ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফখরুলের সঙ্গে যুবদল নেতার তর্ক-বিতর্ক

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:২৩

ফখরুলের সঙ্গে যুবদল নেতার তর্ক-বিতর্ক

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এক সময় ছাত্রদল করতো জানিয়ে এনিয়ে দুর্ভাগ্যের কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করেছেন যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন। তিনি বলেন, মুরাদ ছাত্রদল করে নাই।

এসময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে এই তরুণ যুবদল নেতা। মির্জা ফখরুল তাকে থামিয়ে বলেন, ইউ ডোন্ট নো। তুমি বাজে কথা বলবে না। তুমি জানো না। আমি জেনে বলছি। তারপরেও শাহিন পুনরায় ফখরুলের সাথে তর্ক শুরু করলে পুরো মিলনায়তনে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়।

সোমবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটেছে।

সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের একটি সাক্ষাৎকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান এবং নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে নানা মন্তব্য করেছেন।

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সোশাল মিডিয়াকে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত জঘন্য, নিকৃষ্ট কথা বার্তা বলছেন। কাকে নিয়ে করছে? একজন ভুঁইফোড়, ডাক্তার ছিলো শুনেছি, সম্ভবত জামালপুরের সরিষাবাড়ীর। এটাও শুনেছি সে না কি একসময় ছাত্রদল করতো। দুঃখের কথা, দুর্ভাগ্যের কথা। আগে সে ছাত্রদল করতো। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রচার সম্পাদক ছিলো। পরবর্তিকাল সে ছাত্র লীগে জয়েন করেছে। ধিক্কার দেই আমি তাকে। সেইম।

‘কিন্তু আরো মারাত্মক হচ্ছে ওই বক্তব্যের (তথ্য প্রতিমন্ত্রীর) শেষের যে বক্তব্যটুকু সেটা অত্যন্ত মারাত্মক। বলেছে, আমি যা কিছু করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই করছি এবং তা তিনি সবকিছু জানেন। আামি আজকে এই সভা থেকে স্পষ্টভাবে প্রশ্ন করতে চাই প্রধানমন্ত্রীকে- এই কথা সত্য কি মিথ্যা আপনাকে জানাতে হবে। কারণ আপনি প্রধানমন্ত্রী- এদেশের মানুষের নিরাপত্তা, তার নিজের মর্যাদাকে রক্ষা করা এবং একই সঙ্গে এই ভয়াবহ উক্তি মিডিয়ার উদ্দেশ্যে একজন মন্ত্রী করতে পারে তাহলে আপনার সরকারের অবস্থা্ন কি আমরা জানতে চাই। এর উত্তর দিতে হবে। কারণ আপনাকে জড়িয়ে এই কথা বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, আমরা জানতে চাই যে, আপনি কি এমন একটি সরকার নিয়ে এখানে এসেছেন, যে সরকার আমাদের দেশের সমস্ত কৃষ্টি, আমাদের দেশের যে সৌজন্যবোধ, আমাদের যে ঐহিত্যগুলো আছে তাকে বিনষ্ট করে দেবে? রাজনীতিকে তো ধবংস করেছেনই। এখন ন্যুনতম মূল্যবোধগুলো আছে, আমাদের মা-বোনের প্রতি আমাদের সন্মান-শ্রদ্ধা সেটাও কী আপনি ধ্বংস করে দেবেন? আমরা তীব্রভাবে শুধু প্রতিবাদ নয়, আমাদের ঘৃণা প্রকাশ করছি, ধিক্কার জানাচ্ছি সেই সমস্ত বক্তব্যের জন্যে।

ফখরুল বলেন, এটা তাদের চরিত্র। এই যে বর্ণবাদী কথা, এই যে নারী বিদ্বেষী কথা। আমার বোনদের অনুরোধ করবো আপনাদের প্রতিবাদ জানানো উচিত। আজকে আমি ধন্যবাদ জানাই, কয়েকজন নারী নেত্রীকে তারা আজকে প্রতিবাদ করেছেন। একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, নব্বইয়ের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যত্থান ঘটিয়েছিলো আমাদের নেতারা এই কারণে যে, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, একটি স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মান করবার জন্য। আজকে এই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, এই সরকারের নেতৃত্বে সেই দেশটি আজকে একটি অসভ্য, অশালীল, অমর্যাদাকর দেশের পরিণত হয়েছে।

এক পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয়তলায় যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন দাঁড়িয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করে বলেন, মুরাদ ছাত্রদল করে নাই।

এসময় মহাসচিবের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে এই তরুণ যুব দল নেতা। মির্জা ফখরুল তাকে থামিয়ে বলেন, ইউ ডোন্ট নো। তুমি বাজে কথা বলবে না। তুমি জানো না। আমি জেনে বলছি। তারপরেও শাহিন পুনরায় মহাসচিবের সাথে তর্কে শুরু করলে পুরো মিলনায়তনে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়।

এই সময়ে মহাসচিব তাকে চুপ করতে বলে এবং নিচে নেমে মঞ্চে আসার জন্য বলেন। এসময়ে মিলনায়তনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে মুহুমুহু স্লোগান দিতে থাকে। মঞ্চে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ এবং দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম হাত উঠিয়ে তাকে চুপ করতে বলেন।

বিএনপি মহাসচিব এক পর্যায়ে সকলকে শান্ত হয়ে বসার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, দুর্ভাগ্য আমাদের যে, এক সময়ে সে ছাত্রদল করেছেন, পরবর্তিতে সে ছাত্রলীগের নেতা হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্য আমাদের এই রকম একটা ছেলে ওই সময়ে ছাত্রদলে ছিলো। দিস দ্যা মোস্ট আনফোরচুনেট। এজন্যই বলছি, বড় কথা সেটা নয়, বড় কথা আজকে আমাদের ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, ঐক্যের মধ্য দিয়ে এই জালেম, এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেস/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত