ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পেছনে ‘নাটক’ দেখছেন রিজভী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৩:২৩

সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পেছনে ‘নাটক’ দেখছেন রিজভী

ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের গ্রেপ্তারের পেছনে নাটক আছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

রিজভীর দাবি, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় দেশবিরোধী চুক্তি আড়াল করতেই সম্রাটকে আটকসহ ক্যাসিনো নাটক সাজানো হয়েছে।’

রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

এসময় সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জ্বালানী সঙ্কটময় দেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়ার যে চুক্তি করা হলো তা সুস্পষ্টভাবে সংবিধান পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেন এই নেতা।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জ্বালানী সঙ্কটময় দেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়ার যে চুক্তি করা হলো, তা সুস্পষ্টভাবে সংবিধান পরিপন্থী। এটা বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৫ক অনুচ্ছেদের গুরুতর লংঘন। যা সংবিধানের ৭ক অনুচ্ছেদের অধীনে সংবিধান লংঘনজনিত রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধের শামিল।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৫ক ধারায় বলা হয়েছে ‘বিদেশের সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।’ কিন্তু সরকার অদ্যাবধি ভারতের সাথে কোন চুক্তিই সংসদে পেশ করেনি। এইসব দেশবিরোধী চুক্তি রাষ্ট্রপতি জানেন কি না, সেটাও যেন জনগণের জানার কোন অধিকার নাই। কারণ রাষ্ট্রপতি যদি এটা জানতেন, তাহলে তো তিনি সংবিধানের আলোকে তা সংসদে পেশের ব্যবস্থা করতেন।’

রিজভী বলেন, ‘ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তিগুলো সংসদে পেশ করলে পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে দেশের জনগণ তার বিস্তারিত জানতে পারতো। ভারতের সাথে সরকার কি কি চুক্তি করছে তা জানার অধিকার বাংলাদেশের জনগণের অবশ্যই রয়েছে। এই অধিকার দেশের জনগণকে দেশের সংবিধানই দিয়েছে। রাষ্ট্র বিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী এইসব চুক্তি করে প্রধানমন্ত্রী তার সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ করেছেন। তিনি দেশের স্বার্থরক্ষায় তার কৃত শপথ ভঙ্গের প্রমাণ দিয়েছেন। নিজ দেশের স্বার্থের চাইতে বিদেশি রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার সাংবিধানিক সকল অধিকার হারিয়েছেন। তাই এ মুহুর্তে শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করছি। আমরা ফেনী নদীর পানিসহ সকল দেশবিরোধী চুক্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত সফরের তৃতীয় দিনে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিগুলোর খবর জেনে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। মনে হয়েছে এগুলো চুক্তি নয় যেন শেখ হাসিনা আরেকটি দাসখত দিলেন। এর মাধ্যমে মুলত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জ্বালানী সঙ্কটময় বাংলাদেশের গ্যাস হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তার কথা না ভেবে উপকূলীয় নজরদারির জন্য বাংলাদেশে রাডার স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তার বদলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ক্ষমতার মসনদে থাকার গ্যারান্টি আর ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ । তবে বাংলাদেশের জনগণের বদনসিব, বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি।’

রিজভী বলেন, ‘গত বছরের ৭ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “বিদেশে গ্যাস রফতানি করতে রাজি হইনি বলে ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। খালেদা জিয়া গ্যাস রফতানির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। আমরা মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসার শিক্ষা পাইনি। আমরা দেশের সম্পদ বিদেশীদের দিয়ে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবো না।” -আজ প্রশ্ন কেন গ্যাস দিলেন? ক্ষমতায় থাকার জন্যই কী এ গ্যাস দেওয়া? এবার অস্বীকার করবেন কোনমুখে?’

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত