ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

যেভাবে তৈরি করবেন স্বাস্থ্যসম্মত আখের গুড়

  কৃষিবিদ ড. আবুল কালাম আল আজাদ

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২০, ২০:২৪  
আপডেট :
 ২৫ নভেম্বর ২০২০, ২১:২২

যেভাবে তৈরি করবেন স্বাস্থ্যসম্মত আখের গুড়
ছবি: আখের গুড় (সংগৃহীত)

সাধারণত নভেম্বরের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাসে আখের গুড় তৈরির কাজ শুরু হয়। আখক্ষেত থেকে আখ সংগ্রহ করে মাড়াইযন্ত্রের কাছে স্তূপ দিয়ে রাখা হয়। আমাদের দেশে আখ মাড়াইয়ের জন্য ডিজেল চালিত ইঞ্জিন, বিদ্যুৎ শক্তি চালিত ও পশুচালিত দেশি মাড়াইকল ব্যবহার করা হয়। তবে ডিজেল ইঞ্জিন চালিত মাড়াইকল বেশি ব্যবহার করা হয়। এই মাড়াইকলের রস আহরণ ক্ষমতা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ।

তাই গুড় উৎপাদন এলাকাগুলোতে ডিজেল ইঞ্জিন চালিত মাড়াইকল বেশি ব্যবহার করা হয়। সংগৃহীত আখ থেকে ডিজেল ইঞ্জিনের সাহায্যে রস আহরণ করা হয় এবং এই রস কড়াইতে পূর্ণ করা হয়। রস কড়াইতে রাখার পূর্বে কড়াইটি চুলাতে রাখা হয়। এই ধরনের চুলায় ব্যবহৃত কড়াইতে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ লিটার রস ধরে, যা থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি গুড় তৈরি করা হয়।

রস জাল দেয়ার আগে সংগৃহীত রস কিছু সময় অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০ মিনিট স্থির অবস্থায় কোনো পাত্রে রাখতে হয়। এতে রসের বিদ্যমান হালকা ও ভারী পদার্থসমূহ উপরে-নিচে থেঁতিয়ে জমা হয়। তাই রসের উপরে জমাকৃত গাদ সরিয়ে ফেলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে কড়াইতে ঢেলে দিতে হয়। তারপর কড়াইয়ের রস জাল দেয়া শুরু করতে হয়।

রস জাল দেয়ার সময় প্রথম অবস্থায় প্রচুর পরিমাণ গাদ ভেসে ওঠে, যা সাথে সাথে সরিয়ে ফেলতে হয়। গাদ পরিষ্কার করার জন্য রস পরিষ্কারক হিসেবে উদ্ভিজ্জ নির্জাস যেমন, বন ঢেঁড়স, উলট কম্বল, শিমুলের চাল ও ঘৃতকুমারী ইত্যাদির আঠালো নির্জাস ব্যবহার করা হয়। ৫০০ গ্রাম বন ঢেঁড়স বা উলট কম্বলের কাণ্ড থেঁতলে ২-৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে আখের রসের মধ্যে দিলে রসের ময়লা জমাটবদ্ধ হয়।

এই ময়লা খুব সহজে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে ফেলা যায়। রস ঘনীভূত হওয়ার সাথে সাথে কড়াইয়ের চারদিকে সৃষ্ট গাদ লাগাতার সরিয়ে ফেলতে হয়। রস ঘনীভূত হওয়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। এমতাবস্থায় হাতলের সাহায্যে কড়াইয়ের ফুটন্ত ঘনীভূত রস লাগাতার নাড়তে হবে এবং চুলার উত্তাপ একেবারে কমিয়ে ফেলতে হবে।

ফুটন্ত ঘনীভূত রস চুলা হতে কখন নামাতে হবে তার জন্য সামান্য ঘনীভূত রস যদি ১ লিটার ঠাণ্ডা পানির মধ্যে ছেড়ে দিলে যদি তা সঙ্গে সঙ্গে পানিতে জমে যায় তাহলে বুঝতে হবে চুলা হতে গুড় নামানোর সময় হয়েছে। অতঃপর গুড় নামানোর পর ঠাণ্ডা করা হয় এবং ঠাণ্ডা গুড় মাটির কলস বা মাটির পাত্র এবং বিভিন্ন টিনের ছাঁচের মধ্যে রেখে সংরক্ষণ করা হয় এবং বাজারজাতকরণের উপযোগী হয়।

বাজারে উজ্জ্বল গুড়ের চাহিদা ও বিক্রয়মূল্য বেশি পাওয়ার জন্য গুড় প্রস্তুতকারীগণ রাসায়নিক পরিশোধক যেমন, হাইড্রোজ (সোডিয়াম থায়োনেট) ব্যবহার করে যাহা মোটেও কাম্য নহে। কারণ এতে শরীরে নানা ধরনের রোগের দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত