ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

টাইগারদের বিবর্ণ বোলিংয়ে ঝলমলে তাসকিন

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৫৫

টাইগারদের বিবর্ণ বোলিংয়ে ঝলমলে তাসকিন

প্রথম দিন বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিল দিমুথ করুণারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নে। ২৯১ রানের দিনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ছিল একমাত্র করুনারত্নের উইকেট। দ্বিতীয় দিনেও টাইগার বোলারদের শাসন করেছেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঝলমলে ছিলেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ। শেষ সেশনে রমেশ মেন্ডিসের ক্যাচ নাজমুল হোসেন শান্ত না ফেললে তার নামের পাশে থাকতো চার উইকেট। দ্বিতীয় দিন শেষে ১৫৫.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪৬৯ রান।

দ্বিতীয় দিন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ওশাডা ফার্নান্ডো ও নিরোশান ডিকবেলা। এখনও ৬৪ রান করে অপরাজিত আছেন ডিকবেলা। ওশাডাকে ৮১ রানে থামান মেহেদী হাসান মিরাজ। আর তাইজুল ইসলাম ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে (২)। এদিন স্বাগতিকদের বাকি ৩ উইকেট নেন তাসকিন। থিরিমান্নেকে ১৪০ রানে ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে ৫ রানে লিটন দাশের ক্যাচ বানান ডানহাতি পেসার। দারুণ ডেলিভারিতে পাথুম নিশানকার অফস্টাম্প নাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। যদিও শ্রীলঙ্কা বড় রানের দিকেই এগোচ্ছে, তারপরও সব মিলিয়ে দিন শেষে তাসকিনের পারফরম্যান্স এনে দিয়েছে স্বস্তি।

পাল্লেকেলের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের চিত্রই বলে দিচ্ছে, রান উৎসবের প্রথম ম্যাচ যেখানে শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই যেন শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। বৃহস্পতিবার ১ উইকেটে ২৯১ রান করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। সেঞ্চুরি করেন দুই ওপেনার দিমুথ করুণারত্নে ও লাহিরু থিরিমানে। প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির পর গতকালও ১১৮ রানের আরেকটি ইনিংস খেলেন লঙ্কান দলপতি। পুরো দিনে কেবল করুণারত্নর উইকেটটিই নিতে পারে বাংলাদেশের বোলাররা। আরেক ওপেনার থিরিমানে ১৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন।

দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে শ্রীলঙ্কাকে তিনশ রানের ঘরে নেন ওশাডা ফার্নান্ডো। দ্বিতীয় দিন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি করেছেন চার মেরে। এজন্য ১৩২ বল খেলেছেন তিনি। একই সঙ্গে লাহিরু থিরিমান্নের সঙ্গে তার জুটি একশ পূর্ণ হয়। এরপর দলীয় ৩১৩ রানের মাথায় ১৪০ রান করে আউট হন লাহিরু থিরিমান্নে। তাসকিন আহমেদ তাকে লিটন দাশের ক্যাচ বানান। ওশাডা ফার্নান্ডোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১০৪ রানের জুটি ছিল তার। ২৯৮ বলে ১৫টি চারে সাজানো ছিল এই ইনিংস।

এরপর তাসকিন আহমেদের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরলেন লিটন দাশ। চমৎকার লেন্থের বল খানিকটা টার্ন করে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের ব্যাটে লেগে ছোটে পেছনে। বাংলাদেশের উইকেটকিপার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে তা গ্লাভসের মধ্যে নেন। মাত্র ৫ রানে আউট হন লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের পর দ্রুতই দলকে আরেকটি সাফল্য এনে দেন তাইজুল ইসলাম। তিনি ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। ৯ বলে ২ রান করেন তিনি। দলের রান তখন ৩২৮।

এর আগে প্রথমদিন শেষে দিমুথ করুণারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নে ভুগিয়েছে দুই সেশনেরও বেশি। করুণারত্নেকে ফিরিয়ে স্বস্তি ফেরানোর ইঙ্গিত দিলেও বাংলাদেশ দিন শেষে চাপা পড়েছে শ্রীলঙ্কার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কাছে। প্রথম দিন শেষে ১ উইকেটে ২৯১ রান স্বাগতিকদের।

প্রথম টেস্টের উইকেট ‘গড়পড়তা মানের নিচে’ থাকায় একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছিল পাল্লেকেলে। দ্বিতীয় টেস্টে উইকেটের ধরণ বদলে যাবে বলে আশা দেখেছিল উভয় দলই। কিন্তু না, ভিন্ন কিছু হয়নি। প্রথম দিনে বোলারদের প্রাপ্তি মাত্র ১ উইকেট। ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে দাঁড়িয়ে দাপুটে ব্যাট করেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। শেষ সেশনে এসে বিশাল জুটিতে ফাটল ধরান অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম।

করুনারত্নে ফিরলেও ওশাডা ফার্নান্দোকে নিয়ে রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন থিরিমান্নে। দিনের শেষ ওভারে শরিফুলের বলে রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। প্রথম সকালে মন্থর গতির ব্যাটে কিছুটা চাপের মুখে ছিল তারা। বল হাতে লঙ্কানদের দমিয়ে রেখেছিলেন তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ রাহী ও মেহেদি হাসান মিরাজরা। প্রথম সেশনে বেশ কয়েকবার উইকেট ভাঙতে চেষ্টা করে সফরকারীরা। কিন্তু নিষ্প্রাণ উইকেটে বারবারই ব্যর্থ হয়েছে বোলাররা।

প্রথম সেশনে ২৭ ওভার বল করে ৬৬ রান করেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ২০তম ওভারের শেষ বলে স্লিপে করুণারত্নেকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দিনের দ্বিতীয় সেশনের শুরু থেকে হাত খুলে ব্যাট চালাতে থাকেন দুই ওপেনার। দ্রুততার সঙ্গে দলীয় শতকের পাশাপাশি দুজনেই ব্যক্তিগত অর্ধশতকের দেখা পান।

দলীয় ১৭৭ রানের মাথায় টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান লঙ্কান অধিনায়ক। ১৬৫ বলে ১৩ চারে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ২৮ রানে সাজঘরে ফিরতে পারতেন লঙ্কান দলপতি করুনারত্নে। ২০তম ওভারে তাসকিন আহমেদের শেষ বলটি ছিল এক্সট্রা বাউন্স, করুণারত্নের ব্যাট ছুঁয়ে তা স্লিপে যায়। সেখানে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্ত সহজ ক্যাচটি ছেড়ে দেন। জীবন পান শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক।

দুই সেশনে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৪৪ রান। তৃতীয় সেশনে এসে ২০৯ রানের জুটি ভাঙেন শরিফুল। উইকেটের পেছনে থাকা লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরার আগে ১১৮ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক করুণারত্নে।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত