ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

এখনো বহাল তবিয়তে লোকমান

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:০৯  
আপডেট :
 ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৪২

এখনো বহাল তবিয়তে লোকমান

মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে ২৫ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়েছিলেন লোকমান ভূঁইয়া। এরপর থেকেই বিসিবি থেকে তার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু নানা বাহানায় এটি নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। বিসিবি সভাপতি উল্টো তার সাফাই গেয়ে বলেছিলেন, দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে যত সময় গড়াচ্ছে, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির মতো আলোচিত-আলোড়িত ইস্যুর সঙ্গে জড়িত লোকমান হোসেনের বোর্ডে থাকা নিয়ে সমালোচনাও তত বাড়ছে এবং একই সঙ্গে বিসিবির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়েও বিষয়টি নিয়ে বেশ নাড়া-চাড়া হচ্ছে। এমনকি লোকমানের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। তিনি বলেন, ‘সে এখনও বিসিবির পরিচালক থাকে কী করে? অভিযোগ আসার পরেই তো তার ওই পদে থাকা উচিত না। আমি বিষয়টি নিয়ে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি।’

লোকমানের বিসিবিতে থাকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বোর্ডের বেশ কয়েকজন পরিচালক। একজন তো বলেই বসলেন, যেহেতু তিনি অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে, তাই অন্তত এখন তাকে বোর্ডে রাখা ঠিক হচ্ছে না।

তবে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে কারাগারে থাকা বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে এখনই সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। লোকমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই তাকে বিসিবির পদ থেকে বহিস্কার না করায় নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু পাপনের দাবি, এতে আইনগত বাঁধা আছে। বিসিবির পরিচালক পদ থেকে লোকমানকে সরাতে হলে তাকে আদালত কর্তৃক পেতে হবে সাজা কিংবা বহিষ্কার হতে হবে মোহামেডান ক্লাব থেকে। মোহামেডান ক্লাব থেকে বহিষ্কার হলে হারাবেন কাউন্সিলর পদ, কাউন্সিলর পদ যাওয়া মানেই বিসিবি পরিচালক পদ হারানো। লোকমান ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে বিসিবি বসকেও তাই আইন কানুন মানার পথেই হাঁটতে হল।

সম্প্রতি বিসিবি সভাপতির জুয়া খেলার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে এবং এ নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা মন্তব্যও করেছেন। লোকমান প্রসঙ্গে পাপন বলেন, 'এখন আমরা মনে করছি যে আরও কিছুদিন সময় নেওয়া দরকার। একজন কাউন্সিলরকেও চাইলেই বাদ দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। সে তো কাউন্সিলর বটেই, পাশাপাশি আইসিসি অনুমোদিত বিসিবির বর্তমান গঠনতন্ত্রের নির্বাচিত পরিচালকও। একজন নির্বাচিত পরিচালককে বাদ দেওয়া খুবই কঠিন। আমরা আগে আইন-কানুন জানার ও বোঝার চেষ্টা করছি যে কী করা যায়। সময়মতো সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার, আমরা নেব।'

লোকমান ধরা পড়ার পর সাংবাদিক সম্মেলনে পাপন বলেছিলেন, তার বহুদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু লোকমান জীবনে মদ খাননি, জুয়া খেলেননি। যদিও গত ২৬ সেপ্টেম্বর মনিপুরীপাড়ার বাসা থেকে লোকমান র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় ৫ বোতল মদও পাওয়া গিয়েছিল। র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইন চার্জ লোকমানই ক্যাসিনোর জন্য ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন। ক্যাসিনো ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা পেতেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার দুটি ব্যাংকে তিনি ৪১ কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন লোকমান।

১৯৯৪ সাল থেকে দেশের ফুটবল অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত লোকমান হুট করেই ২০১২ সালে ক্রিকেটে আসেন। অভিযোগ উঠেছে, পাপনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই লোকমান বিসিবিতে জায়গা করে নিতে পেরেছেন। তবে পাপন বলেন, আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। কতগুলো আইন আছে, যে আইন আমার করা নয়। আমাদেরকে আইন মেনে চলতে হবে। যে গঠনতন্ত্র আমাদের আছে এখন, সেটি আইসিসির অনুমোদন নিয়ে করতে হয়েছে। কাজেই আমরা এমন কিছু করতে যাব না, যাতে কিনা বাংলাদেশের ক্রিকেট বিপদে পড়ে। যখন যেটা করা উচিত ও করা সম্ভব, সেটি আমরা করব।'

  • সর্বশেষ
  • পঠিত