‘নীল তিমি’র ছোবল: রাজধানীতে হলিক্রস ছাত্রীর আত্মহত্যা
গত কয়েকমাস ধরেই ভারত, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অনলাইন সুইসাইড গেম ‘ব্লু হোয়েল’ বা ‘নীল তিমি’ খেলতে গিয়ে প্রাণ হারানোর খবর আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ঢাকায়ও আঘাত হেনেছে প্রাণঘাতী এই খেলা। যার প্রথম বলি রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। তার নাম অপূর্বা বর্ধন স্বর্ণা (১৪)। ‘নীল তিমি’ খেলতে গিয়েই সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে নিউ মার্কেট থানার সেন্ট্রাল রোডের ৪৪ নম্বর বাড়ির ৫বি ফ্ল্যাট থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পু্লিশ।
মৃত্যুর আগে তার লিখে যাওয়া একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে উল্লেখ রয়েছে।
আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয় রাশিয়ায় তৈরি এমন এক অ্যাপস্ ‘ব্লু-হোয়েল’ (নীল তিমি) ব্যবহার করতো মেয়েটি। তা থেকেই সে আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়েছে বলে ধারণা স্বজনদের। নিহতের পিতা অ্যাডভোকেট সুব্রত বর্ধন ও মা সানি বর্ধনের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার আরেক ছোট ভাই রয়েছে।
জানা যায়, নিহত অপূর্বা বর্ধন মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে মোবাইলে বেশ আসক্ত ছিল। প্রতিদিনের মতো গত বুধবার রাতে সে ও সমবয়সী কাজের মেয়ে এক কক্ষে ঘুমাতে যায়। অন্যদিন কক্ষের দরজা খোলা থাকলেও গতকাল সে দরজা বন্ধ করে দেয়।
এরপর সকালে বাসার কাজের মেয়ে ঘুম থেকে উঠেই তাকে ঝুলতে দেখে ভয়ে চিৎকার দেয়। তখনই তার পিতা-মাতা এসে তাকে উদ্ধার করে ল্যাব এইড হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু স্বজনদের অনুরোধে তা বাতিল করে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিউ মার্কেট থানার উপ পরিদর্শক আল মাহমুদ বলেন, নিহত ওই ছাত্রী খুবই মেধাবী ছিল। আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তবে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয় এমন অ্যাপস থেকেই সে আত্মহত্যায় ও এর কৌশল নির্ধারণে প্ররোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন তার কয়েকজন আত্মীয়।
নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, মানবিক বিবেচনায় স্বজনদের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর হয়েছে।
ডিপি/
