ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

দ্বিতীয় দফায় মোদির সামনে ৫ চ্যালেঞ্জ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৩ মে ২০১৯, ১৫:২৫

দ্বিতীয় দফায় মোদির সামনে ৫ চ্যালেঞ্জ

হিন্দুত্ববাদ আর পুলওয়ামা ইস্যুর ওপর ভর করে দ্বিতীয় দফায় দিল্লির দখল নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। প্রাথমিক ভোট গণনাতে দেখা যাচ্ছে, বিরোধী জোটকে দুমড়েমুচড়ে দিয়ে ৩৩০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে আছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট। এই জয় উদযাপনে ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি।

কিন্তু এতো উৎসব-উদযাপনের মধ্যেও মোদির সামনে চোখ রাঙাচ্ছে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ। এ কারণেই হয়তো চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই দ্বিতীয় দফায় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে বসে গেছেন তিনি।

দ্বিতীয় দফায় মোদিকে প্রধান যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে সেগুলো হলো-

বেকারত্ব: ভারতে বেকারত্বের হার রেকর্ড ছুঁয়েছে। পরিসংখ্যান কমিশনের (এনএসসি) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটিতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেকারত্বের হার ছিল গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোদি। অথচ তার আমলেই বেকারত্ব রেকর্ড ছোঁয়ায় তরুণ সমাজে ক্ষোভ রয়েছে। দেশের ৬৫ শতাংশ নাগরিকের বয়সই ৩৫ এর নিচে। দ্বিতীয় দফায় বেকারত্ব দূর করা মোদির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কৃষকের ক্ষোভ: ২০১৪ সালের নির্বাচনে দরিদ্র শ্রেণির ভোটের ওপর ভর করেই বড় জয় পেয়েছিলেন মোদি। এবারেও নিশ্চয়ই এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। কিন্তু শাসনামলেই আলু-পেঁয়াজের বাজারে ধস নামে। গত বছর কৃষকরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ এক রুপিরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। এতে ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন লাখো কৃষক। দ্বিতীয়দফায় কৃষকদের এই ক্ষোভ দূর করতে না পারলে ২০২৪ এর নির্বাচনে মোদির জন্য বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: যেকোনো সরকারপ্রধানের জন্যই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখাটা এক বড় চ্যালেঞ্জ। মোদি প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে শক্তিশালী প্রায় সব দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক জোরদার করেছিলেন। চীনের সঙ্গেও বেশ কয়েকটি ইস্যুতে সমস্যার মিটমাট করেছেন তিনি। কিন্তু এই ধারাটা অব্যাহত রাখাই তার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধসহ অন্যন্য সমস্যাও তাকে সমাধান করতে হবে। তাছাড়া পুলওয়ামা ইস্যু নিয়ে মাস দুয়েক আগেই আরেক প্রতিবেশি পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছিল। এখনও দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে আছে। এই সমস্যা কীভাবে মেটানো যায় সেটাও দেখতে হবে মোদিকে।

কাশ্মীর: ভারতের রাজনীতিতে কাশ্মীর সবসময়ই এক বড় ইস্যু। বলা হয়, দশকের পর দশক ধরে কাশ্মীরে হানাহানির একটাই কারণ তা হলো, ক্ষমতাসীন দলগুলো কাশ্মীরকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জয় পেতে চায়। কাশ্মীরে কোনো সন্ত্রাসী হামলা হলে পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতি থেকেই ফায়দা তুলতে চায় দলগুলো। এবারই যেমন পুলওয়ামা হামলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের ওপর একের পর তোপ দেগেছেন মোদি। এটা নিশ্চিতভাবেই তাকে বড় জয় এনে দিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরপরই যে কাশ্মীর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সন্ত্রাসবাদের প্রবেশ পথ হয়ে দাঁড়ায় এটা ভারতের ক্ষমতাসীনদের জন্য এক বড় মাথা ব্যাথারও কারণ। মোদি এবারের মেয়াদে কাশ্মিরকে স্থিতিশীল করতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

বিভেদ: মোদি ক্ষমতায় আসার পর ভারতজুড়ে ধর্মীয় ও দলীয় বিভেদ যেকোনো সময়ের থেকে অনেক বেড়ে গেছে। আর এবার নির্বাচনকে ঘিরে গোটা ভারত বলতে গেলে দুভাগ হয়ে গেছে। রাজনীতিকরা মোদির বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন। সারাদেশে এই হিংসাত্মক রাজনীতি ও বিভেদের কারণে অনেক মানুষ মারাও গেছে। দেশকে স্থিতিশীল রাখতে হলে এই বিভেদ মেটানো মোদির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত