ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

লবিস্ট নিয়োগ: তদন্ত করে রিপোর্ট প্রকাশের দাবি বিএনপির

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:১৭

লবিস্ট নিয়োগ: তদন্ত করে রিপোর্ট প্রকাশের দাবি বিএনপির

সরকার ও সরকারি দল লবিস্ট নিয়োগের নামে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে এবং তার উৎস কী তার স্বচ্ছ তদন্ত করে সেই রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দলের চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, জনগণের অর্থ ব্যয় করে সরকার ও সরকারি দল লবিস্ট নিয়োগের নামে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে এবং তার উৎস কী তার স্বচ্ছ তদন্ত করে তার রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদে এবং নিজেদের অফিসে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ করে নিজেদের দুর্নীতি, অপশাসন এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশ-বিদেশে যে সমালোচনার ঝড় বইছে তা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসাবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। তাদের ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি। বরং বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বর্জিত এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্থ সরকারের হতাশ মন্ত্রীদের এসব বক্তব্য জনগণ অক্ষমের আর্তনাদ বলে কৌতুকের রসদ হিসাবে গণ্য করেছে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি ৮টি লবিস্ট ফার্মের সাথে চুক্তি করেছে এবং তার একটি ফার্মকেই দিয়েছে ১ মিলিয়ন ডলার। অন্য ৭টি ফার্ম সম্পর্কে তার বক্তব্য হলো সব তথ্য আছে। কিন্তু কিছুই দিতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী আরেক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, বিএনপি বিভিন্ন নামে ১২টির বেশি লবিস্ট ফার্মের সাথে চুক্তি করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু তিনি কে, কার সাথে, কত টাকার চুক্তি করেছে সে সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি। অর্থাৎ স্বভাবজাত ফাঁকা আওয়াজ করেছেন।

‘হাজার হাজার গায়েবি মামলা দায়েরের মত একই সরকারের এই দুই মন্ত্রী গায়েবি তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাতে গিয়ে কল্পিত লবিস্ট ফার্মের সংখ্যা এবং ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়ে ফেঁসে গেছেন এবং জনগণের করুনার পাত্র হয়েছেন।’

বিএনপি কোনো লবিস্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত কখনও নেয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, লবিস্ট নিয়োগ করার প্রয়োজনও বোধ করেনি। লবিস্টগণ যে সব কথা বলবেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ তা নিজেরাই বলে থাকেন এবং তাও গোপনে না প্রকাশ্যে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিএনপি মহাসচিবের যে সব পত্রের কপি সাংবাদিকদের মাঝে বিলি করেছেন তাতে কোথাও এমন কোনো বক্তব্য নেই যা তিনি এবং দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যে বলেননি, মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়নি। কিংবা আন্তর্জাতিক বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। এসব বক্তব্যের কোনোটাই জনগণ কিংবা দেশের স্বার্থ বিরোধীতো নয়ই বরং জনগণ ও দেশের পক্ষে বিএনপির নৈতিক অবস্থান ও দায়িত্বের প্রকাশ।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বহু বছর ধরে নিয়মিত চুক্তিতে কাজ করা লবিস্ট প্রতিষ্ঠান বিজিআর ছাড়াও গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন ও সফর বিনিময়ের লক্ষ্যে মাত্র ১ মাসের জন্য ৪০ হাজার ডলার ফি’ তে নিয়োগ করা হয়েছিলো আরেকটি লবিস্ট প্রতিষ্ঠান ফ্রিডল্যান্ডারকে। এ ব্যাপারে কেঁচো খুড়তে গেলে আরও বহু বড় বড় সাপ বেরিয়ে আসবে। এসব চুক্তি সম্পর্কে মন্ত্রীরা যদি না জেনে থাকেন তাহলে সরকার ও সরকার দলীয় কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অজ্ঞত ও গুরুত্বহীন এসব মন্ত্রীদের বিজ্ঞের মত কথা বলা বন্ধ করা উচিত। আর যদি জানেন, তাহলে তথ্য গোপন করার অভিযোগে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রর্থনা করা উচিত। কিন্তু এসব তাদের স্বভাবের সাথে মানাবে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত