ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

লঙ্কান শিবিরে মাশরাফির জোড়া আঘাত

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২২:২১  
আপডেট :
 ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২২:২৯

লঙ্কান শিবিরে মাশরাফির জোড়া আঘাত

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছে গত আসরের রানার্স আপ বাংলাদেশ। দুবাইয়ের মাটিতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলীয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ৪৯.৩ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৬১ রান।

২৬২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমেই মাশরাফি-মোস্তাফিজদের উড়িয়ে দিচ্ছিলেন লঙ্কান ওপেনার উপুল থারাঙ্গা। এরপর দলীয় ২২ রানে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউতে শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার কুশল মেন্ডিস। এরপর মাশরাফির দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ২৭ রানে বিদায় নেন থারাঙ্গা। শ্রীলঙ্কার দলীয় ৩২ রানে আবারো মাশরাফির আঘাত। এলবিডব্লিউতে ফিরিয়েছেন ধনঞ্জয়াকে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩২ রান।

এর আগে শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর তামিমের অনাকাঙ্ক্ষিত ইনজুরিতে ব্যাকফুটে চলে যায় টিম টাইগার। খেলার শুরুতেই মালিঙ্গার ওভারের চতুর্থ বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে শুন্যরানে বিদায় নেন লিটন দাশ। এর রেশ কাটতে না কাটতেই মালিঙ্গার পরের বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন বাংলাদেশের ভরসা সাকিব আল হাসান।

সাকিবের পর মুশফিককে নিয়ে দলকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। কিন্তু সুরাঙ্গা লাকমলের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে হাতের পুরোনো ইনজুরিতে আঘাত পান তামিম ইকবাল। তাতেই মাঠ ছাড়তে হয় তামিমকে। সেখান থেকেই গেলেন হাসপাতালে। হাসপাতালে দ্রুত স্ক্যান করে দেখা হয় তামিমের কব্জিতে ছিড় ধরা পড়েছে। ছিটকে পড়েছেন এশিয়া কাপ থেকে।

তামিমের মাঠ ছাড়ার পর ক্রিজে মুশফিককে সঙ্গ দিতে নেমেছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। সেখান থেকেই বিধ্বস্ত দলকে টেনে তুলেছেন মুশফিক-মিঠুন। মিঠুনের বিস্ফোরক ব্যাটিং ও মুশফিকের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ভালোই সামাল দিচ্ছিল বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩১ রান তুলেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দুজনেই করেছেন অর্ধশতক। দলীয় ১৩৪ রানে সেই মালিঙ্গার বলেই কুশাল পেরেরার ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন মিঠুন। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৮ বলে মিঠুনের সংগ্রহ ৬৩ রান। মিঠুনের বিদায়ের পর দলীয় স্কোরে ২ রান যোগ হতেই আপোনসোর বলে ডি সিলভার ক্যাচ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ।

এরপর আবার মালিঙ্গার আক্রমণ। তার বোলিং তোপে দিশেহারা বাংলাদেশ শিবির। দলীয় ১৩৬ রানে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর ২৮তম ওভারের শেষ বলে নিজের চতুর্থ উইকেটটি তুলে নেন মালিঙ্গা। উইকেটরক্ষক কুশল পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এরপর ৩৪তম ওভারে সুরাঙ্গা লাকমলের বলে তার হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৫ রানে ফেরেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ১৯৫ রানে থারাঙ্গার বলে ধনাঞ্জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে মাঠ ছাড়েন কাপ্তান মাশরাফি।

এরপর ৪৩তম ওভারের চতুর্থ বলে ডি সিলভার বলে এলবি ডব্লিউ'র শিকার হয়ে আউট হন রুবেল হোসেন। এর মধ্যেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিকুর রহিম। ৬৭ বলে ফিফটি করার পর ১২৩ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান মুশি। এরপর মুশফিকের সঙ্গে ২৬ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হন মোস্তাফিজ। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হত তখনই। কিন্তু চমক দেখালেন ওপেনার তামিম ইকবাল। মুশফিককে সঙ্গ দিতে বাঁহাতে ইনজুরি নিয়েও ব্যাট হাতে মাঠে নেমে পড়েন বাংলাদেশ সেরা ওপেনার।

তামিম নামাতেই ব্যাট হাতে লড়তে হয়েছে মুশফিককে। শেষ পর্যন্ত তামিমের জন্যই মুশফিক শেষদিকে তুলেছেন ৩২ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে পেরেরার বলে মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে মুশফিক তুলেন তার ক্যারিয়ারসেরা ১৪৪ রান। এশিয়া কাপে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এটিই সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ওয়ানডেতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিকুর রহিমের এই ইনিংসটি দ্বিতীয় সেরা। ১৫৪ রান করে সবার উপরে আছেন তামিম ইকবাল।

শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে লাসিথ মালিঙ্গা ২৩ রান দিয়ে চারটি উইকেট শিকার করেন। অন্যদের মধ্যে সুরঙ্গা লাকমল একটি, আমিলা আপোনসো একটি, থিসারা পেরেরা একটি ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা দুইটি করে উইকেট শিকার করেন।

বিদেশের মাটিতে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়েই শুরু বাংলাদেশের খেলা। তারপর আরো ৫ দিন পরে দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। যেটি বাংলাদেশ দলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জই। এছাড়া আছে আরব আমিরাতের গরম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ইনিংস: ২৬১ (৪৯.৩ ওভার)

(তামিম ইকবাল ২*, লিটন দাস ০, সাকিব আল হাসান ০, মুশফিকুর রহিম ১৪৪, মোহাম্মদ মিথুন ৬৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১, মেহেদী হাসান মিরাজ ১৫, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১১, রুবেল হোসেন ২, মোস্তাফিজুর রহমান ১০; লাসিথ মালিঙ্গা ৪/২৩, সুরঙ্গা লাকমল ১/৪৬, আমিলা আপোনসো ১/৫৫, থিসারা পেরেরা ১/৫১, দিলরুয়ান পেরেরা ০/২৫, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২/৩৮, দাসুন শানাকা ০/১৯)।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত