ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছাত্রী যৌন হয়রানির দায়ে শিক্ষককে অব্যাহতি

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:০৭  
আপডেট :
 ২১ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:৩৮

ছাত্রী যৌন হয়রানির দায়ে শিক্ষককে অব্যাহতি

যৌন হয়রানির অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আলী রেজওয়ান তালুকদারকে সান্ধ্য কোর্স থেকে অব্যহতি দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীর যৌন হয়রানির অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেন বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুন নাহার শীলাকে আহবায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন এবং যৌন নিপিড়ন সেলের অধিনে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। যেখানে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আলী রেজওয়ানকে সান্ধ্য কোর্সের সকল ধরনের কার্যক্রমথেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্য কোর্সে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের ভিত্তিতে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষকে সান্ধ্য কোর্সের সকল ধরনের কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।

১৫ জানুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আলী রেজওয়ান তালুকদারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মোবাইল ফোনের গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য মুছে ফেলার অভিযোগ তুলে বিভাগটির সান্ধ্য কোর্সের এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্য কোর্সের পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেল বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

পরবর্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষয়টিকে বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে বিভাগের এক শিক্ষককে এর মদদ দাতার অভিযোগ তুলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন,‘ওই ছাত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন, পরকীয়ায় আসক্ত এবং টাকার বিনিময়ে বড়লোকের শয্যাসঙ্গী হয়।’ এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষক ঐ শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে এবং এসবের নেপথ্যে ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষকের ইন্ধন রয়েছে বলেও দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওই ছাত্রীর ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় কিভাবে জানেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব কৌশলে এড়িয়ে যান শিক্ষক রেজওয়ান। পরবর্তিতে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন বলেও জানা যায়।

অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার বন্ধুবান্ধব শিক্ষার্থীকে নানা ধরনের হুমকি প্রদান এবং শিক্ষকের সঙ্গে সমঝোতার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি পরিবার ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের কাছে বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করছে বলেও জানান ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থী জানান,‘ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আমাকে বিভিন্ন সময়ে যৌন হয়রানি এবং কুপ্রস্তাব দেওয়াতে আমি সাড়া না দেওয়ায় তার তথ্য আমার ফোন থেকে মুছে দেওয়ার জন্য ওঁত পেতে ছিল। তাই সে পরীক্ষার সময় সুকৌশলে আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে সেখান থেকে সব তথ্য মুছে দেয়। তাই আমি ১৫ তারিখ তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেই। এর পরে সে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং আমার ও আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের হয়রানি করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেকে বাঁচানোর জন্য এবং ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীন উদ্দেশে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তার বক্তব্যের পুরোটাই মিথ্যাচার। আমি আমার অভিযোগের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করছি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি, যাতে আর কোন ছাত্রী ওই শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানীর শিকার না হয়। যদি অন্য কোনো শিক্ষকও এমন চরিত্রের হয়ে থাকে তারাও যাতে সাবধান হয়ে যায়।’

বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত