ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

আনন্দবাজার পত্রিকার দাবি

মোদিকে ধরে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া খালেদা

মোদিকে ধরে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া খালেদা

নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ঢাকার রাজনীতি। গদি ধরে রাখতে নানা কৌশল রচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আর এ কারণেই তিনি নাকি গত কয়েক মাস ধরে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।

পত্রিকাটি বলছে, হিন্দু চরমপন্থী গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘকে (আরএসএস) ধরে মোদির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত জোট। আরএসএসের মাধ্যমে মোদি সরকারের কাছে তারা এই বার্তা দেয়ার চেষ্টা করছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি কূটনৈতিক পক্ষপাত বহাল না রেখে তাদের সঙ্গেও একটা বোঝাপড়া করুক ভারত।

আনন্দবাজার বলছে,‘বিএনপি জোট নয়াদিল্লিকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে, তারা ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে নানা ধরনের ছাড়া দেবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকারের বিষয়টি নিয়েও তারা তৎপর হতে চায়, সে কথাও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে নাগপুরে আরএসএস-এর একটি অংশের সঙ্গে বিএনপি-র কয়েক জন প্রতিনিধি সম্প্রতি দেখা করে এসেছেন বলেও দাবি করেছে পত্রিকাটি। তা ছাড়া গত বছরের শেষে খালেদা জিয়া যখন লন্ডনে যান, সেখানেও অঅরএসএসের প্রবাসী কিছু নেতার সঙ্গে কথা হয় তার।

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বাংলাদেশ হাইকমিশন কোনও পক্ষই প্রকাশ্যে এই ধরনের বৈঠকের কথা স্বীকার করছে না। এ নিয়ে নীরব রয়েছে বিএনপি-ও।

তবে আরএসএ সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানাচ্ছে, ‘দিল্লির সঙ্গে একটা বোঝাপড়ায় আগ্রহী বলে তাদের জানিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্ব। খালেদা জিয়ার দল মোদি সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, হাসিনা সরকারের সময়ই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়েছে এবং এখনও হয়ে চলেছে। মন্ত্রিসভায় অথবা জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নামমাত্র। বিএনপি ঘরোয়াভাবে এ কথাও আরএসএস-কে জানিয়েছে যে, তারা অন্তত ৫০ জন সংখ্যালঘু নেতাকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী করতে ইচ্ছুক। ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভায় হিন্দু প্রতিনিধিত্বও এখনকার চেয়ে বেশি থাকবে।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রলয় অবশ্য জানাচ্ছে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ভারত নাক গলায় না। কোনও রাষ্ট্রে যখন যে দলের সরকার থাকে, নয়াদিল্লি তার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে এর আগে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, ভারত তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক বহাল রেখে চলেছে।

কিন্তু পররাষ্ট্র সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, খালেদার এই অতি সক্রিয়তাকে ভাল চোখে দেখছে না দিল্লি।

বিএনপির উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দিহান ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, নভেম্বরে দাঁতের চিকিৎসা করাতে লন্ডনে গিয়ে খালেদা পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন। লন্ডনের পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্তাদের সঙ্গেও অনেক বার বৈঠকে বসেছিলেন খালেদা। তবে বিএনপি নেতৃত্ব এই সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু বিএনপি নেত্রী খালেদার জিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের একটি কট্টরপন্থী অংশের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাদের সহায়তায় বিএনপি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চক্রান্তে লিপ্ত বলেই নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে আওয়ামী লীগ। তাই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের দিকে সতর্ক নজর রাখছে মোদি সরকার।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত