহত হনুমানটি একটি যাত্রী বোঝাই চলন্ত অটো রিকশায় উঠে পড়ে। বসেই করুণ চোখে টোটোয় থাকা যাত্রীদের গায়ে হাত রেখে সে বোঝানোর চেষ্টা করে সে কাউকে আক্রমণ করবে না। এরপর এটি মল্লারপুর স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসের কাছে একটি ওষুধের দোকানের সামনে আসতেই ঝুপ করে অটো থেকে নেমে পড়ে সে। দোকানের সামনে একটি বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করতে থাকে সে। ওষুধের দোকানের ভীড় একটু কমতেই লাফ মেরে দোকানের কাউন্টারের উপর উঠে বসে কোমরের নীচে ও শরীরের অন্যান্যা অংশে ক্ষতস্থানগুলি দেখাত থাকে। ভাবভঙ্গিতেই সে বোঝাতে থাকে তার চিকিৎসার প্রয়োজন।

সেই সময় ওই ওষুধের দোকানে ওষুধ নিতে এসেছিলেন স্থানীয় যুবক আনাজুল। তিনি হনুমানের ওই কাণ্ড দেখে দোকানদারকে ওষুধ দিতে অনুরোধ করেন। এরপর ওই যুবকের সহায়তায় হনুমানের শরীরের ক্ষতস্থানগুলিতে মলম লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেন দোকানদার। কিন্ত এখানেই শেষ নয়। এরপরেও হনুমানটি বারবার ক্ষতস্থানগুলি দেখাতে থাকে। যার অর্থ হচ্ছে, তার খুব ব্যাথা হচ্ছে এবং তাকে ওষুধ দিতে হবে। দোকানদার তখন একটি কাপে পানি নিয়ে তার মধ্যে ব্যাথা কমানোর ওষুধ গুলে হনুমানটিকে খাইয়ে দেন। সঙ্গে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি কলা। কলা খেয়ে বেশ কিছুক্ষণ সেখানেই বিশ্রাম নেয় হনুমাপনটি। এরপর আনাজুলের কাঁধে হাত রেখে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভঙ্গিমায় অঙ্গভঙ্গি করে দোকানের কাউন্টার থেকে রাস্তায় নেমে আসে। এরপর ফের একটি স্টেশনগামী চলন্ত অটোতে উঠে পড়ে সে।

এই ঘটনায় স্থানীয় বণ্যপ্রাণী গবেষক শান্তিনিকেতনের বসিন্দা ঈশানচন্দ্র মিশ্র বলেন, যে সমস্ত প্রাণী মানুষের কাছাকাছি থাকে তাদের মধ্যে কেউ কেউ মানুষের আচরণ অনুসরণ করে। বিশেষ করে হনুমান, বাঁদর বা কুকুর জাতীয় প্রাণীদের এই ধরনের অনুসরণ করার ক্ষমতা ও প্রবণতা অনেক বেশি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত