ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

সংবিধান লঙ্ঘন: সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দণ্ডিত হবেন না?

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২০, ১৩:২৫

সংবিধান লঙ্ঘন: সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দণ্ডিত হবেন না?

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড বা সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে কি এই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দণ্ডিত হবেন না বলে প্রশ্ন রেখেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন রাখেন যে, প্রধানমন্ত্রী কি তার দায় এড়াতে পারবেন?

শুক্রবার ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের নেতাকর্মীদের করোনা সার্টিফিকেট বিক্রির কারণে ইতালিতে বাংলাদেশ থেকে আগত কোন ব্যক্তিকে ঢুকতে দেয়া হয় না, নিউ ইয়র্ক টাইমসে নেতিবাচক প্রবন্ধ হয় বাংলাদেশকে নিয়ে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের শীর্ষ দেশগুলোতে বাংলাদেশ উঠে আসে। এসবের জন্য বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্নের জন্য তাহলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড বা সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে কি তাহলে এই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দণ্ডিত হবেন না? প্রধানমন্ত্রী কি তার দায় এড়াতে পারবেন?

এই আইনের নগ্ন শিকার হয়েছেন অন্যান্যদের মধ্যে ৮৫ বৎসরের বেশি বয়সের সম্পাদক আসাদউদ্দিন, সাংবাদিক কাজল ফকির, নেত্র নিউজের সম্পাদক তাসনিম খলিল, ব্যবসায়ীসহ অজস্র নিরীহ নাগরিক। আমরা অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার তথ্যগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, এই আইনে হয়রানির অন্যতম একটি দিক হলো, সারা বাংলাদেশে একটি মাত্র সাইবার ট্রাইব্যুনাল যা ঢাকাতে অবস্থিত। এই আইনের অধীনে কোনো আপিল ট্রাইব্যুনাল এখন পর্যন্ত গঠিত হয়নি। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলের কোনো ব্যক্তি বা সাংবাদিক ফেসবুকে সরকারের লুটপাটের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা করলে, তার বিরুদ্ধে মামলা সংশ্লিষ্ট থানা করলেও তার বিচার হবে ঢাকায় অবস্থিত একমাত্র সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে। একবার ভাবুন ন্যায়বিচার কতোট দুরূহ করেছে এই স্বৈরাচার।

ফখরুল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাগুলোর মূল অভিযোগ হলো, ‘ব্যক্তির মানহানি, আক্রমনাত্মক মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন কিংবা রাষ্ট্রের তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ করা, ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা’। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, এই সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা প্রতিনিয়ত কিভাবে বিরোধীদলীয় কিংবা ভিন্নমতাবলম্বীদের সম্মানহানি করছে, কিভাবে আক্রমণাত্মকভাবে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করছে, কিভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এই সরকারের মন্ত্রী-এমপি-আমলা-পুলিশের লুটপাট কিভাবে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুন্ন করছে। আমাদের গর্বের বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বা সুনাম আজ বিশ্বদরবারে দুর্নীতির সূচকের তলানিতে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন তথ্যসূত্র বিশেষ করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র তথ্যমতে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৫৩ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে। প্রায় সবগুলো মামলার কমন অভিযোগ হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের জন্য তথাকথিত সম্মানহানি বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপরাধ। এসব অভিযোগসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাবেন, সরকারি দলের লুটেরাদের বিরুদ্ধে কথা বললে, রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে, সরকারের সমালোচনা করলে মামলা করা হয়েছে। মামলার ভয়ে আজ জাতির কণ্ঠ রুদ্ধ। বিবেকের স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত যা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত