ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

নামেই শুধু ‘ডেড সি’

নামেই শুধু ‘ডেড সি’

ভাবছেন সাগর আবার মৃত হয় কী করে! সাগর বলা হলেও এটি আসলে একটি হ্রদ যার সর্বোচ্চ গভীরতা ৩০৪ মিটার। মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত এই মৃত সাগরের পূর্ব সীমান্তে রয়েছে জর্ডন এবং পশ্চিম সীমান্তে যথাক্রমে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন। একে ভূপৃষ্ঠের সবচেয়ে নিম্নভূমি হিসেবে গণ্য করা হয় কারণ, এর পৃষ্ঠভাগ ও তীরদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৩০ মিটার নিচে অবস্থিত। এছাড়াও পৃথিবীর লবণাক্ত জলাশয়গুলোর মধ্যে এটি একটি।

কেন এই জলাশয়ের নাম হল ডেড সি! কারণ এই হ্রদের জলে লবণাক্ততার পরিমাণ প্রায় ৩৪.২%, যা সাধারণ সমুদ্রের জলের চেয়ে ৮.৬ গুণ বেশি। এই অত্যধিক লবণাক্ততার কারণেই জলজ প্রাণীরা জীবনধারণ করতে পারে না, তাই এই সাগরে বা হ্রদে কোনো প্রাণের বসবাস নেই বললেই চলে। এই কারণে এই জলভূমির নাম মৃত সাগর।

নাম মৃত সাগর বা ডেড সি হলেও এখানে ভয় পাওয়ার মত কোনও বিষয় বস্তু নেই। বরং উল্টে রয়েছে মজার কিছু বিষয়। এই সাগরে কোনো প্রাণী যেমন বসবাস করতে পারে না। তেমন কোনো মানুষ চাইলেও এখানে ডুবে থাকতে পারবে না। যতই চেষ্টা করবে ডুবে যাওয়ার ততই ভেসে থাকবে। কারণ এখানে জলের লবণাক্ততা বেশি হওয়ার কারণে প্লবতা অনেক বেশি। এতই বেশি যে বস্তুর ওজন অনেক বেশি হলেও বস্তুকে ডুবানো বেশ কঠিন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য সাগরের জলের তুলনায় ডেড সির জলে থাকা খনিজ উপাদানগুলোর প্রচুর পার্থক্য আছে। প্রাচীনকাল থেকে এই হ্রদটির জল মিশরের মমি তৈরির জন্য, সার উৎপাদনের জন্য, পটাশসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই হ্রদ থেকে প্রাপ্ত লবণ ও খনিজ পদার্থ বিভিন্ন প্রসাধনী ও সুগন্ধি দ্রব্য তৈরিতে এখনও ব্যবহার করা হয়।

এই জলে শুধু কয়েক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া ছাড়া আর কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। আর এখানে মাছ না থাকার কারণে এ হ্রদের ওপর দিয়ে কখনও পাখি উড়তেও দেখা যায় না। মৃত সাগরে মাছ থাকতে না পারলেও মানুষের জন্য এটি একেবারে স্বর্গ। রোগীদের বায়ু পরিবর্তনের এক আদর্শ জায়গা হিসেবে বিশেষজ্ঞদের কাছে পরিচিত এই মৃত সাগর। বিশেষ করে নানা জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীদের থাকার জন্য এর চেয়ে ভাল জায়গা আর হয় না বলে মনে করেন তারা।

অনেকে বিশ্বাস করেন, ডেড সির মাটি অনেক ধরণের রোগ নিরাময়েও সহায়ক। আর এই কারণে এ অঞ্চলটি চিকিৎসাশাস্ত্রের গবেষণাস্থল হয়ে উঠেছে । এর মূলে রয়েছে হ্রদের জলে খনিজ দ্রব্যাদির বিপুল উপস্থিতি, বাতাসে অ্যালার্জি উৎপাদক দ্রব্য এবং পরাগরেণুর স্বল্পতা, উচ্চ ভূ-মণ্ডলীয় চাপ, সৌর বিকিরণে অতিবেগুনি উপাদানের কম উপস্থিতি। হ্রদটি ইসরায়েল, পশ্চিমতীর ও জর্ডনের সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থিত। বিশেষ করে যারা স্বাস্থ্য ভাল করতে বেড়াতে যান, তাদের জন্য এটা স্বর্গ।

এনএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত