এমরান হাসানের তিনটি কবিতা
শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:১৩
।। শস্যপুরাণ ।।
থই থই মোমের আগুনে যাই
ভেজা আবছায়া’র গল্পে নেমে যাওয়া শহরকে মনে হয়
নিরঙ্কুশ মায়ার মতন নির্লোভ একচিলতে ফুলেল অনল।
বহুদিন না পাওয়া প্রিয় স্পর্শের বিহ্বল আকুতি জেনেছিলো
অপরাজিত মানুষের পাঠশালায় শেখানো হয় না
না বোঝা সময়ের শেষপর্ব পাঠ।
এ শহরে কতোকাল বৃষ্টি নামে না,
অথচ বৃষ্টিতে, তন্দ্রায় কাঁদতে কাঁদতে ঘুম-ঘোরের শহরে
মধ্যরাতে পৌঁছেছিলো ভাগাড়ের শেষ শকুন
পথ-পথের ছায়াঘুম জুড়ে
আদি জলভূমিতে মৃত্যুকাল দেখি কার?
ঘটে গেছে চেতনা-বোধের অন্তোষ্টিক্রিয়া
নিজেই জেগেছি সবশেষে এই ধর্মান্ধ খেউরের দিনে
।। মৌলান্ধ শব্দব্রহ্ম ।।
মেয়েরা বরং বিয়ের পিঁড়িতে বসুক
হাতে মেহেদি লাগানোর বদলে
লাগিয়ে নিক অসফল পুরুষের ছোঁয়া
দিনান্তের মোহ ছিঁড়ে বরং তারা জন্ম দিক
দিশাহারা আগামীর অভাব আর দুঃস্বপ্নে ভরা প্রজন্ম
উত্তরাধুনিক শিক্ষাচিন্তার নামে
বহু আগেইতো হত্যা করা হয়েছে তাদের চিন্তাদণ্ড
তাদের চেতনা জুড়ে খেলা করা মারাত্মক মারণাস্ত্র জুড়ে
রাত্রিদিন উড়ে বেড়ায় অসফল মানুষের গল্পের সাথে জড়ানো জীবন
বরং ছেলেগুলো আত্মহত্যা করুক
চুপচাপ হত্যা হওয়ার চেয়ে
একেবারেই তারা ঝরে যাক ধূসর অরণ্য ভালোবেসে।
তাদের ফুলেল প্রেমিকারা অসফল আলখেল্লা পরিহিত পুরুষের হাতে সঁপে দিক বাড়ন্ত কৈশোর কাল।
এরকম সময়ের দিকেই তো যাচ্ছি এগিয়ে, নয় কি?
নিত্য অভাবের আড়ালে ঠোঁটের কোণে ছড়িয়ে
শশ্রূজাত দৈব্যিক হাসি
আমরাই ডুবে যাই কওমী জোব্বা'র সফেদ বৃত্তে
আমাদের যাপিত জীবন তো ছেঁড়া জুতোর ঘরফেরা ঘুম।
।। নক্ষত্র নামতা ।।
গোপন ঘুমের ভেতর রাত আসে রোজ
পৃথিবী ঘুমায় তবু কেউ জানে না
আরশির কারুকার্যে নুয়ে যায় কোন কোন শহর
জেনে নিও এসব কিছু নয়
পলাতক জীবনের থেকে আরো কিছুটা দূরে
তবু থেকে যায় কালো পাহাড়ের ঘুম
শেষ কবে যেন পৃথিবীতে নেমেছিলাম
শেষ কবে যেন আমাদের দেখা হয়েছিল...
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে