ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

বুড়িয়ে যাওয়া মানেই ফুরিয়ে যাওয়া নয়

  মাহমুদা আকতার

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৪৩

বুড়িয়ে যাওয়া মানেই ফুরিয়ে যাওয়া নয়

অনেকের দৃষ্টিতে বয়স্ক মানেই ঝামেলা। এমনকি বয়স্ক ব্যক্তিরাও নিজেদের সমাজ সংসারে অপাংক্তেয় মনে করেন। এইসব নেতিবাচক ধারণা মোটেও কাজের কথা নয়। বুড়িয়ে যাওয়টা তো মানব জীবনের এক অমোঘ পরিণতি, একে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নাই। বয়স নিয়ে হতাশ হওয়ারও কিছু নেই। তাই এই সময়টাকে যতটা সম্ভব এনজয় করুন। আর যৌবনকালেই এ বয়সের জন্য পর্যাপ্ত সঞ্চয় করুন। যাতে পড়ন্তবেলায় আপনাকে কারো ওপর নির্ভর করতে না হয়, না করতে হয় আফসোস। সে আপনি পরিবার বা ওল্ডহোম যেখানেই থাকুন না কেন।

বৃদ্ধকালে ভালো থাকার কিছু টিপস

১. প্রতিটি মানুষেরই পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করে রাখা উচিত যাতে বৃদ্ধ অবস্থায় কারো ওপর নির্ভরশীল হতে না। ওই অর্থ দিয়ে তিনি নিজের চিকিৎসাসহ যে কোনো প্রয়োজনীয় কাজে খরচ করতে পারবেন। ইচ্ছেমতো কাউকে গিফট দিতেও পারবেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ট্যাকে টাকা থাকলে কাজের জন্য তার লোকের অভাব হবে না। ছেলেমেয়েরা না দেখলেও পছন্দমতো কাউকে মাইনে দিয়ে কাছে রাখতে পারবেন। সুবিধা মনে করলে মানসম্মত কোনো বৃদ্ধাশ্রমেও যেতে পারবেন।

২. মৃত্যুর আগে নিজের সম্পদ ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাগ না করাই ভালো। তবে চাইলে মৌখিকভাবে বণ্টন করতে পারেন। এতে ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোন্দল হওয়ার সম্ভবানা কম হবে।

৩. অর্থ সঞ্চয় করা ভালো। তাই বলে অর্থের প্রতি মাত্রারিক্ত মায়া দেখানো ঠিক নয়। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করতে হবে। শারীরিক শক্তি থাকতে দেশ বিদেশ ঘুরে দেখতে পারেন। পাশাপাশি হজ করুন এবং গরীব দুখীদের দান করুন। এতে মানসিক প্রশান্তি পাবেন।

৪. সন্তানদের জন্য অঢেল সম্পদ রেখে যাওয়া কোনো ভালো কাজ নয়। বরং তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করুন। তাদের জন্য ভালো খাবার, পোশাক ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। এতে করে সন্তানরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে এবং বৃদ্ধকালে তাদেরকে নিজের পাশে পাবেন।

৫. সব সন্তানকে সমান দৃষ্টিতে দেখুন। কারণ একজনের প্রতি দুর্বলতার প্রকাশে অন্য সন্তানরা আপনার প্রতি বিরক্ত হতে পারে।

৬ আশপাশের মানুষজন বিশেষ করে ছেলেমেয়ে, ছেলের বউ, জামাই, নাতি নাতনিদের প্রচুর গিফট দিন।

৭ অনেকে মনে করেন বয়স হলে মানুষ অনেকটা খিটমিটে মেজাজের হয়ে যায়। লোকজনের সঙ্গে অনর্থক খারাপ ব্যবহার করেন। কোনো কারণেই এগুলো করা যাবে না। আত্মীয়-স্বজনসহ সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার প্রতি তাদের সফট কর্নার তৈরি হবে। তাছাড়া একজন মিষ্টিভাষী ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করেন।

৮. যত লোকজনই থাকুক নিজের বিষয়ে নিজেকেই সচেতন থাকতে হবে। তাই অসুস্থতা এড়ানোর জন্য নিয়মিত খাবার ও ওষুধ খেতে হবে। ডায়াবেটিকস থাকলে নিয়মিত সুগার পরীক্ষা করতে হবে। ডাক্তরের কাছেও যেতে হবে। বিকেলে বাড়ির আশপাশে হাঁটতে পারেন।

৯. নিয়মিত প্রার্থনা করুন। এটি আপনাকে মানসিক ও শারিকভাবে শক্তি জোগাবে। এছাড়া আশপাশের বয়স্কদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারেন। এছাড়া শিশুদের সঙ্গেও কিছু ভালো বন্ধত্ব হয় বুড়োদের।

১০. বুড়িয়ে গেছেন বলেই আপনি ফুরিয়ে গেছেন এমন তো নয়। তাই নিজেকে ভালোবাসুন। মুভি দেখুন, বই পড়ুন। চাইলে কোনো সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে জড়িত করতে পারেন। টুকটাক লেখার অভ্যাস থাকলে সেটার চর্চা করতে পারেন। এতে করে নিজের জীবনের মধুন স্মৃতিগুলো লিখে ফেলতে পারবেন। চাইলে এসব নিয়ে বই-ই করতে পারেন। আর এসব কিছুর মাধ্যমেই নিজেকে নিজের কাছেই দামি করে তোলা যায়। আবারও বলছি বুড়িয়ে যাওয়া মানেই ফুরিয়ে যাওয়া নয়।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত